ট্রেনের কেবিনে ছাত্রীর সাথে আটক হওয়া সেই অধ্যক্ষ কারাগারে

জামালপুর প্রতিনিধি |

কলেজের টাকা আত্মসাতের মামলায় জামালপুরের ইসলামপুর জে জে কে এম গার্লস হাইস্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আব্দুছ ছালাম চৌধুরীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কলেজের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিনে ছিলেন তিনি। আগাম জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) জামালপুর জেলা দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পন করতে গেলে বিজ্ঞ বিচারক তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

অধ্যক্ষ মো. আব্দুছ ছালাম চৌধুরী ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ২ ফেব্রুয়ারি আন্তঃনগর তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি সিঙ্গেল কেবিনে সাবেক এক ছাত্রীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ অবস্থায় রেলওয়ে পুলিশের কাছে আটক হন। পরে তাকে দেওয়ানগঞ্জ রেলওয়ে থানায় নেয়া হয়। পরবর্তীতে পুলিশ তাকে জামালপুর রেলওয়ে পুলিশ থানায় সোপর্দ করে। এ ঘটনায় সেখানে জিডি হয়েছে। 

জানা গেছে, গত ১৩ আগস্ট অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে জামালপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইসলামপুর কোর্টে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আদালত পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অধ্যক্ষ মো. আব্দুছ ছালাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির করা হয়েছিল। 

কলেজের শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ট্রেনের কেবিনে ছাত্রীর সাথে অধ্যক্ষ ধরা খাওয়ার পর স্থানীয়দের মাঝে তোলপাড় শুরু হয়। পরে, আত্মগোপনে থাকেন অধ্যক্ষ। প্রতিষ্ঠানে আসা বন্ধ করে দেন। তার অনুপস্থিতিতে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি ভোকেশোনাল পরীক্ষার কেন্দ্রের সচিবের পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। পরে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সে দায়িত্ব পালন করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার নারী কেলেঙ্কারীর বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন বলেও জানান শিক্ষকরা।

আরও পড়ুন : ট্রেনের কেবিনে ছাত্রীসহ অধ্যক্ষ আটক

শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও জানান, গত ২২ জুন গভর্নিং বডির অ্যাডহক কমিটির অধ্যক্ষ মো. আব্দুছ ছালাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে কলেজের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত শুরু করে। তদন্তে গঠিত কমিটির প্রধান করা হয় ইসলামপুর এম এ সামাদ পারভেজ মেমোরিয়াল মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ জামাল আব্দুল নাছের চৌধুরী চার্লেসকে। কমিটি তদন্তে অধ্যক্ষ মো. আব্দুছ ছালামের বিরুদ্ধে ২৯ লাখ ২০ হাজার টাকার আত্মাসাতের প্রমাণ পেয়েছে বলে জানান শিক্ষকরা। 

টাকা তছরুপ ও আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির অ্যাডহক কমিটির সদস্য ও সিনিয়র শিক্ষক মো. শামছুল আলম বাদী হয়ে গত ১৩ আগস্ট  অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে জামালপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। আমলি আদালত জামালপুর পিবিআইকে তা তদন্তের দায়িত্ব দেন। পিবিআই অভিযোগ তদন্ত করে গত ২৫ অক্টোবর আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে অধ্যক্ষ মো. আব্দুছ ছালামের বিরুদ্ধে ২৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে বলে জানায় পিবিআই। পরে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, নারী কেলেংকারী, অধ্যক্ষ আব্দুছ ছালাম চৌধুরী তার অপকর্ম ধামাচাপা দিতে শিক্ষকদের বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছিলেন অধ্যক্ষ। শিক্ষকদের হয়রানি করতে মিথ্যা মামলাও দায়ের করছেন। অধ্যক্ষ মো. আব্দুছ ছালাম চৌধুরীকে অধ্যক্ষকে অবিলম্বে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করে ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002964973449707