জেএসসি পরীক্ষার আগে মুঠোফোনে উত্তরসহ প্রশ্ন

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

নানা চেষ্টার পরও পাবলিক পরীক্ষা শুরুর আগমুহূর্তে কেন্দ্র থেকে প্রশ্নপত্র বাইরে চলে যাওয়া ঠেকানো যাচ্ছে না। মুঠোফোনের বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের হাতে হাতে পৌঁছে যাচ্ছে এসব প্রশ্ন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রশ্নের সমাধানও পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা চলাকালীনও একই অভিযোগ উঠেছে।

গত মঙ্গলবার রাজধানীর পল্লবীর মাজেদুল ইসলাম মডেল হাইস্কুল পরীক্ষা কেন্দ্রে এমনই দৃশ্য দেখা গেছে। পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিন থেকেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও মুঠোফোনে এসব প্রশ্ন পাওয়ার অভিযোগ তোলা হয়। কিন্তু কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা ছাড়াই আজ বৃহস্পতিবার নিয়মিত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শেষ হচ্ছে। আগামী শনিবার অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের চারু ও কলা পরীক্ষার মাধ্যমে শেষ হবে এই পরীক্ষা।

অভিভাবকদের অভিযোগ, এবার প্রশ্নপত্রের এমসিকিউ অংশের বেলায় এই ধরনের ঘটনা বেশি ঘটেছে। কোনো কোনো কেন্দ্রে দেখা গেছে, কিছু শিক্ষার্থী পরীক্ষার আগমুহূর্তে কিছু প্রশ্নের উত্তর খোঁজে। পরে ওই সব প্রশ্ন মূল পরীক্ষার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। জেএসসির ইংরেজি, বিজ্ঞান, গণিতসহ কয়েকটি পরীক্ষায় এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কিছু অ্যাপের (ম্যাসেঞ্জার, ভাইভার, হোয়াটসঅ্যাপ) সাহায্যে পরীক্ষার আগমুহূর্তে প্রশ্ন পাওয়া গেছে। এগুলোর সঙ্গে মূল প্রশ্নের মিল পাওয়া গেছে বলে তাঁদের অভিযোগ।

গত মঙ্গলবার মাজেদুল ইসলাম মডেল হাইস্কুল কেন্দ্রের ফটকের সামনে গিয়ে ছেলেদের জটলা চোখে পড়ে। তাদের সঙ্গে নারী অভিভাবকও ছিলেন। সবাই একটি মুঠোফোনের দিকে ঝুঁকে কী যেন দেখছেন। ছেলেদের চাপা আওয়াজ, মায়েদের ফিসফাস, ‘এক, দুই তিন, তিনটাই ‘ক’…এরপর কী?…এরপর কী? তাড়াতাড়ি বলো, আর সময় নাই।’

ওই দিন জেএসসির কৃষিশিক্ষা পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শুরুর ঘণ্টা বাজলে এক কিশোর পরীক্ষার হলে ঢুকে যেতে চাইলে তাঁর মা আটকে দেন। ছেলের হাত টেনে ধরে দাঁত কিড়মিড়িয়ে বলতে থাকলেন, ‘ভালো করে দেখ বাঁদর। গণিতেরটা দেখিসনি, আরিয়ান (ছদ্মনাম) ওটাতে ত্রিশে ত্রিশ পাবে আর তুই…।’ ছেলের উত্তর, ‘মা, পরীক্ষার ঘণ্টা পড়ছে তো।’ মা বললেন, ‘পড়ুক, ১০ মিনিট পর গেলেও অসুবিধা নাই।’

ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি  বলেন, তাঁদের কাছেও এ ধরনের অভিযোগ আসছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য গোয়েন্দা সংস্থা ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) বলা হয়েছে। ফেসবুকে যেসব লিংকের কথা বলা হয়েছে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বিটিআরসিকে অনুরোধ করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা বোর্ডের এক কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি নিয়ে তাঁরাও খুব বিব্রতকর অবস্থায় আছেন।

এর আগেও বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার সময় পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে কেন্দ্র থেকে কিছু অসাধু শিক্ষক মুঠোফোনে ছবি তুলে প্রশ্নপত্র বাইরে পাঠিয়ে দিতেন। তারপর পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে ছবিগুলো ছড়িয়ে দিতেন বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে। এ জন্য এখন পরীক্ষা কেন্দ্রে ছবি তোলা যায়, এমন মুঠোফোন (স্মার্টফোন) নেওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এরপরও প্রশ্নপত্র ফাঁস থামছে না ।

সূত্র: প্রথম আলো


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি - dainik shiksha ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ - dainik shiksha অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র - dainik shiksha ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে - dainik shiksha ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! - dainik shiksha ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল - dainik shiksha জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030128955841064