জামানত হারালেন ফেনীর সাত প্রার্থী

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

ফেনী সদর, সোনাগাজী ও দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত সাত প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। নিয়মানুযায়ী নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের ১৫ শতাংশ না পাওয়ায় তারা জামানত হারান।

বুধবার (২৯ মে) ঘোষিত ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, নির্বাচনে ফেনী সদর উপজেলায় ৪ লাখ ১৫ হাজার ৯৯৪ জন ভোটার ছিল। তাদের মধ্যে ২ লাখ ২৪ হাজার ৩৪৩ জন ভোটার চেয়ারম্যান পদে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এ হিসেবে জামানত ফিরে পেতে চেয়ারম্যানপ্রার্থীকে অন্তত ১৪ হাজার ৯৫৬ ভোটের বেশি পেতে হত। ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, ২ লাখ ১৩ হাজার ৮৯৩ ভোট পেয়ে দোয়াত-কলম প্রতীকের প্রার্থী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল দ্বিতীয়বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী মনজুর আলম পেয়েছেন ৭ হাজার ৩০৯ ভোট। এই হিসেবে চেয়ারম্যানপ্রার্থী মনজুর আলমের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।

ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, নির্বাচনে সদর উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ লাখ ২৪ হাজার ২০৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এ হিসেবে জামানত ফিরে পেতে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অন্তত ১৪ হাজার ৯৪৭ ভোটের বেশি পেতে হত।

ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ লাখ ৩ হাজার ৮০৪ ভোট পেয়ে টিউবওয়েল প্রতীকের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক একে শহীদ উল্ল্যাহ খোন্দকার নির্বাচিত হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী গোলাম কিবরিয়া উড়োজাহাজ প্রতীকে পেয়েছেন ১৪ হাজার ৮৯৫ ভোট। এই হিসাবে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম কিবরিয়ার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।

সদর উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ লাখ ২৪ হাজার ৩৫২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এ হিসাবে জামানত ফিরে পেতে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অন্তত ১৪ হাজার ৯৫৬ ভোটের বেশি পেতে হতো। নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ লাখ ২ হাজার ৮৬৬ ভোট পেয়ে কলস প্রতীকের প্রার্থী মুর্শিদা আক্তার নির্বাচিত হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী আরজুমান আক্তার প্রজাপতি প্রতীকে পেয়েছেন ১৬ হাজার ৩৪৫ ভোট।

এদিকে সোনাগাজী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৮৮৮ জন ভোটার ছিল। তাদের মধ্যে ৮৯ হাজার ২৩৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এ হিসাবে জামানত ফিরে পেতে প্রার্থীকে অন্তত ৫ হাজার ৯৪৯ ভোটের বেশি পেতে হত। ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, ৮৬ হাজার ১৭১ ভোট পেয়ে দোয়াত-কলম প্রতীকের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন দ্বিতীয়বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মো. মুজিবুল হক ৭০৯ ভোট, আনারস প্রতীকের প্রার্থী মহি উদ্দিন ৪২০ ভোট এবং ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী নুর আলম মিস্টার ৩৫৬ ভোট পেয়েছেন। নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে টিউবওয়েল প্রতীকের প্রার্থী সাখাওয়াতুল হক বিটু ৮৩ হাজার ২৫৪ ভোট পেয়ে ফের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী উড়োজাহাজ প্রতীকের প্রার্থী হায়দার আলী পেয়েছেন ৩ হাজার ২০০ ভোট।

এই হিসাবে পরাজিত তিন চেয়ারম্যানপ্রার্থী এবং ভাইস চেয়ারম্যানপ্রার্থী হায়দার আলীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। নির্বাচনে একক প্রার্থী থাকায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে খোদেজা খানম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

অন্যদিকে দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ২ লাখ ৩৯ হাজার ১২২ জন ভোটার ছিল। তাদের মধ্যে ১ লাখ ২২ হাজার ১৩৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এ হিসাবে জামানত ফিরে পেতে প্রার্থীকে অন্তত ৮ হাজার ১৪২ ভোটের বেশি পেতে হত।

ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, ১ লাখ ১৭ হাজার ১৫৮ ভোট পেয়ে দোয়াত-কলম প্রতীকের প্রার্থী জেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি দিদারুল কবির রতন চতুর্থবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী চিংড়ি মাছ প্রতীকের প্রার্থী বিজন ভৌমিক পেয়েছেন ৩ হাজার ১৬৬ ভোট। নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে টিউবওয়েল প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ মহিউদ্দিন হায়দার ১ লাখ ৮ হাজার ৮২০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী উড়োজাহাজ প্রতীকের মোহাম্মদ ইউছুপ আলী পেয়েছেন ৯ হাজার ১৫৪ ভোট।

এই হিসাবে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী বিজন ভৌমিকের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। নির্বাচনে একক প্রার্থী থাকায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রাবেয়া আক্তার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা (কুমিল্লা অঞ্চল) ও ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বলেন, এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সংশোধিত বিধিমালা অনুযায়ী চেয়ারম্যান পদের জন্য একজন প্রার্থীকে নির্বাচন কমিশনের অনুকূলে এক লাখ টাকা জমা দিতে হয়েছে। আর ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের জন্য ৭৫ হাজার টাকা। বিধি অনুযায়ী প্রার্থীর নির্বাচনী এলাকার প্রদত্ত ভোটের ১৫ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বুধবার (২৯ মে) সকাল ৮টা থেকে জেলার তিন উপজেলার ২৮৪টি কেন্দ্রে ব্যালটে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ফেনী সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। দাগনভূঞা উপজেলায় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন এবং সোনাগাজী উপজেলায় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে - dainik shiksha অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে জোর করে পদত্যাগ, ভালো নেই স্ট্রোক করা সেই অধ্যক্ষ - dainik shiksha জোর করে পদত্যাগ, ভালো নেই স্ট্রোক করা সেই অধ্যক্ষ বরিশালে থানায় শিক্ষার্থীদের হামলা-ভাঙচুর - dainik shiksha বরিশালে থানায় শিক্ষার্থীদের হামলা-ভাঙচুর হাজিরা মেশিন কাজে আসেনি ১৬৯ বিদ্যালয়ে, গচ্চা ৩৭ লাখ টাকা - dainik shiksha হাজিরা মেশিন কাজে আসেনি ১৬৯ বিদ্যালয়ে, গচ্চা ৩৭ লাখ টাকা পদ্মার ভাঙনে বিলীনের শঙ্কায় দুই স্কুল - dainik shiksha পদ্মার ভাঙনে বিলীনের শঙ্কায় দুই স্কুল কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026850700378418