জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস উদযাপন যেভাবে

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস উদযাপন/পালন বিষয়ে পরিপত্র জারি করেছে সরকার। এসব দিবস কীভাবে পালন হবে, কীভাবে ব্যয় নির্বাহ করা হবে তার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পরিপত্রে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গত রোববার (৪ ডিসেম্বর) এ পরিপত্র জারি করেছে।

জাতীয় দিবসসমূহ

জাতীয় পর্যায়ের দিবস বা উৎসবসমূহ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন/পালন করা হবে। এসব দিবস হলো- ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস/আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ১ মার্চ জাতীয় বীমা দিবস, ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ১৭ মার্চ জাতির পিতার জন্ম দিবস ও জাতীয় শিশু দিবস, ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, ১ মে মে দিবস, মে মাসে বৌদ্ধ পূর্ণিমা, ৫ আগস্ট শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস, ১৮ অক্টোবর শেখ রাসেল দিবস, ৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস, ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন, ১ বৈশাখ বাংলা নববর্ষ, ২৫ বৈশাখ রবীন্দ্র জয়ন্তী, ১১ জ্যৈষ্ঠ নজরুল জয়ন্তী, ১ শাওয়াল ঈদ-উল ফিতর, ১০ জিলহজ ঈদ-উল আজহা, ১২ রবিউল আওয়াল ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) ও দুর্গাপূজা।

ঐতিহ্যগতভাবে পালন করা দিবসসমূহ

যেসব দিবস ঐতিহ্যগতভাবে পালন করা হয়ে থাকে অথবা বর্তমান সময়ে দেশের পরিবেশ সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও সামাজিক উদ্বুদ্ধকরণের জন্য বিশেষ সহায়ক, সেসব দিবস উল্লেখযোগ্য কলেরবে পালন করা যেতে পারে। মন্ত্রিরা এসব অনুষ্ঠানে সম্পৃক্ত থাকবেন এবং এ ধরনের অনুষ্ঠানের গুরুত্ব বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এ পর্যায়ের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য সরকারি উৎস থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া যেতে পারে।  

এ ধরনের দিবসসমূহ হলো- ২ জানুয়ারি জাতীয় সমাজসেবা দিবস, জাতীয় টিকা দিবস (বছরের শুরুতে নির্ধারণযোগ্য), ৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস, ২৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস, ২ মার্চ জাতীয় ভোটার দিবস, ৬ মার্চ জাতীয় পাট দিবস, ১৫ মার্চ বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস, ২৩ মার্চ বিশ্ব আবহাওয়া দিবস, ৩ এপ্রিল জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস, ৬ এপ্রিল আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস ও জাতীয় ক্রীড়া দিবস, ৭ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস, ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবস, ২৮ মে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস, ৪ জুন জাতীয় চা দিবস, ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস, ২৬ জুন মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস, ১১ জুলাই বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস, ২৩ জুলাই জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস, ৯ আগস্ট জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস, ৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস, সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে বিশ্ব নৌ দিবস, ২ অক্টোবর জাতীয় উৎপাদনশীলতা দিবস, অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার শিশু অধিকার দিবস, ১৩ অক্টোবর আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস, ১৬ অক্টোবর বিশ্ব খাদ্য দিবস, ২২ অক্টোবর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস, ১ নভেম্বর জাতীয় যুব দিবস, নভেম্বর মাসের প্রথম শনিবার জাতীয় সমবায় দিবস, ১ ডিসেম্বর বিশ্ব এইডস দিবস, ৪ ডিসেম্বর জাতীয় বস্ত্র দিবস, ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস, ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া দিবস, ১২ ডিসেম্বর ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস।

প্রতীকী দিবসসমূহ

বিশেষ বিশেষ খাতের প্রতীকী দিবসসমূহ সীমিত কলেরবে পালন করা হবে। মন্ত্রিরা এসব দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিতির বিষয় বিবেচনা করবেন। উন্নয়ন খাত থেকে এসব দিবস পালনের জন্য কোনো বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হবে না। এ ধরনের দিবসমূহ হলো- ২৩ জানুয়ারি বার্ষিক প্রশিক্ষণ দিবস, ২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস, ৪ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ক্যান্সার দিবস, ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী অধিকার ও আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস, ১০ মার্চ জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস, ২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবস, ২৪ মার্চ বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস, ২৬ এপ্রিল বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস, ২৮ এপ্রিল জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস, ২৮ এপ্রিল জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস, ৩ মে বিশ্ব প্রেস ফ্রিডম দিবস, ৮ মে আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট দিবস, ১৫ মে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ দিবস, ৩১ মে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস, ৯ জুন বিশ্ব অ্যাক্রেডিটেশন দিবস, ১৭ জুন বিশ্ব খরা ও মরুকরণ প্রতিরোধ দিবস, জুলাই মাসের প্রথম শনিবার আন্তর্জাতিক সমবায় দিবস, ১৬ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক ওজন সংরক্ষণ দিবস, ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবস, সেপ্টেম্বর মাসের চতুর্থ রোববার বিশ্ব হার্ট দিবস, ১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস, অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার বিশ্ব বসতি দিবস, ৬ অক্টোবর জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস, ৯ অক্টোবর বিশ্ব ডাক দিবস, ১০ অক্টোবর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস, অক্টোবর মাসে বিশ্ব সাদা ছড়ি দিবস, ২০ অক্টোবর জাতিসংঘ দিবস, ২ নভেম্বর জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস, ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিক দিবস, ২৯ নভেম্বর প্যারেস্টাইনি জনগণের প্রতি আন্তর্জাতিক সহমর্মিতা দিবস, ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস, ১৮ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস, ২৯ ডিসেম্বর জাতীয় জীববৈচিত্র দিবস ও ডিসেম্বরে জাতীয় শিক্ষক দিবস।

পরিপত্রে বলা হয়, উপরে উল্লিখিত তিন ধরনের দিবস ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহ আরও কিছু দিবস পালন করে থাকে, যা গতানুগতিক ধরনের। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দিবসসমূহ পুনরাবৃত্তিমূলক এবং বর্তমান সময়ে তেমন কোনো গুরুত্ব বহন করে না। সরকারের সময় ও সম্পদ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে সরকারি সংস্থাসমূহ এ ধরনের দিবস পালনের সঙ্গে সম্পৃক্তি পরিহার করতে পারে।

শিক্ষা সপ্তাহ, প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ, বিজ্ঞান সপ্তাহ, বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ (১-৭ আগস্ট), বিশ্ব শিশু সপ্তাহ (২৯ সেপ্টেম্বর-৫ অক্টোবর), সশস্ত্র বাহিনী দিবস (২১ নভেম্বর), পুলিশ সপ্তাহ, বিজিবি সপ্তাহ, আনসার সপ্তাহ, মৎস্য পক্ষ, বৃক্ষরোপণ অভিযান এবং জাতীয় ক্রীড়া সপ্তাহ পালনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা নিয়ে কর্মসূচি গ্রহণ করবে। অনুমোদিত কর্মসূচি অনুযায়ী অনুষ্ঠানাদির আয়োজন করা হবে।  

জাতীয় পর্যায়ের উৎসবসমূহ ব্যতীত সাধারণভাবে দিবস পালনের ক্ষেত্রে আরও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে-

সাজসজ্জা ও বড় ধরনের বিচিত্রানুষ্ঠান যথা সম্ভব পরিহার করতে হবে। তবে রেডিও ও টেলিভিশনে আলোচনা এবং সীমিত আকারে সেমিনার/সিম্পোজিয়াম আয়োজন করা যাবে। কর্মদিবসে সমাবেশ/শোভাযাত্রা পরিহার করা হবে।

কোনো সপ্তাহ পালনের ক্ষেত্রে অনুষ্ঠানসূচি সাধারণভাবে তিনদিনের মধ্যে সীমিত থাকবে।

সরকারিভাবে গৃহীত কোনো কর্মসূচি যাতে অফিসের কর্মকাণ্ডে ব্যাঘাত না ঘটায় তা নিশ্চিত করতে হবে এবং আলোচনা বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানাদি ছুটির দিনে অথবা অফিস সময়ের পরে আয়োজনের চেষ্টা করতে হবে।

নগদ কিংবা উপকরণ আকারে অর্থ/সম্পদ ব্যয়ের প্রয়োজন হবে না এ রূপ সাধারণ ইভেন্টসমূহ ছুটির দিনে কিংবা কার্যদিবসে আয়োজন করা যাবে। যেমন- রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী প্রচার, পতাকা উত্তোলন (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), ঘরোয়া আলোচনা সভা, রেডিও ও টেলিভিশনে আলোচনা, পত্রিকায় প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়া ইত্যাদি।

কোনো দিবস বা সপ্তাহ পালন উপলক্ষে রাজধানীর বাইরে থেকে/জেলা পর্যায় থেকে কর্মকর্তা/কর্মচারীদের ঢাকায় আনা যথা সম্ভব পরিহার করা হবে।

পরিপত্রে উপযুক্ত সিদ্ধান্তসমূহ যথাযথভাবে প্রতিপালনের জন্য সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ/সংস্থাকে অনুরোধ করা হয়েছে।

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস উদযাপন/পালন সংক্রান্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বরের পরিপত্র বাতিল করা হলো বলেও পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রভাবমুক্ত শিক্ষক নিয়োগ দিতে কমিশন গঠনের প্রস্তাব - dainik shiksha প্রভাবমুক্ত শিক্ষক নিয়োগ দিতে কমিশন গঠনের প্রস্তাব শিক্ষা কমিশন গঠন হয়নি, যা দুঃখজনক - dainik shiksha শিক্ষা কমিশন গঠন হয়নি, যা দুঃখজনক রাবিতে পরীক্ষা দিতে এসে দুই ছাত্রলীগ নেতা আটক - dainik shiksha রাবিতে পরীক্ষা দিতে এসে দুই ছাত্রলীগ নেতা আটক আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ-লাইব্রেরি নির্মাণের নির্দেশ - dainik shiksha আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ-লাইব্রেরি নির্মাণের নির্দেশ হাজার শিক্ষার্থীর ২শ কোটি হাতিয়ে লাপাত্তা ক্যামব্রিয়ানের বাশার - dainik shiksha হাজার শিক্ষার্থীর ২শ কোটি হাতিয়ে লাপাত্তা ক্যামব্রিয়ানের বাশার ঢাবিতে বিশেষ মাইগ্রেশনের সুযোগ, বেড়েছে শূন্য আসন - dainik shiksha ঢাবিতে বিশেষ মাইগ্রেশনের সুযোগ, বেড়েছে শূন্য আসন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0056321620941162