বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও জাতীয় অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাকের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। আবদুর রাজ্জাক ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা জেলার নওয়াবগঞ্জ উপজেলার পারাগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল আলীর পুত্র আবদুর রাজ্জাক রংপুর ও হুগলিসহ বিভিন্ন স্থানে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। তিনি ঢাকার সরকারি মুসলিম হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক ও ঢাকা কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক-অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হন।
১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি প্রথম শ্রেণিতে এমএ পাস করেন। ওই বছরই তিনি রাজনৈতিক-অর্থনীতি বিভাগে লেকচারার পদে যোগদান করেন। পরবর্তী সময়ে এ বিভাগ থেকে অর্থনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান দুটি পৃথক বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে যোগ দেন এবং ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে সিনিয়র লেকচারার হিসেবে অবসর নেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনাকালে তিনি সময় সময় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগেও অধ্যাপনা করেন।
তার শিষ্যরা তাকে ‘শিক্ষকের শিক্ষক’ নামে অভিহিত করতেন। তার অনুগামীদের মধ্যে শুধু বুদ্ধিজীবী নয়, সহ অনেক রাজনৈতিক নেতাও ছিলেন। ১৯৬০-এর দশকে রাজনৈতিক বিরোধিতার কারণে আইয়ুব সরকার তাকে একবার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত করতে উদ্যোগী হয়েছিলো। অভিযোগ ছিলো শিক্ষকতায় অমনোযোগিতা। আদালতে সরকার এ অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে চাকরিচ্যুত করা সম্ভব হয়নি। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের মুক্তিযুদ্ধের সময় ‘দেশদ্রোহিতার’ জন্য তাকে তার অনুপস্থিতিতে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দের প্রথমদিকে ভারতের দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয় আবদুর রাজ্জাককে পিএইচডি (honoris causa) ডিগ্রি প্রদান করে। শিক্ষাব্রতী জ্ঞানীদের মধ্যে তার অনন্য মর্যাদার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে তাকে জাতীয় অধ্যাপক পদে অধিষ্ঠিত করে। তিনি ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের আজকের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।