জেএসসি পরীক্ষা থাকছে না

নিজস্ব প্রতিবেদক |

JSCঅষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক স্তর উন্নীত করার পর জেএসসি পরীক্ষা আর থাকবে না। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও জেএসসি (জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট)- এ দুই পরীক্ষার বদলে নেয়া হবে শুধু সমাপনী পরীক্ষা।

 বেসরকারী শিক্ষক ও অভিভাবকের ‘আচরণবিধি’ প্রণয়নের বিধান থাকছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের আগেই সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। অনুমোদন ছাড়া বিদেশী কোনো ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না।

কোনো নামেই নোট-গাইড প্রকাশ ও বিক্রি করা যাবে না। এমনসব বিধান রেখে শিক্ষা আইন করতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার বিকালে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে এ আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে।

খসড়ায় বলা হয়েছে, দেশের ভেতরে পরিচালিত সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সরকারের কাছ থেকে পাঠ্যক্রম ও শিক্ষাক্রম অনুমোদন নিতে হবে।

বৈঠকশেষে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিক্ষানীতির বিভিন্ন বিষয় বাস্তবায়নের জন্য আইন দরকার। বিগত সাত বছর মন্ত্রণালয় পরিচালনা করতে গিয়ে যেসব অভিজ্ঞতা হয়েছে তার আলোকে এ আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আইনটির বিভিন্ন দিক নিয়ে আজকের (বৃহস্পতিবার) বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সব মতামত অন্তর্ভুক্ত করে আরেকটি খসড়া তৈরির পর জনগণের মতামতের জন্য তা আরেকবার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। এরপর আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং (আইনি মতামত) নিয়ে তা অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে।’

বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠক সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, অর্থ, সমাজকল্যাণ, মহিলা ও শিশুসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা এতে উপস্থিত ছিলেন।

সভাশেষে মন্ত্র্ণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব জানান, বৈঠকে উপস্থিত সদস্যরা আইনের বিভিন্ন দিক পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা করেন। এতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিও (শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনের সরকারি অংশ) নিয়ে কঠোর বিধানের পরামর্শ এসেছে। বলা হয়েছে, শর্তপূরণ না করা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির এমপিও কর্তন ও বন্ধের বিধান থাকতে হবে আইনে। সুনির্দিষ্ট অপরাধের কারণে এমপিও কেটে নিলেও বর্তমানে তা আদালতে টেকে না। এ কারণে আইনে এ বিষয়ে যতটা সম্ভব সুনির্দিষ্ট বিধান রাখতে হবে। সব সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে এ সংক্রান্ত ধারা অনুমোদন করা হয় বলে জানা গেছে।

শিক্ষকের কোচিং-টিউশন বাণিজ্য, যৌন হয়রানির বিষয়েও কঠোর আইনের প্রস্তাব এসেছে।

বলা হয়েছে, কেউ ফৌজদারি অপরাধ করলে তিনি আর শিক্ষক থাকবেন না, হবেন অপরাধী। এমন অপরাধীর বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনেই শাস্তির ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা থাকবে শিক্ষা আইনে। বৈঠকে উপস্থিত কয়েকজন সদস্য যৌন হয়রানির মতো ঘটনা প্রমাণিত হলে শুধু এমপিও কর্তন নয়, চাকরিচ্যুতির বিধান রাখার পরামর্শ দেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, নোট-গাইডের বিষয়ে খোদ শিক্ষামন্ত্রী আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, কোনো নামেই যাতে নোট-গাইড ছাপাতে না পারে, সে বিষয়ে কঠোর বিধান রাখতে হবে। তবে আমরা শিক্ষা সহায়ক গ্রন্থ প্রকাশের রাস্তা উন্মক্ত রাখব। কিন্তু এ ধরনের গ্রন্থ শিক্ষা সহায়ক কিনা তা চিহ্নিত করে অনুমোদন দেবে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক বোর্ড।

প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে বলা হয়েছে, এ অপরাধের শাস্তি দেয়া হবে ১৯৯২ সালের ‘পাবলিক এক্সামিনেশনস (অফেন্স) অ্যাক্ট’ অনুযায়ী। কোচিংয়ের বিরুদ্ধেও আইনে কঠোর বিধান রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও জনপ্রিয় লেখক অ্ধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বহুদিন যাবত জেএসসি ও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বাতিলের দাবী জানিয়ে আসছেন।

দৈনিকশিক্ষাডটকমের প্রধান উপদেষ্টা জাফর ইকবাল বলেন, একশ্রেণির আমলার সিদ্ধান্তে শিশুদের ওপর পরীক্ষা নামক দুটি বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।

যত তাড়াতাড়ি এ পরীক্ষা দুটি বাতিল হয় ততই মঙ্গল।

দৈনিকশিক্ষাডটকমের পাঠক আনোয়ার হোসেন আজ শুক্রবার সকালে দৈনিকশিক্ষার ফেসবুকে মন্তব্য লিখেছেন, “সিস্টেমটা ভালই খারাপ না। আমি জে এস সির প্রথম বেইজের পরিক্ষার্থী ছিলাম। বর্তমানে অর্নাস করছি। কিন্তু এ প্রযন্ত এই সার্টিফিকেট কোন কাজে লাগেনি। ভবিষ্যতেও যে লাগবে আমার মনে হয় না।” 

প্রাথমকি সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষা বাতিলের দাবীতে প্রতিদিন শত শত পাঠক মন্তব্য করছেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032920837402344