বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবী জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার আজ মৃত্যুবার্ষিকী। তার অন্যতম পরিচয় তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া বুদ্ধিজীবীদের একজন।
জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের ১০ জুলাই তৎকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের (বর্তমানের বাংলাদেশ) ময়মনসিংহ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস বরিশাল জেলার বানারীপাড়ায়। তার বাবার নাম কুমুদচন্দ্র গুহঠাকুরতা এবং তিনি পেশায় ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক।
১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজে আইএ ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে আইএ পাস করেন। এরপর তিনি ইংরেজি বিষয়ে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকে ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বিএ এবং ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।
জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা এমএ পাস করার পরপরই ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে গুরুদয়াল কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত জগন্নাথ কলেজে ইংরেজি বিভাগের লেকচারার পদে নিয়োজিত ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাবী শিক্ষক হিসেবে ফেলোশিপ নিয়ে তিনি লন্ডন যান এবং ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে লন্ডন কিংস কলেজ থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রিডার পদে উন্নীত হন।
জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর প্রাক্কালে ২৫ মার্চ রাতের গণহত্যার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যাল্যেয়র জগন্নাথ হলে আবাসিক শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। সেদিন তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর দ্বারা গুলিবিদ্ধ ও আহত হন। চারদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন থাকার পর এই দিনে পরলোকগমন করেন।