টাকা নিয়েও ছাত্রীর ফরম পূরণ করেননি প্রধান শিক্ষক

নওগাঁ প্রতিনিধি |

নওগাঁর ধামইরহাটের ভাতকুন্ডু খাতেমন নেসা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে জহুরা জাবিন নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ফরম পূরণ ও অনুসাঙ্গিক ফি বাবদ ৮ হাজার টাকার নিয়ে তার ফরম পূরণ না করানোর অভিযোগ উঠেছে। ওই ছাত্রী স্কুলের নির্বাচনী পরীক্ষায় আট বিষয়ে ফেল করেছিলেন। কিন্তু তাকে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়ার আশ্বাস দিয়ে প্রধান শিক্ষক ফরম পূরণ ও অতিরিক্ত ক্লাসের ফি বাবাদ ৮ হাজার ৭০০ টাকা নিয়েছেন বলে জানিয়েছে ছাত্রীর পরিবার। কিন্তু ফি নিয়েও ফরম পূরণ না করানোয় ওই ছাত্রী চলমান এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। 

সম্প্রতি ওই ছাত্রীর বড় ভাই বিষয়টি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের দাবি, ওই ছাত্রীর কাছ থেকে কোনো টাকা নেয়া হয়নি, টেস্টে আট বিষয়ে ফেল করায় তার ফরম পূরণ করা হয়নি। যদিও বিষয়টি তদন্ত করে ছাত্রীর কাছ থেকে ফিয়ের টাকা নেয়ার সত্যতা পেয়েছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জহুরা জাবিন ভাতকুণ্ডু কেএন উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী। গত ২৭ এপ্রিল সে স্কুলে এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র নেয়ার জন্য যায়। তখন প্রধান শিক্ষক জহুরাকে প্রবেশপত্র না দিয়ে জানান, বোর্ড থেকে তার অ্যাডমিট কার্ড আসেনি। পরে ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে প্রবেশপত্র নেয়ার জন্য গেলে প্রধান শিক্ষক তাদের সঙ্গে দেখা করেনি। তারা প্রধান শিক্ষকের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সাড়া দেননি তিনি। অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, প্রধান শিক্ষক ফরম পূরণ, কোচিং ও বিদায় অনুষ্ঠানের জন্য সর্বমোট ৮ হাজার ৭০০ টাকা নিয়েছেন। কিন্তু ফরম পূরণ না করানোয় জহুরা জাবিন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি।

ওই ছাত্রীর বড় ভাই মো. আবু সাঈদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলামের ইচ্ছাকৃত অবহেলার কারণে আমার ছোট বোন পরীক্ষা দিতে পারেনি। তিনি আমাদের কাছে থেকে ফরম পূরণ, কোচিং ক্লাস ও বিদায় অনুষ্ঠান বাবদ টাকা নিয়েছেন। কিন্তু ফরম পূরণ করেননি। আমি প্রধান শিক্ষকের শাস্তি চাই। 

জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ওই শিক্ষার্থী নির্বাচনী পরীক্ষায় আটটি বিষয়ে ফেল করে। তার লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমি অতিরিক্ত ক্লাসে আসার অনুমতি দিয়েছিলাম। তার কাছে থেকে কোনো টাকা আমি নেয়া হয়নি। ওই ছাত্রীর পরিবার তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক।

জানা গেছে, ছাত্রীর ভাইয়ের করা অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জুলফিকার আলী। গত মঙ্গলবার করা অভিযোগের বিষয়ে গতকাল বুধবার তিনি তদন্ত করেছেন। 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জুলফিকার আলী শাহ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, উপজেলা নিবার্হী অফিসারকে দেয়া অভিযোগটির তদন্তভার আমার উপর আসে। আমি বুধবার সরেজমিনে তদন্ত করেছি। দেখা গেছে, ওই ছাত্রী প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত শিক্ষার্থী ছিলেন। সে প্রধান শিক্ষককে ফরম পূরণ, অতিরিক্ত ক্লাস ও দোয়া অনুষ্ঠানের টাকা দিয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। ওই শিক্ষার্থী চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র না পাওয়ায় পরীক্ষা দিতে পারেনি। এ বিষয়ে খুব শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
জোর করে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের পদত্যাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা হুঁশিয়ারি - dainik shiksha জোর করে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের পদত্যাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা হুঁশিয়ারি রাজনীতি করি না, ভবিষ্যতেও করবো না: ঢাবির নতুন ভিসি - dainik shiksha রাজনীতি করি না, ভবিষ্যতেও করবো না: ঢাবির নতুন ভিসি চার তারিখের মধ্যে মাদরাসা শিক্ষকদের এমপিওর আবেদন - dainik shiksha চার তারিখের মধ্যে মাদরাসা শিক্ষকদের এমপিওর আবেদন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক আমানুল্লাহ - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক আমানুল্লাহ দীপু-টিপু-রতন সিন্ডিকেটের ঘুষের সাম্রাজ্য - dainik shiksha দীপু-টিপু-রতন সিন্ডিকেটের ঘুষের সাম্রাজ্য এনসিটিবির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি বৈষম্যবিরোধীদের - dainik shiksha এনসিটিবির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি বৈষম্যবিরোধীদের কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0053110122680664