জলে ভাসা শিক্ষা জীবন!

নিজস্ব প্রতিবেদক |

রাস্তার দু’পাশেই পচা ডোবা। থৈ থৈ পানির নিচে সড়কের মাঝখানে অসংখ্য খানাখন্দ। পা ফেলতে হয় হিসেব করে। একটু এদিক-সেদিক হলেই ডুব দেওয়া থেকে রেহাই মেলার কোনো উপায় নেই। আবার পুরো এলাকা পানির নিচে তলিয়ে থাকায় দেখে পা ফেলারও সুযোগ নেই!

এটি দেশের কোনো দুর্গম এলাকার চিত্র নয়। রাজধানী ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন জুরাইন এলাকার চিত্র।

এ এলাকায় বড়দের চলাচলই যেখানে প্রায় অসম্ভব সেখানে স্কুলগামী শিশুদের প্রতিদিন সকাল হলেই পানি ঠেলে ছুটতে হয়। আবার রাস্তা নামের ‘খাল’ পেরিয়ে কোনোমতে স্কুলে গেলেও স্বস্তি নেই। পানিতে তলিয়ে থাকার কারণে এ এলাকার প্রায় প্রতিটি স্কুলেরই নিচতলা পরিত্যক্ত। স্কুলের ভেতরেও ঢুকতে হচ্ছে কোমর সমান পানি ঠেলে।

শুক্রবার (৪ জুলাই) রাজধানীর জুরাইন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

পূর্ব জুরাইনের ডা. আব্দুর রউফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি জমে থাকায় নিচতলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বার মাসই এখানকার রাস্তা তলিয়ে থাকে বিভিন্ন রংয়ের দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে। বাসাবাড়ি আর ডায়িং হাউসের কেমিক্যাল মিশ্রিত পানি এসে মিশে রাস্তায় জমে থাকা পানির সঙ্গে। এতে বদলায় পানির রং আর দুর্গন্ধের ধরন।

স্থানীয় ব্যবসায়ী সোহেল ওসমান বলেন, বাচ্চারা দুইটি ড্রেস নিয়ে স্কুলে যায়। স্কুলে ঢুকে একটা পরে ক্লাস করে, আর যাতায়াতের জন্য একটি ব্যবহার করে। নোংরা পানিতে যাতায়াত করায় অধিকাংশ বাচ্চাদের শরীরে চুলকানিসহ বিভিন্ন চর্মরোগ দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়রা জান‍ান,  জুরাইনের দোলাইপাড় উচ্চ বিদ্যালয়, ডলফিন প্রি-ক্যাডেট অ্যান্ড হাইস্কুল, পূর্ব জুরাইন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, ডা. আব্দুর রউফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এখানে দুই কিলোমিটারের মধ্যে ৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং প্রায় ২০/২৫টি মাদরাসা ও কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন সকালে এ পচা পানি পার হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয়।

দোলাইপাড় উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি হলেই স্কুলের খেলার মাঠে ২/৩ ফুট পানি জমে যায়। ১ নম্বর ভবনের নিচতলায় পানি জমে। এর আগে কখনও পানি জমতো না।

জলাবদ্ধতার কারণে গত ২৬ জুলাই স্কুলের অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষার বিভিন্ন শ্রেণির ৫টি পরীক্ষা বন্ধ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

জানা গেছে, এভাবে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়গুলোতে পানি জমে থাকলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা জেলা পরিষদ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

দোলাইপাড় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতাউল গনি বলেন, আমরা লিখিতভাবে জেলা পরিষদে আবেদন করেছি। তারা ব্যবস্থা নিলে ভালো, না হলে স্কুলের পক্ষ থেকে ডিসেম্বরে আমরা মাটি ভরাটের কাজ শুরু করবো।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0047411918640137