সম্প্রতি জাতীয়করণ হওয়া সরকারি কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের আত্তীকরণে বৈষ্যম্যের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক-কর্মচারীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অবিলম্বে আত্তীকরণে বৈষম্য দূর করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা। এ বিষয়ে গত ২২ জুলাই মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো: সোহরাব হোসাইনের কাছে বৈষম্যের শিকার ১১ জন অধ্যক্ষ একটি আবেদন করেছেন।
ঢাকার পল্লবী বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজ সরকার, মাদারীপুরের কালকিনি শেখ হাসিনা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ জাকিয়া সুলতানা এবং কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনার রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ইসলাম উদ্দীনসহ বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষরা দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী প্রতিটি উপজেলায় একটি কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়। সম্প্রতি ১৭টি কলেজ জাতীয়করণ করা হয়েছে। এছাড়া আরো ২৮৫টি কলেজ জাতীয়করণের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। আত্তীকরণের বিধিমালা ২০০০ বৈষ্যমমূলক হওয়ায় ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ সেটা রহিত করে নতুন করে আত্তীকরণ করার নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী আত্তীকরণ বিধিমালা ২০১৮ তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে শিক্ষক-কর্মচারীরা স্কেলে স্বপদে বহাল থেকে ননক্যাডার হিসেবে আত্তীকরণ হতে পারবেন।
কিন্তু প্রথম ধাপে জাতীয়করণ হওয়া ১৭ কলেজের অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষের বিষয়ে স্পষ্ট কোন নির্দেশনা দেয়া হয়নি। অথচ জাতীয়করণকৃত ১৭টি কলেজের যাদের কাম্য যোগ্যতা নেই, তাদেরও আত্তীকরণ ২০১৮ বিধিমালায় ননক্যাডার হিসেবে আত্তীকরণের কথা বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে কাম্য যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও যারা সহকারী অধ্যাপক হিসেবে ৩৫ হাজার টাকা স্কেলে তারাও স্বপদে বহাল থাকছেন। অথচ ওই কলেজের অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষরা ২২ হাজার টাকা স্কেলে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পাবেন।
আবার আত্তীকরণ বিধিমালা ২০০০ অনুযায়ী পাস কোর্স ও ৩য় বিভাগধারী শিক্ষকগণ যারা আত্তীকরণ হবেন না, তারাও নতুন বিধিমালা-২০১৮ অনুযায়ী আত্তীকরণ হবেন। অথচ অধ্যক্ষদের ২০০০ বিধি অনুযায়ী প্রভাষক পদে যোগদান করতে হবে এবং কোন বদলি হবে না। একজন অধ্যক্ষ যে কলেজে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করছেন এবং অধ্যাপকের বেতন পেয়ে আসছেন, সেই কলেজে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করে চাকরি করা কষ্টদায়ক হবে বলেন অধ্যক্ষরা। বিষয়টি অমানবিক ও অমর্যাদাকরও মনে করছেন তারা। সেক্ষেত্রে ২০১৮ বিধিমালাতে আত্তীকরণ হতে চান ভুক্তভোগী এসব অধ্যক্ষ।
যেসব সহকারী অধ্যাপকের কাম্য যোগ্যতা আছে, তারাও প্রভাষক হচ্ছেন। আর যাদের কাম্য যোগ্যতা নেই, তারা সিনিয়র স্কেলে উচ্চতর পদে বহাল থাকছেন। এতে বৈষ্যম্যের সৃষ্টি হবে। এজন্য দ্রত সময়ের মধ্যে শিক্ষক-কর্মচারীদের যোগ্যতা মূল্যায়ন করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।