জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মীর মশাররফ হোসেন হলে গাঁজা সরবরাহ করতে গিয়ে নিরাপত্তা কর্মীদের কাছে আটক হন এক ক্যান্টিন বয়। বারবার একইরকম ঘটনায় জড়িত থাকায় হলের বি ব্লকের ক্যান্টিন বন্ধ করে দিয়েছে হল প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুর ২টা নাগাদ মীর মশাররফ হোসেন হলের 'এ' ব্লকের তৃতীয় তলার করিডোর থেকে আটক করা হয় তাকে। নিরাপত্তাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে তাকে হল প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করে।
এর আগেও তার বিরুদ্ধে মীর মশাররফ হোসেন হলে মাদক সরবরাহের অভিযোগ উঠেছিল এবং তাকে একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছিল বলে জানান হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। সে সময় ১০-১২ দিন হলের বাইরে থেকে আবারও হলে ফিরে পুরনো কাজে সম্পৃক্ত হন ওই কিশোর। তারা আরও জানান, টাকার বিনিময়ে দীর্ঘদিন ধরে হলের মাদক সরবরাহের কাজ করে আসছে হলের এ ক্যান্টিন বয়।
অভিযুক্ত কিশোরের বাবা ও হলের ‘বি’ ব্লকের ক্যান্টিন পরিচালক উজ্জ্বল মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, আমি ছেলেকে সময় দিতে পারি না, ক্যান্টিনের কর্মচারী নাই। আমি আর ওর মা সারাদিন কাজ করি, যার ফলে ছেলে খারাপ সংস্পর্শে বখে গেছে।
এদিকে হলের নিয়মিত মাদকসেবী ও কিশোরের নিয়মিত ক্রেতা ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী শিহাদ হাসানকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে উপস্থিত সবার কাছে সে নিয়মিত মাদক সেবনের কথা স্বীকার করে ও মাদকসেবন ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানায়।
স্বীকারোক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা ও পাশের গেরুয়া এলাকায় খান নামের বয়স্ক ব্যক্তি মাদক সরবরাহ করে বলে জানা যায়। হলের মাদক কারবার সম্পর্কে ওই কিশোর বলেন, হলে আগে থেকে মাদক দ্রব্য বিক্রি করা হতো। আগে মাদক বিক্রির সঙ্গে যারা ছিলেন তারা হলের পলিটিক্সের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থী। বিভিন্ন সময় মাদকের আসরের জন্য হল এবং হলের বাইরের শিক্ষার্থীদের কাছে গাঁজা বিক্রি করা হতো। পূর্বে ভাইরা আমাকে টাকার বিনিময়ে মাদক আনতে বলত। তবে পরবর্তীতে আমি নিজেই মাদক ব্যবসা শুরু করি।
এ সময় হলের ওয়ার্ডেন অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ও ওয়ার্ডেন অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান, হলের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, সাধারণ শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে তারা উভয়ে হলের বিভিন্ন ব্যাচের আরও কয়েকজন নিয়মিত মাদকসেবীদের নাম উল্লেখ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তা শরীফুল জিন্নাহ বলেন, হল প্রশাসন আমাদের জানালে তাকে নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে আসি। আমাদের কাছে মাদক বিক্রির কথা স্বীকার করলে তার মুচলেকা নিয়ে রাখি। অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তাকে আমরা পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি।
এ ব্যাপারে হলের ওয়ার্ডেন অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান বলেন, মাদকের ব্যাপারে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি প্রয়োগ করবো। শুধু চুনোপুঁটিদের নয়, আমরা মাদকের মূল হোতাদের ধরতে চাই। যারা মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তাদের হলে রেখে হলের পরিবেশ নষ্ট হতে দেবো না।