শিক্ষার বাজেট ভাবনাজিডিপির কমপক্ষে ৪ শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ হোক

মাছুম বিল্লাহ |

আগামী ৯ জুন সংসদে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করা হবে। আসন্ন বাজেটের আকার স্বাভাবিক নিয়মেই বেড়ে যাওয়ার কথা। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৩৫ কোটি টাকা। এটি স্বাধীন বাংলাদেশের ৫২তম বাজেট। বর্তমান সরকারের টানা ১৪তম বাজেট। আসন্ন অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।

আমরা প্রতিবছর বাজেটের আগে শিক্ষাখাতকে সর্বোচচ গুরুত্ব দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছি, সেটি এখনও সেভাবে হয়ে উঠছে না। শিক্ষায় যদিও জিডিপি-র ৬ শতাংশ এবং জাতীয় বাজেটের ২০ শতাংশ ব্যয় করার কথা, কিন্তু আমরা জিডিপির ২ থেকে ২.৩ এর মধ্যেই ঘুরপাক খাচিছ বছরের পর বছর। আর জাতীয় বাজেটের ১২-১৩ এর মধ্যে অবস্থান করছি। 

কোভিডকালে দেশের শিক্ষার্থীরা ফরমাল পাঠ থেকে দূরে ছিল। কাজেই অবধারিতভাবে তাদের শিক্ষাদান এবং শিক্ষাগ্রহণ বিঘ্নিত হয়েছে। অনলাইনভিত্তিক শিক্ষাদানের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের কানেক্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে এতে তারা কিছুটা উপকৃত হলেও সব শিক্ষার্থী অনলাইনভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত হতে পারেনি। বিশেষ করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত থেকেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ছিল অপ্রতুল। বিষয়টি মাথায় রেখে জিডিপির কমপক্ষে ৪ শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দের দাবি জানাচিছ। 

বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় ৬৫ শতাংশের বয়স ১৫ থেকে ৬৪ বছরের মধ্যে, যেটি কাজের বয়স হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশের (ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট) জনসংখ্যাগত লভ্যাংশ ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হয়েছিল এবং ২০৫১ খ্রিষ্টাব্দে শেষ হবে। সাধারণত একটি জাতির জীবনে এই সুযোগ একবার আসে। তবে এই সুযোগ ২০৩১ খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে সংকুচিত হতে শুরু করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ছাড়া প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ তরুণ চাকরির বাজারে প্রবেশ করে। সুতরাং জনসংখ্যাগত লভ্যাংশ গ্রহণ করা এবং  উন্নয়ন তরান্বিত করতে জনগণের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে। এ বাজেটে শিক্ষিত ও অশিক্ষিত জনগোষ্ঠীর জন্য কীভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা যায়, তার পথ দেখাতে হবে। 

আমাদের শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তুলতে হলে টেকনোলজির ওপর গুরুত্ব দিতেই হবে। ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দে আমরা স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে যাবো, সেই প্রশ্নটি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। 

সবচেয়ে বড় কথা হচেছ, শিক্ষায় বরাদ্দ বাড়াতে হবে, কিন্তু খাতগুলোর উল্লেখ থাকতে হবে। কোন খাতে কত বরাদ্দ এবং কিভাবে সেটি ব্যয় করা হবে তাও উল্লেখ থাকবে। তা না হলে শুধু বরাদ্দ বাড়ালে তা অপচয় হয়। যেমন নায়েমে একটি বরাদ্দ দেওয়া আছে। হঠাৎ যদি তারা আরও বরাদ্দ পেয়ে যায় এবং নির্দেশনা থাকে যে, এই বিষয়ে এত টাকা ব্যয় করতে হবে এবং এর ফল বা আউটকাম হবে এমন, তখন তার একটি যৌক্তিকতা থাকে এবং অর্থটাও মোটামুটি ভালভাবে ব্যয় হয়। 

লেখক : মাছুম বিল্লাহ, প্রেসিডেন্ট: ইংলিশ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026810169219971