ঝুঁকিপূর্ণ স্কুল ভবনেই চলছে পাঠদান

কক্সবাজার প্রতিনিধি |

ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবনের কক্ষে প্রতিদিন চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। ফলে দিনের পর দিন বাড়ছে চরম আতঙ্ক ও প্রাণহানির শঙ্কা। যেন দেখার কেউ নেই। ওই শ্রেণিকক্ষগুলোতে ছাদ থেকে প্লাস্টার খসে পড়ার এমন করুণ দৃশ্যের দেখা মেলে কক্সবাজারের পেকুয়ার দক্ষিণ মেহেরনামা নন্দীরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। 

ছবি : সংগৃহীত

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের অবহেলিত একটি গ্রাম দক্ষিণ মেহেরনামা নন্দীরপাড়া। আর ওই গ্রামের জনগোষ্ঠীর মান উন্নয়ন ও তাদের ছেলেমেয়েদের শিক্ষা লাভের জন্য সরকার প্রতিষ্ঠা করে এ বিদ্যালয়টি। বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নে তৎকালীন সরকার ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি ৪ কক্ষবিশিষ্ট এক তলা নতুন ভবন নিমার্ণের বরাদ্দ দেয়, যা বিগত ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দের ২০ মে নতুন ভবন নির্মাণকাজের শুভ উদ্বোধন করা তৎকালীন যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমদের নামফলক দেখা যায়।

এ ভবন নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। বর্তমানে নিমিত এ ভবনের ছাদে দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাঁটল আর প্লাস্টার খসে পড়ছে নিচে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এ বিদ্যালয়ে আর কোনো ভবন না থাকায় এসব কক্ষে দুর্ঘটনার শঙ্কা নিয়েই চলছে শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান। অনেক শিক্ষার্থীই আতঙ্কে নিয়মিত ক্লাসে আসছে না এমনটাই বলছে অন্য শিক্ষার্থীরা। ফলে যেকোনো মুহূর্তে একটি বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন শঙ্কায় স্কুলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ সর্বমহল। তাদের একটাই দাবি, দ্রুত সংস্কার করে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আনা হোক। 

বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন অভিভাবক জানান, কাজের মূল ঠিকাদার ভবন নির্মাণের জন্য মালামাল এনেছিল। সিকদারপাড়ার অসাধু কিছু ব্যক্তি ওই ঠিকাদারের কাজ ভাগিয়ে নিয়ে তারা নিজেরাই অনিয়মের মাধ্যমে কাজ করে। ফলে ভবনের এ বেহাল দশা দেখা দিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষক বলেন, আমরা ক্লাস করতে যেখানে ভয় পায় সেখানে শিক্ষার্থীরা পাবে না কেনো। ভয়ে আমরা ঠিকমতো পাঠদান দিতে পারি না। এমনকি শিক্ষার্থীরাও মনোযোগ হারায়।

এ সময় কথা হয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ফরিদুল আলমের সঙ্গে তিনি জানান, আমার বিদ্যালয় ভবন নির্মাণে অনিয়ম হয়েছে। এ কারণে বৃষ্টি হলে বিদ্যালয় ভবনের ছাদ থেকে পানি পড়ে এবং ছাদ ধসে প্লাস্টার খসে পড়ছে। বিদ্যালয়ের মেঝে বড় বড় ফাঁটল দেখা দিয়েছে। এসব আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা ভয়ে নিয়মিত ক্লাস করতে চাই না। দ্রুত সংস্কারে জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সহযোগিতা কামনা করছি।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. ইব্রাহীম জানান, বিদ্যালয়ের এ করুণ অবস্থা সম্পর্কে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসকে জানানো হয়েছে। তারা বিদ্যালয় ভবন মেরামতের বরাদ্দ দেয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। কিন্তু তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ভবনটি মেরামত করলে পুরোপুরি নিরাপদ হবে না। পুরানো ভবনটি ভেঙে ফেলে সেখানে পুনরায় নতুন ভবন নির্মাণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। শ্রেণি কক্ষের অভাবে বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।

এদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের পেকুয়া উপজেলা প্রকৌশলী আসিফ মাহামুদ জানান, বিদ্যালয় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে সে বিষয়ে জানি না। বিষয়টি শিক্ষা অফিসকে জানাতে হবে। নতুন ভবনের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠাতে হবে। অনুমোদন হয়ে আসলে নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ বুশ বলেন, ওই স্কুল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে - dainik shiksha অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে দুই শব্দে অধ্যক্ষের পদত্যাগ! - dainik shiksha দুই শব্দে অধ্যক্ষের পদত্যাগ! বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে পাকিস্তান - dainik shiksha বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে পাকিস্তান বিএনপি নির্বাচিত হলে গুম প্রতিরোধে আইন করব: তারেক - dainik shiksha বিএনপি নির্বাচিত হলে গুম প্রতিরোধে আইন করব: তারেক ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ইসহাক আলীর মৃত্যু শ্বাসরোধে: মেঘালয় পুলিশ - dainik shiksha ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ইসহাক আলীর মৃত্যু শ্বাসরোধে: মেঘালয় পুলিশ ঢাবিতে যোগ দিলেন চাকরিচ্যুত অধ্যাপক ড. সাইফুল - dainik shiksha ঢাবিতে যোগ দিলেন চাকরিচ্যুত অধ্যাপক ড. সাইফুল কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0083489418029785