জাবি ছাত্রের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে বান্ধবীকে ধ*র্ষণের অভিযোগ

দৈনিক শিক্ষাডটকম, জাবি |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, জাবি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাঈমুর রহমান নাঈমের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মেয়ে বান্ধবীকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। নাঈমুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আ ফ ম কামাল উদ্দিন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

গতকাল সোমবার বিকালে ভুক্তভোগী নিজেই এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি সাভার সরকারি কলেজ থেকে সম্প্রতি স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন বলে জানিয়েছেন। এ ঘটনায় গত ৩১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নির্যাতন সংক্রান্ত অভিযোগ কমিটির সভাপতি বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ পত্রও জমা দিয়েছেন তিনি।

অভিযোগপত্র সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত নাঈমুর রহমান নাঈমের সঙ্গে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর প্রায় ৭ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক। প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হলেও তাদের মধ্যে পরবর্তীতে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে নাঈমুর রহমান মুসলিম ধর্মগ্রন্থ কুরআন শরীফ নিয়ে শপথ করে ভুক্তভোগীকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেয়। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত দুই মাসে একাধিকবার ধর্ষণ করে অভিযুক্ত নাঈমুর। সর্বশেষ গত ১১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন জামসিং এলাকায় একটি বাসায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়। এরপর বিয়ে করার কথা জানালে নাঈমুর অস্বীকৃতি জানান বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। 

এমনকি সম্প্রতি ২৯ মার্চ রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া চত্বরে ভুক্তিভোগীকে ডেকে এনে ঐশী (নাটক ও নাট্যতত্ত্ব, ৪৯) নামে এক নারী শিক্ষার্থীকে দিয়ে নাঈমুর মারধর করেন বলেও অভিযোগপত্রে বলা হয়। এসময়, নাঈমুরের সঙ্গে তার বন্ধু আবুবকর রাশেদ ওরফে রাশু-ও (প্রাণিবিদ্যা, ৪৬ ব্যাচ) উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী বহিরাগত ওই ছাত্রী বলেন, আমাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি না দিলে কখনওই আমি নাইমুরের সঙ্গে লিভটুগেদারে যেতাম না। সে মূলত বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। এমনকি বিয়ের কথা জানালে সে আমাকে জাবিতে ডেকে নিয়ে তার বন্ধুদের দিয়ে বেধড়ক মারধর করেছে। আমি এর ন্যায়বিচার চাই।

তবে ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে নাঈমুর রহমান নাঈম বলেন, পারিবারিক ব্যবসা ও নিজের ব্যস্ততার কারণে ওর সাথে আমার রিলেশন কন্টিনিউ করা সম্ভব হচ্ছিল না। তাকে আমি কখনওই জোর করে ধর্ষণ করিনি। তবে সে তার আত্মীয়ের বাসায় আমাকে লিভটুগেদারের জন্য ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। আমি কখনওই তাকে ধর্ষণ করিনি। সে এভাবে অভিযোগ না দিয়ে চাইলে আমার পরিবারের সাথে আলোচনা করতে পারতো। 

অন্যদিকে মারধরে বিষয়ে জানতে চাইলে নাঈমুর রহমান আরও বলেন, সে ওইদিন নিজে ক্যাম্পাসে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রীর সাথে মারামারিতে জড়ায়। পরে তাকে থামাতে গেলে আমাকে ব্লেম (দোষারোপ) দেওয়া শুরু করে। আমি তাকে মারধর করিনি। 

মারধরের ঘটনার বিষয়ে আবুবকর রাশেদ ওরফে রাশু বলেন, ওইদিন ওই মেয়ের সাথে মারামারি করেছে ঐশী। আমি মোটেই তার গায়ে হাত দিইনি। বরং মেয়েটিকে ঘটনাস্থল সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছি।

তবে মারামারির কথা স্বীকার করে অন্য অভিযুক্ত ঐশী বলেন, “প্রথমে আমাকে বহিরাগত মেয়েটি ঘুষি মারে। পরে আমি তাকে মেরেছি। সেসময় রাশু ভাই এবং নাঈম ভাই মেয়েটির গায়ে হাত দেয়নি।”

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে জাবির যৌন নির্যাতন সংক্রান্ত অভিযোগ কমিটির সভাপতি ও লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক জেবউননেছা বলেন, বহিরাগত একজন মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের একটি অভিযোগ দিয়েছে। কিন্তু ভুক্তভোগী এবং ঘটনাস্থল ক্যাম্পাসের বাইরের হওয়ায় আমরা ব্যবস্থা নিতে পারব না। কারণ, এটা একটা পুলিশ কেইস। ভুক্তভোগী চাইলে সাভার বা আশুলিয়া থানার শরণাপন্ন হতে পারে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
একাদশে ভর্তিতে কলেজ পছন্দে যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে - dainik shiksha একাদশে ভর্তিতে কলেজ পছন্দে যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: জুতার মালা শিক্ষককের - dainik shiksha ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: জুতার মালা শিক্ষককের ঢাকা বোর্ডের এসএসসি: অসন্তুষ্টদের খাতা চ্যালেঞ্জ ১ লাখ ৮০ হাজার - dainik shiksha ঢাকা বোর্ডের এসএসসি: অসন্তুষ্টদের খাতা চ্যালেঞ্জ ১ লাখ ৮০ হাজার থমকে আছে শিক্ষক বদলি কার্যক্রম - dainik shiksha থমকে আছে শিক্ষক বদলি কার্যক্রম প্রশিক্ষক হতে শিক্ষকদের আবেদন আহ্বান - dainik shiksha প্রশিক্ষক হতে শিক্ষকদের আবেদন আহ্বান কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0042788982391357