জীবিকা-সম্মানের চিন্তা শিক্ষকদের মাথায় থাকলে পাঠদান ব্যাহত হয়

মো. মনিরুজ্জামান মোড়ল |

বিশ্বের সব শিক্ষকের প্রতি রইলো বিশ্ব শিক্ষক দিবসের অভিনন্দন ও শ্রদ্ধা। ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ইউনেস্কোর স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে প্রতি বছর ৫ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী উদযাপন করা হয় বিশ্ব শিক্ষক দিবস। প্রতি বছর প্রায় ১০০টি দেশ দিবসটি উদযাপন করছে। বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজও শিক্ষকদের মূল্যায়ন ও অবদানকে স্মরণ করার জন্য পালন করেন দিবসটি। ইউনেস্কোর মতে, বিশ্ব শিক্ষক দিবস শিক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে পালন করা হয়। দিবসটি উদযাপনে এডুকেশন ইন্টারন্যাশনাল (ইআই) ও তার সহযোগী ৪০১টি সদস্য সংগঠন ভূমিকা রাখে। দিবসটি উপলক্ষে ইআই প্রতিবছর একটি প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করে, যা জনসচেতনতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষকতা পেশার অবদানকেও স্মরণ করিয়ে দেয়।

শিক্ষকরা আগামীর বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। শিক্ষকদের মানোন্নয়ন ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন হবে না। ফলে শিক্ষকের দক্ষতা উন্নয়ন, স্বাধীনতা ও সম্মানের বিষয়ে যত্নশীল হওয়ার মাধ্যমেই আগামীর স্বনির্ভর ও উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব। শিক্ষক দিবসে দেশ-বিদেশের সংগঠন শিক্ষকদের সম্মাননা ও পুরষ্কার দিয়ে থাকে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সব শিক্ষককে এর আওতায় আনা দরকার। 

আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরাসরি শিক্ষকতা পেশায় সম্পৃক্ত না থাকলেও তার যে রাজনৈতিক, পারিবারিক, সামাজিক, মূল্যবোধ  শিক্ষা বিস্তার করে জাতির চোখ, কান এমনকি বিবেককে প্রস্ফুটিত করে আলোর পথ দেখিয়েছেন। তিনি বিনির্মাণ করেছেন একটি জাতি পরিচালনার রুপরেখা।

বর্তমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নের দেশ গঠনে শক্ত হাতে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারপরও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ের অনার্স, মাস্টার্স শিক্ষকরা বেতন-ভাতা থেকে বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। একইসঙ্গে জ্যেষ্ঠতা, পদোন্নতি, টাইমস্কেল, সিলেকশন গ্রেড বিষয়ক কিছু সমস্যা রয়েছেই যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি থাকলে সমাধান হবে।

কারণ, জীবিকা ও সম্মানের চিন্তা  শিক্ষকদের মাথায় থাকলে ক্লাসে সুষ্ঠু পাঠদান ব্যাহত হয়। আর শিক্ষকদের দক্ষতা উন্নয়নে উপযুক্ত ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করলে এসডিজি অর্জনে সহায়ক হবে। ভারতের নোবেলজয়ী শিক্ষাবিদ কৈলাশ সত্যার্থী বলেছেন, শিক্ষায় ১ ডলার বিনিয়োগ করলে আগামী ২০ বছরের মধ্যে ১৫ গুণ রিটার্ন পাওয়া সম্ভব। তাই শিক্ষকদের যথাযথ আর্থিক সমস্যা দূর করা, মর্যাদা বৃদ্ধিসহ মানসিক সমস্যা দূর করে উন্নত শিক্ষক তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক উন্নয়ন ও বৃদ্ধি করতে হবে। তবেই একটি সমৃদ্ধ জাতি গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। বিশ্বের সব শিক্ষক ভালো থাকুক এই মঙ্গল কামনাই রইল।

লেখক : মো. মনিরুজ্জামান মোড়ল, সভাপতি, বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027670860290527