ঢাকার গুলশানের লেকহেড গ্রামার স্কুলের মালিক খালেদ হাসান মতিন জামিন পেয়েছেন। আজ বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা এই জামিন মঞ্জুর করেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের আদালত পরিদর্শক আশিকুর রহমান।
ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) মো. মোতালেব হোসেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চমান সহকারী নাসির উদ্দিন ও লেকহেড স্কুলের পরিচালক খালেদ হাসান মতিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা-ডিবি।
ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে গত ২২ জানুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) মো. মোতালেব হোসেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চমান সহকারী নাসির উদ্দিন এবং খালেক হাসান মতিনের বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা-ডিবি। মামলা করেন ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম মৃধা।
এজাহারে যা বলা হয়েছে
বনানী থানায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামি খালেদ হাসান মতিন ও তাঁর সহযোগী ‘আসিফ’ আদালতের শর্ত ভেঙে লেকহেড গ্রামার স্কুল দ্রুত চালুর চেষ্টা করছিলেন। এ জন্য তাঁরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চমান সহকারী মো. নাসিরউদ্দীন ও শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. মোতালেব হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। গত ১৬ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা ও কর্মচারী লেকহেড গ্রামার স্কুলের মালিক খালেদ হাসান মতিনের গাড়িতে করে বনানীর আর এম গ্রুপের অফিসে যান। লেকহেড গ্রামার স্কুল দ্রুত চালুর ব্যাপারে সহযোগিতার জন্য ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা ঘুষের রফা হয়। এর অংশ হিসেবে ১৮ ডিসেম্বর মো. নাসিরউদ্দীন ওই অফিসে গিয়ে খালেদ হাসান মতিনের কাছ থেকে প্রথম দফায় ৫০ হাজার টাকা নেন। বাকি টাকা থেকে গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর তিনি ৫০ হাজার টাকা ও ১১ জানুয়ারি ২ লাখ টাকা নেন তাঁরা। উৎকোচের একটা অংশ পান শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. মোতালেব হোসেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আরও দু-একজন কর্মকর্তাও ঘুষের একটা অংশ পেতেন।
টাকার বিনিময়ে ওই কর্মকর্তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে থাকা লেকহেড গ্রামার স্কুলের গোপন নথিপত্র খালেদ হাসান মতিনকে দিয়ে দেন বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়। আরও বলা হয়, খালেদ হাসান মতিন তাঁর বন্ধু রেজওয়ান হারুনকে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ যুবকদের জামায়াতুল মুসলেমিন নামের জঙ্গি সংগঠনে যোগদানে সহায়তা করতেন।
উপপরিদর্শক মো. মনিরুল ইসলাম মৃধা এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ২২ জানুয়ারি (সোমবার) তিনি খবর পান ঘুষের বাকি থাকা ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ওই দিনই কোনো এক সময়ে বনানীতে লেনদেন হবে। ওই দিন বিকেল ৫টার দিকে মো. নাসিরউদ্দীন ঘুষ নিয়ে বেরিয়ে আসার সময় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েন। তাঁর কাছ থেকে ১ হাজার টাকার ১৩০টি নোট উদ্ধার হয়। নাসিরউদ্দীন নিজেই বনানীর ওই অফিসে ঢুকে খালেদ হাসান মতিনকে শনাক্ত করেন। পরে তাৎক্ষণিকভাবে প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ওই দুজনের সঙ্গেই শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. মোতালেব হোসেনের যোগাযোগ রয়েছে। পরে তাঁকে ধানমন্ডি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ মামলার অপর দুই আসামি কারাগারে আছেন।