ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীরা পার হচ্ছে মহাসড়ক

ডুমুরিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি |

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে‌ই প্রতিনিয়ত মহাসড়ক পার হচ্ছে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী। এমন দৃশ্য খুলনার ডুমুরিয়া টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের। নিয়ন্ত্রণহীন সড়কটিতে বেপরোয়া গাড়ি চলাচল, উচ্চস্বরে হর্ণ বাজানো, ফিটনেসবিহীন এবং অদক্ষ চালক দ্বারা গাড়ি চালানোর ফলে প্রতিনিয়ত কোন না কোন জায়গায় ঘটছে দুর্ঘটনা।  শিক্ষার্থীদের কিছুটা নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিষ্ঠানের সামনে গতিরোধক, সতর্কতামূলক চিহ্ন ও জেব্রা ক্রসিং স্থাপনের দাবিতে সওজ বিভাগে লিখিত আবেদন করেছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।   

জানা যায়, ডুমুরিয়া টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজটি খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের পাশে গুটুদিয়া মৌজায় অবস্থিত। কারিগরি শিক্ষার হার বৃদ্ধির লক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের আওতায় ১০০টি উপজেলায় ১টি করে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন প্রকল্পের মাধ্যমে এ প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করা হয়। ২০২১ শিক্ষাবর্ষ হতে ৬ষ্ঠ ও ৯ম শ্রেণিতে ভর্তির মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। এ বছর ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম ও ৯ম শ্রেণিতে প্রায় ৫০০ জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয়েছে। আগামী ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন মডিউল ভিত্তিক শর্ট কোর্স চালু হবে। এটা হলে শিক্ষার্থীর আসন সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে ৯৬০ জনে। নিয়ন্ত্রণহীন সড়কে প্রতিদিন কোন না কোন এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটছে। অকালে প্রাণ ঝরছে অসংখ্য মানুষের। সবমিলে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কটি মৃত্যুপুরিতে পরিণত হয়েছে। 

গত ১ জুন সকাল ৮টার দিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অর্ধ কিলোমিটার দুরে গুটুদিয়াস্থ একটি ফিড মিলের সামনে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে ৫জন নিহত হন। ওইদিন কমলমতি শিক্ষার্থীরা সেই দৃশ্য দেখে ভীতসন্ত্রস্থ হয়ে পড়ে। চালকের অসাবধানতা, অদক্ষতা, যানবাহনের যান্ত্রিক ত্রুটি, অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বহন, ফুটপাত দখল, রাস্তার পাশে বাঁশের হাট, খোয়া-বালু বিক্রিসহ নানাবিধ কারণেই মূলত সড়ক দুর্ঘটনার কারণ। 

বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র সজীব মোলঙ্গী ও ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী কাজল আক্তার তিথি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, সকাল ৮ থেকে দুপুর দেড় ১টা পর্যন্ত তাদের ক্লাস চলে। মূলত ক্লাস শুরু ও শেষ সময় টায় স্কুল গেটের সামনে শিক্ষার্থীর ভিড় হয়। দ্রুত গতি নিয়ে যেভাবে হেলেদুলে গাড়ি চলে তাতে ভীত শিক্ষার্থীরা। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে এভাবে সড়কটি পারাপার হচ্ছে তারা।

স্কুল ছুটির আগে গেটের সামনে অপেক্ষা করছিলেন গুটুদিয়া গ্রামের বুদেব গোলদার নামের একজন অভিভাবক। সে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্র তর্কন গোলদারের বাবা। তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মহাসড়কে গাড়ির যে চাপ হয়েছে আমাদের পার হওয়াটাও কঠিন। বিদ্যালয়ের সামনে গাড়িগুলো ধীরগতিতে চালালে কিছুটা ঝুঁকি কমতো।

ডুমুরিয়া সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী আব্দুস ছালাম মিয়া দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কটি অত্যন্ত ব্যস্ততম সড়ক। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিশুরা মহাসড়ক পার হয়ে বিদ্যালয় আসছে। নিয়ন্ত্রণহীন এ সড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। ফলে জরুরিভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের স্বার্থে সড়কে গতিরোধক, সতর্কতামূক চিহ্ন ও জেব্রা ক্রসিং স্থাপনের দাবি জানানো হয়েছে।    

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগ খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনিসুজ্জামান মাসুদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মহাসড়কে গতিরোধক দেয়ার কোন নিয়ম নেই। তবে ডুমুরিয়া সরকারি টেকনিক্যাল স্কুলের সামনে সড়কে ধীর গতিতে গাড়ি চালানোর জন্য সচেতনতামুলক সাইনবোর্ডসহ জেব্রা ক্রসিং দেয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে - dainik shiksha কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা - dainik shiksha ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন - dainik shiksha সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল - dainik shiksha ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে - dainik shiksha নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036349296569824