জরাজীর্ণ টিনের ঘরে পাঠদান, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি |

বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের মাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ টিনের ঘরেই ঝুঁকি নিয়ে চলছে কোমলমতি শিশুদের পাঠদান। প্রায় দুই যুগ ধরে এভাবে চলছে বিদ্যালয়ের নিয়মিত কার্যক্রম।

টিনের চালার ঘরগুলো জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। জং ধরে ছিদ্র হয়ে গেলে চালের টিন। বৃষ্টি হলেই শ্রেণিকক্ষে পানি পড়ে, কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায় শ্রেণিকক্ষের মেঝে । এতে করে দুর্ভোগে পড়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, স্কুলের সামনে শিক্ষার্থীরা দৈনিক সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে। শতভাগ শিক্ষার্থীর স্কুলের পোশাক না থাকলেও তারা সু-শৃঙ্খলভাবে সমাবেশের শুরুতে জাতীয় সঙ্গিত পরিবেশন ও দেশপ্রেমমূলক শপথ বাক্য পাঠ করে।

সমাবেশ শেষে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, 'সামান্য বৃষ্টি হলেই টিনের ছিদ্র দিয়ে শ্রেণিকক্ষে পানি পড়ে আমাদের বই খাতা ভিজে যায়। কবে আমরা পাকা ঘরে বসে ক্লাশ করতে পারবো? অন্য বিদ্যালয়ের মতো পাকা ঘরে ফ্যানের নিচে বসে আমরা পড়তে চাই।'

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, 'উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকা শেখের মাড়িয়া গ্রাম ও তার আশপাশের গ্রামের শিশুদের শিক্ষার জন্য ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে এলাকার শিক্ষানুরাগীরা চাঁদা তুলে ৩৩ শতক জায়গার ওপর বিদ্যালয়টি স্থাপন করেন। এরপর নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে বিদ্যালয়ের পাঠদান চলতে থাকে।

২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। বর্তমানে জরাজীর্ণ তিনটি কক্ষে চলছে বিদ্যালয়ের পাঠদান। বিদ্যালয়ে ৪জন শিক্ষক ও শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রতিবছর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপণী পরীক্ষায় শতভাগ পাশ করেছে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

ওই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী নন্দীগ্রাম মনসুর হোসেন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম দুলাল বলেন, 'এ বিদ্যালয়ে আমরা পড়াশোনা করেছি। দীর্ঘদিনেও বিদ্যালয়ের পাকা ভবন নির্মাণ হয়নি। বিষয়টা দুঃখজনক।'

তিনি আরও বলেন, 'বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার, তাই শিক্ষার মান্নোয়নের জন্য এই বিদ্যালয়ে একটি পাকা ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কমনা করছি।'

অভিভাবক আলম হোসেন জানান, বিদ্যালয়ের কক্ষগুলোর অবস্থা ভালো না। সামান্য বৃষ্টি হলেই ঘরের ভিতর পানি পড়ে। যার কারণে বাচ্চারা স্কুলে যেতে চায় না। আমার এই বিদ্যালয়ের জন্য নতুন একটি পাকা ভবন চাই।

দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আজিজুর রহমান বলেন, 'আমরা বিভিন্ন সমস্যার মধ্য দিয়ে বিদ্যালয়ে নিয়মিত পাঠদান করছি। শ্রেণিতে পাঠদান শেষে শিক্ষকদের বসার জন্য কোন কক্ষ নেই। পঞ্চম শ্রেণির কক্ষেই আমরা বসি। প্রাক-প্রাথমিকের উপকরণ রয়েছে, কিন্তু কক্ষ অভাবে তাদের ক্লাশ নিতে পারি না।'

তিনি আরও জানান, বিদ্যালয়ের ভবন নির্মানের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্যারের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রতি বছরের বরাদ্দের তালিকায় মাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রথমে রয়েছে। আশা করছি খুব শিগগিরই ওই বিদ্যালয়ের সমস্য সমাধান হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি - dainik shiksha ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকার অনিয়মই যেনো নিয়ম! - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকার অনিয়মই যেনো নিয়ম! সনদ জালিয়াতিতে শনাক্ত আরো কয়েকজন নজরদারিতে - dainik shiksha সনদ জালিয়াতিতে শনাক্ত আরো কয়েকজন নজরদারিতে শিক্ষা প্রশাসনে বড় রদবদল - dainik shiksha শিক্ষা প্রশাসনে বড় রদবদল আকাশে মেঘ দেখলেই স্কুল ছুটি - dainik shiksha আকাশে মেঘ দেখলেই স্কুল ছুটি প্রশ্নফাঁসে শিক্ষক চাই না - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসে শিক্ষক চাই না please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024590492248535