জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আহমেদের সংবাদ সম্মেলন

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর সবুজ বিদ্যাপীঠ স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। দুর্নীতির অভিযোগে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে গত শনিবার চিঠি দেওয়া হলেও নেপথ্যে রয়েছে অন্য ঘটনা। এমনটাই মনে করছেন জাতীয়করণের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করা শিক্ষকরা।

তারা বলছেন, বরাবরের মতোই শিক্ষকদের একাংশকে ব্যবহার করা হয়েছে অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদের বিরুদ্ধে। ভিন্নমতের শিক্ষক দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত ভূইফোঁড় অনলাইন পত্রিকা, একাধিক ফেসবুক পেইজ ও কথিত ফেসবুক টিভির প্রতিবেদন ব্যবহার করা হয়েছে অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ বরখাস্ত করতে। এসব কথিত ও নামধারী সাংবাদিকরা মূলত এমপিওভুক্ত এবং খন্ডকালীন শিক্ষক। তারা সাংবাদিক না হয়েও এসব দোকান খুলে সাংবাদিকতার কার্ড বিক্রিতে নিয়োজিত এবং বিভিন্ন সময়ে টাকার বিনিময়ে নামী মানুষদের চরিত্রে কালিমা লেপনের কাজে ব্যবহার হন। অপপ্রচারকারীদের মধ্যে রাজধানী উইলস লিটল ফ্লাওয়ার  স্কুলের একাধিক নামধারী শিক্ষক ও তাদের ফেসবুক পেইজ। কারছার আলীর নিজের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও তাদের ফেসবুক পেজের এডমিনরা রয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন কাওছার আলী।

প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাজী আবুল কালাম অনু স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, কাওছার আলীর বিরুদ্ধে ২০১৫ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত উল্লিখিত পরিমাণ টাকা দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এজন্য দুই বার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলেও জবাব পাওয়া যায়নি।

চিঠিতে আর্থিক দুর্নীতি ছাড়াও জাল সনদের মাধ্যমে নিজ আত্মীয়কে নিয়োগ, এমপিওভুক্তির আশ্বাসে টাকা আদায়, নারী শিক্ষকদের নিপীড়নসহ প্রতিষ্ঠানের কাজে সময় না দিয়ে জমি ব্যবসার মাধ্যমে নিজেকে ব্যস্ত রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে।

এসব অভিযোগে ‘স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষকগণের চাকরির শর্ত বিধিমালা-১৯৭৯’ অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত এবং উল্লিখিত পরিমাণ টাকা জমা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়। অন্যথায় বিধি মোতাবেক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে।

বিধি মোতাবেক কাওছার আলী খোরপোষ ভাতা পাবেন। তবে বিধি বহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করায় সেখান থেকে ফেরত বা সমন্বয় করা হবে।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ব্যানারে জাতীয়করণের দাবিতে গত জুলাইয়ে ঢাকায় সারাদেশের শিক্ষকদের প্রায় মাসব্যাপী জমায়েতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কাওছার আলী। ১০২ বছরের পুরনো সংগঠনটির তিনি সাধারণ সম্পাদক।

সাময়িক বরখাস্তের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ কাওছার আলী বলেন, জাতীয়করণের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় থেকে একটি পক্ষ আমার পেছনে লেগে আছে। আমাকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমান কমিটি একটি মনগড়া অডিটের নামে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে যা ষড়যন্ত্রমূলক। মনগড়া অডিটের নামে রাতের অন্ধকারে মিটিং করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমাকে চিঠি না দিয়ে স্কুলে আমার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, চলতি বছরে বোর্ড নির্ধারিত এসএসসির ফরম পূরণে ফি বাবদ বাড়তি ছয় হাজার টাকা নিয়ে মোট ৮ হাজার ১৪০ টাকা নেওয়া হয়েছে। আর মনগড়া অডিট করে পাঁচ লাখ টাকার বিল সাবমিট করা হয়েছে। আর বর্তমান কমিটির সদস্যদের মধ্যে দুইজন অবৈধ, তাদের কোনো সন্তান স্কুলে পড়ে না।

এদিকে, কাওছার আলীকে বরখাস্ত ও বর্তমান কমিটির নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি কর্মসূচি ঘোষণা করছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।  

বক্তব্যের জন্য প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাজী আবুল কালাম অনুকে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

আজ রোববার সংবাদ সম্মেলন করে কাওছার আলী বিস্তারিত জানাবেন বলে জানা গেছে। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৩ ডিসেম্বর - dainik shiksha আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৩ ডিসেম্বর তালাবদ্ধ কেন্দ্রে হবে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha তালাবদ্ধ কেন্দ্রে হবে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা মাদরাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে মরিয়া সেই অধ্যাপক - dainik shiksha মাদরাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে মরিয়া সেই অধ্যাপক ৩৫ শিক্ষক-কর্মচারী এমপিওভুক্ত, পাস মাত্র চার - dainik shiksha ৩৫ শিক্ষক-কর্মচারী এমপিওভুক্ত, পাস মাত্র চার এইচএসসির ২ লাখ ৭১ হাজার খাতা চ্যালেঞ্জ - dainik shiksha এইচএসসির ২ লাখ ৭১ হাজার খাতা চ্যালেঞ্জ আইনে মৃত কখন - dainik shiksha আইনে মৃত কখন please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0046169757843018