জাবিতে অনলাইনে শিক্ষক নিয়োগের ভাইভা, কিছুই জানেনা ইউজিসি

জাবি প্রতিনিধি |

সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শিক্ষক ও কর্মকর্তা পদে ৪৭ জনকে নিয়োগের বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। গত ১১ ফেব্রুয়ারি দর্শন বিভাগে ছয় জন প্রভাষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধক কার্যালয় বলছে, এই ছয় পদের বিপরীতে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেবেন প্রায় ৫৭ জন প্রার্থী। আগামী শনিবার (১২ জুন) অনলাইনে তাদের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

তবে জাবিতে অনলাইনে নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষার বিষয়ে অবগত নন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সদস্য (ইউজিসি) ড. দিল আফরোজা বেগম।

তিনি বলেন, ‘অনলাইনে শিক্ষক নিয়োগ ভাইভা কোনোভাবেই হতে পারে না। বোর্ডে একজন প্রার্থীকে সামনাসামনি দেখতে হয়, তার সার্টিফিকেট দেখতে হয়। অনলাইনে কীভাবে সম্ভব? আমরা কেবল বলেছি, অনলাইনে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে। তাও অনেক নীতিমালা উল্লেখ করেছি।’

এদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের নতুন ছয় শিক্ষক নিয়োগ বন্ধে হাইকোর্টে রিট হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ জুন) বিভাগের চার জন শিক্ষক এ রিট করেন। পাশাপাশি নিয়োগ বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন আট জন শিক্ষক।

রিটকারী শিক্ষকরা হলেন অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া, অধ্যাপক আবদুছ ছাত্তার ও সহযোগী অধ্যাপক জাকির হোসেন। এর আগে, বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান বরাবর নিয়োগ বন্ধে লিখিত আবেদন করেন তারা। লিখিত আবেদনে বলা হয়, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভাগীয় শিক্ষাপর্ষদের সভা আহ্বানের ‘নীতি লঙ্ঘন’ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বিভাগের সভাপতি তার ‘পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ’ দেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিভাগীয় নীতি লঙ্ঘন করেছেন।

এতে আরও বলা হয়, এক বছরের বেশি সময় ধরে সরাসরি ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। নানা কারণে ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসের বাইরে আছেন। এমন পরিস্থিতিতে ছয় জন শিক্ষক নিয়োগ শুধু অপ্রয়োজনীয়ই নয় বরং দুরভিসন্ধিমূলক।

এসব বিষয়ে বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‘বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। এভাবে শিক্ষক নিয়োগের ঘটনা বিভাগে নজিরবিহীন। অনলাইনে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে কোনও নীতিমালা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই। এছাড়া প্রকাশিত শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে অনলাইনে পরীক্ষার বিষয়টি উল্লেখ নেই। এরকম অস্পষ্টতার মধ্যে শিক্ষক নিয়োগ হতে পারে না।’

অভিযোগের বিষয়ে বিভাগের সভাপতি মোস্তফা নাজমুল মানছুর বলেন, ‘বিভাগে বর্তমানে স্বক্রিয় শিক্ষক সংখ্যা ১৭ জন। ২০১১ সালের পর থেকে বিভাগে কোনও শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। এর মধ্যে কয়েকজন শিক্ষক অবসরে এবং শিক্ষা ছুটিতে গিয়েছেন। ফলে বর্তমান কর্মরত শিক্ষকের সংখ্যা ১৭। এই সংখ্যক শিক্ষক দিয়ে পাঠদান সম্ভব নয় বলেই নতুন করে চাহিদার কথা জানানো হয়।’

কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘দর্শন বিভাগের নিয়োগ বন্ধ করতে আমার কাছে একটি লিগ্যাল নোটিশ এসেছে। তবে বিভাগটিতে এখন দুটি পক্ষ আছে। আমার জন্য এখানে বিষয়টিতে পক্ষ-বিপক্ষ নেওয়া খুব কঠিন। আর বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে ডিনের কোনও ভূমিকা থাকে না।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ এসব বিষয় দেখে থাকে বলে জানান তিনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0023510456085205