জাতীয়করণের দাবি, আরও ১৮ মাদ্রাসা শিক্ষক অসুস্থ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশনের ৫ম দিনে শনিবার (১৩ই জানুয়ারি) স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকদের উপস্থিতি আরও বেড়েছে। এদিন নতুন করে আরও ১৮ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ১৪৫জন অসুস্থ হলেন। কেউ কেউ স্যালাইন নিয়েই অনশন করছেন। অসুস্থদের অধিকাংশই অতিরিক্ত শীতে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।

বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির ব্যানারে গত ১ জানুয়ারি থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালন করে আসছেন ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরা। পরে ৯ জানুয়ারি থেকে লাগাতার অমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির মহাসচিব কাজী মোখলেছুর রহমান দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, কন কনে শীতে টানা আট দিন অবস্থান ধর্মঘটের পর গত মঙ্গলবার (৯ই জানুয়ারি) থেকে শুরু হওয়া আমরণ অনশনে শনিবার (১৩ই জানুয়ারি) সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৪৫ জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরমধ্যে অধিকাংশ শিক্ষক অতিরিক্ত ঠান্ডায় নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি আছেন ১৮ জন।

শনিবার সকালে অনশনস্থলে অসুস্থ এক শিক্ষককে হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে

এদিকে, শনিবার গণফোরামের নেতা ও বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনশনরত শিক্ষকদের কাছে আসার কথা থাকলেও শেষতক আসেননি। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি আসবেন বলে সকাল দশটার দিকে শিক্ষক নেতাদের জানিয়েছিলেন কামাল হোসেনের একান্ত সচিব।

বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির মহাসচিব কাজী মোখলেসুর রহমান দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, কামাল হোসেনের পরিবর্তে মোস্তফা মহসীন মন্টু এসেছিলেন সাড়ে এগারোটার দিকে। তিনি মাদ্রাসা শিক্ষকদের জাতীয়করণের দাবির প্রতি একাত্নতা প্রকাশ করে সরকারকে অবিলম্বে শিক্ষকদের দাবি মেনে নেয়ার আহবান জানান।

জাতীয়করণের দাবিতে আট দিনের টানা অবস্থান কর্মসূচি শেষে মঙ্গলবার (৯ই জানুয়ারি) থেকে অনশন শুরু করেন মাদ্রাসা শিক্ষকরা। বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির ব্যানারে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা। অনশনরত শিক্ষকরা বলছেন, ইবতেদায়ী মাদ্রাসার সব কার্যক্রম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো হলেও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বেতন-ভাতা পেলেও ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকরা তেমন কিছুই পান না। দিন দিন বাসা বাড়া থেকে শুরু করে নিত্যপণ্যসহ সবকিছুর দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাহলে আমরা কীভাবে বাচঁবো? গত ৯ জানুয়ারি বেলা ১১টা থেকে চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে অনশন শুরু করেন ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকরা। এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনও আশ্বাস পাননি তারা।

বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি আলহাজ কাজী রুহুল আমিন চৌধুরী বলেন,দীর্ঘদিন বিনা বেতনে চাকরি করতে করতে আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। জাতীয়করণ ছাড়া আমাদের আর ভিন্ন কোনো পথ খোলা নেই। সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করেছে। আমরাও তো প্রাথমিক শিক্ষার অন্যতম অংশ। তাহলে আমাদের কেন বাকি রাখা হবে? আমাদের বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি ঠিকমতো বোঝালে তিনি নিরাশ করবেন না। তাই আমরা তাঁর দিকেই তাকিয়ে আছি।

ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির দপ্তর সম্পাদক মো. ইনতাজ বিন হালিম জানান, এ তীব্র শীতে খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে হচ্ছে। কিন্তু আমাদের এ দুঃখ-কষ্ট দেখার কেউ নেই। দ্রুত আমাদের দাবি মেনে নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনরোধ জানাচ্ছি।

জানা যায়, মাদরাসা বোর্ডের নিবন্ধন পাওয়া ১০ হাজারের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা আছে। এতে শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। মাত্র এক হাজার ৫১৯টি ইবতেদায়ি মাদরাসার প্রধান শিক্ষক দুই হাজার ৫০০ টাকা ও সহকারী শিক্ষকরা দুই হাজার ৩০০ টাকা ভাতা পান। বাকি শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে বিনা বেতনে চাকরি করছেন।

শনিবার (১৩ই জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনশন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সহ সভাপতি নজরুল ইসলাম হিরন, মাওলানা মো: শাহজাহান, তাজুল ইসলাম ফরাজী,যুগ্ম মহাসচিব আবু মুসা ভূইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল আলম, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক রেজাউল করিম, আজিজুল হক, মিজানুর রহমান, আব্দুল হামিদ, ময়েজ উদ্দিন,ইমদাদুল হক বাদল,তৈয়বুর রহমান, সুমি খাতুন,ফরিদা ইয়াসমিন,ফেন্সী খাতুন,নাসরিন বেগম,রুবিনা খাতুন,সুফিয়া বেগম,শাকিলা খাতুন প্রমুখ


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি - dainik shiksha ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ - dainik shiksha অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র - dainik shiksha ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে - dainik shiksha ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! - dainik shiksha ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল - dainik shiksha জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032811164855957