বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর ডাকা টানা তিন দিন অবরোধের দ্বিতীয় দিনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রবেশের ছয়টি গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা।
বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকসহ, জয়বাংলা গেট, বিশমাইল গেট, মীর মশাররফ হোসেন হল গেট তালা দিয়েছে ছাত্রদল। এই চারটি ফটকই ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক সংলগ্ন।
এ ছাড়াও আমবাগান ও ইসলামনগর এলাকা সংলগ্ন গেটে তালা ঝুলিয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাঁচটি গেটই অল্প কিছুক্ষণ তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল। কিন্তু আমবাগান এলাকা সংলগ্ন গেটটি প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল। পরে গেটের তালাগুলো ভেঙে যাতায়াত ব্যবস্থার সুযোগ তৈরি করে দেন গেট সংশ্লিষ্টে থাকা নিরাপত্তারক্ষীরা।
এ বিষয়ে জাবির সহকারী প্রক্টর মওদুদ আহমেদ বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগত কাজে সকালে বের হয়েছিলাম। মীর মশাররফ হোসেন হলের গেট দিয়ে বের হওয়ার সময় দেখি গেট তালাবদ্ধ। পরে ফটকে এসে দেখি সেখানেও তালা দেয়া হয়েছে ও ছাত্রদলের ব্যানার ঝুলছে, তবে কারা তালা লাগিয়েছে আমাদের চোখে পড়েনি। আমি দ্রুত তালা ভেঙে ফেলতে বলেছি। কারণ এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলো প্রবেশ করবে, শিক্ষার্থীরা ক্লাসে আসবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার জন্যই নিরাপত্তা অফিসকে দ্রুত সবগুলো তালা ভেঙে ফেলতে বলেছি।’
তালা দেয়ার কাজ স্বীকার করে ছাত্রদল নেতা নাইমুল হাসান কৌশিক বলেন, ‘সরকার যত বেশি বাধা ও হামলা-মামলা দেবে-সরকারের ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গদের পতন ততো ভয়ংকর হবে। আমরা সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত এই রাজপথেই মোকাবিলা করব।’
‘আজকের এই কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে হুঁশিয়ার করে বলতে চাই-ক্যাম্পাসে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, ফাউ খাওয়া বন্ধ করে শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখা এবং দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে তারা তাদের বিগত দিনের অন্যায়ের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে দেশের মানুষের এই আন্দোলনে পাশে থেকে তাদের কৃতকর্মের কিছুটা প্রায়শ্চিত্ত করবে। অন্যথায় তাদের রাজপথে সমুচিত জবাব দেয়া হবে।’
ছাত্রদলের আরেক নেতা জুবায়ের আল মাহমুদ বলেন, ‘স্বৈরাচার সরকারের পতনের দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের প্রতি সমর্থন রয়েছে। তাই তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা জাবির প্রবেশ দুয়ারে তালা লাগিয়েছি।’
এ বিষয়ে জাবির ডেপুটি রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা) বলেন, ‘যেসব গেটে তালা দেয়া হয়েছিল তার সবকটি গেটের তালা ভেঙে এখন যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করা হয়েছে। যে বা যারা এই কাজ করেছে তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হয়নি। আমাদের নিরাপত্তারক্ষীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।’