বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ বা ভর্তি পরীক্ষার জাল প্রশ্নপত্র ও প্রবেশপত্র তৈরি করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নয়ন ইসলাম নামের এই যুবক নিজেকে কখনো চিকিৎসক কখনো সরকারি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করতেন বলে জানিয়েছেন রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার বিজয় বসাক।
বুধবার দুপুরে আরএমপি সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে বিজয় বসাক জানান, মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে যশোরের বেনাপোল এলাকা থেকে ‘প্রতারক চক্রের মূল হোতা’ নয়নকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
পরে তার কাছ থেকে বিপুল সংখ্যক বিভিন্ন পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ড, পরীক্ষার প্রবেশপত্র, জীবন বৃত্তান্ত, নাগরিক সনদপত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি উদ্ধার করা হয়।
২৫ বছরের নয়ন ইসলাম রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার আচিনঘাট এলাকার আজগর হোসেন মণ্ডলের ছেলে। মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার উপশহর এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন নয়ন।
সংবাদ সম্মেলনে বিজয় বসাক জানান, নয়ন মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়ার প্রলোভন দেখাতেন ভর্তিচ্ছুদের।
এ ছাড়া চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গেও প্রতারণা করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতেন নয়ন।
বিশেষ করে নগরীর বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের মালিকদের সহযোগিতায় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু ও চাকরি প্রত্যাশীদের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করতেন।এরপর তাদের পরীক্ষার প্রবেশপত্রের কপি এবং চুক্তি মোতাবেক অর্থের জিম্মা হিসাবে তাদের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার মূল সনদপত্র, রেজিস্ট্রেশন কার্ড নিয়ে প্রাথমিক খরচের কথা বলে বিকাশ, রকেট এবং নগদ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নগদ টাকা সংগ্রহ করতেন।
বিজয় বসাক বলেন, “নয়ন নিজেকে কখনো ডাক্তার আবার কখনো সরকারি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে কয়েকজন সহযোগী নিয়ে এই প্রতারণা চালিয়ে আসছিল।
“নগরীর নিউমার্কেট এলাকার পিজি টাওয়ারের ১০ তলার একটি রুমে বসে নয়ন এসব কার্যক্রম চালাতেন। ডাক্তার পরিচয় দিয়ে পিজি টাওয়ার ও তার উপশহরের বাড়ি ভাড়া নেন তিনি।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পুলিশ পিজি টাওয়ারে অভিযান চালালে পালিয়ে যান নয়ন। এরপর গত ২৬ ফেব্রুয়ারি তিনি ভারতে চলে যান।
“তবে মঙ্গলবার নয়ন বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেশে ঢুকে। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।”
নয়নের বিরুদ্ধে বোয়ালিয়া মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও পেনাল কোডে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা বিজয় বসাক।