বান্দরবানের লামায় শিক্ষক নিবন্ধনের জাল সনদে ৯ বছর ধরে চাকরি করছেন এক শিক্ষক। শুধু তাই নয়, এমপিওভুক্তও হয়েছেন ওই শিক্ষক। এমন অভিযোগ উঠেছে উপজেলার ফাইতং উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (শরীর চর্চা) মো. নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে।
সনদ যাচাই-বাছাই করে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) ওই শিক্ষকের নিবন্ধন সনদটি জাল বলে জানিয়েছে। পরে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিলেও আজও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। আর এ কাজে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন সহায়তা করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক ও সহায়তাকারী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বান্দরবান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি শহিদুল্লাহ মিন্টু।
অভিযোগে জানা যায়, নুরুল আমিন ২০০৯ সালের ৭ জুলাই উপজেলার লামামুখ উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীর চর্চা শিক্ষক পদে নিয়োগ পান। এরপর ২০১২ সালে তিনি বদলি হয়ে ফাইতং উচ্চ বিদ্যালয়ে শরীর চর্চা শিক্ষক পদে যোগ দেন। ২০১১ সালের দিকে এমপিওভুক্ত হন এ শিক্ষক। বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হওয়ার পর বিভিন্ন কাগজপত্র যাচাই করতে গিয়ে শিক্ষক নুরুল আমিনের শিক্ষক নিবন্ধন সনদটি যার রোল নম্বর ৩১১৭০২৫৬ নিয়ে সন্দেহ হয় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির। এ কারণে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার সনদের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য এনটিআরসিএর কাছে পাঠায়। যাচাই শেষে ২০১৪ সালের ৪ এপ্রিল এনটিআরসিএর উপপরিচালক (শিক্ষা তত্ত্ব ও শিক্ষা মান) মাধব চন্দ্র রুদ্র স্বাক্ষরিত পত্রে জানিয়ে দেওয়া হয়- শরীর চর্চা পদের শিক্ষক নুরুল আমিনের নিবন্ধন সনদটি ভুয়া। এর পরিপ্রেক্ষিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশও দেয় এনটিআরসিএ। এর পরও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বরং অভিযোগটি গোপন করে ফেলে। এরপর রোল নম্বর পরিবর্তন করে আরেকটি নতুন নিবন্ধন সনদ উপস্থাপন করে।
তবে অভিযুক্ত শিক্ষক নুরুল আমিন জানান, তিনি বর্তমানে যে স্কুলে কর্মরত, সেখানে শিক্ষক নিবন্ধন সনদপত্র জমা করেননি। আর অভিযোগের বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার তদন্তে আসার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফাইতং উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন বলেন, শিক্ষক নিবন্ধন সনদ জালিয়াতির বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বুঝবে। তার কিছু করার নেই। এ বিষয়ে তিনি সহায়তা করছেন না।
বান্দরবান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুরিৎ কুমার চাকমা জানান, ফাইতং উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ জালিয়াতির অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে শিক্ষক নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।