টিকাদানে জটিলতা কাকলি হাইস্কুলে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

কারিগরি ত্রুটি ও প্রশিক্ষণে ঘাটতির কারণে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকাদানে জটিলতায় পড়ে রাজধানীর ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডের কাকলি হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ। আজ বুধবার সকাল নয়টায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে টিকাদান শুরুর পর এ জটিলতা দেখা দেয়। এ কারণে টিকাদানে ধীরগতি সৃষ্টি হয়। এতে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সমস্যার সমাধান হয়।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীরা জানায়, স্কাউটের সদস্যরা এই কেন্দ্রে কারিগরি সহায়তা (টেকনিক্যাল সাপোর্ট) দিচ্ছেন। তাঁরা মুঠোফোনে কাজ করছেন। কিন্তু তাঁরা শুরুতে টিকা কার্ড স্ক্যান করে তথ্য যাচাই করতে পারছিলেন না। তাই শিক্ষার্থীরা টিকাদান কক্ষে যেতে পারছিল না।

যে কক্ষে শিক্ষার্থীদের টিকা কার্ড স্ক্যান করা হচ্ছে, সেখানে ভিড় দেখা গেছে। তবে টিকাদানের বুথগুলো ফাঁকা থাকতে দেখা যায়।

সরেজমিন দেখা যায়, জটিলতার কারণে সকাল ৯টা থেকে ১০ পর্যন্ত ১৯ নম্বর বুথে মাত্র ৬ জন ও ১৮ নম্বর বুথে মাত্র ৭ জনকে টিকা দেওয়া হয়।

অন্যান্য বুথেও টিকাদানের ধীরগতি দেখা যায়। একই সময়ে ২০ নম্বর বুথে ১৩ জন, ২১ নম্বরে ১৮, ২২ নম্বরে ২০ ও ১২ নম্বর বুথে ২৪ জনকে টিকা দেওয়া হয়।

স্কাউটের সদস্যরা দীর্ঘক্ষণ স্ক্যান করতে ব্যর্থ হওয়ায় এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৫০২ নম্বর কক্ষে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। তাদের একজন ঢাকা সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী নকিবুল ইসলাম। সে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে, স্ক্যান করার জন্য স্কাউটের সদস্যরা অনেকক্ষণ ধরে চেষ্টা করেন। কিন্তু পারছিলেন না। তাঁদের কারিগরি জ্ঞানে ঘাটতি লক্ষণীয়।

স্কাউট সদস্য মো. তহিদুল ইসলাম বলেন, তাঁরা এখানে আইটি সাপোর্ট দিচ্ছেন। গতকাল এখানে যাঁরা কাজ করেছেন, আজ তাঁদের অধিকাংশই নেই। নতুন যাঁরা এসেছেন, তাঁদের আইটি প্রশিক্ষণ নেই। তাই এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। 

টিকা দেওয়া শেষে ঢাকা সিটি কলেজের সজিবুর রহমান ও মো. জিহাদ জানান, স্ক্যান করতে দেরি হয়েছে। তবে টিকা দিতে দেরি হয়নি। 

শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে দেরি হওয়ায় বাইরে অভিভাবকদের ভিড় লেগে যায়। টিকা দিয়ে মেয়ের বের হওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন মিরপুর-১ নম্বরের বাসিন্দা মোর্শেদ নেওয়াজ। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে ঢাকা সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ে। মেয়ে টিকা দিতে দেড় ঘণ্টা আগে স্কুলের ভেতর গেছে। এখনো টিকা দিয়ে বের হয়নি।’ 

কাকলি হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রভাষক তরিকুল ইসলাম বলেন, সার্ভারে জটিলতার কারণে স্ক্যান হচ্ছিল না। সে জন্য স্ক্যানের মাধ্যমে টিকার তথ্য যাচাইসহ অন্যান্য টেকনিক্যাল কাজ করতে দেরি হচ্ছিল। এখন ঠিক হয়ে গেছে। 

কাকলি হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ দীন মোহাম্মদ খান বলেন, ‘টেকনিক্যাল সাপোর্টের জন্য গতকাল মঙ্গলবার স্কাউটের যেসব ছেলেমেয়েকে আমাদের দেওয়া হয়েছিল, তাদের আজ দেওয়া হয়নি। আজকের স্কাউটের যেসব নতুন ছেলে এসেছে, তারা এ কাজে এক্সপার্ট না। পরে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এখন তারা কাজ করতে পারছে।’ 

আজ এই স্কুল অ্যান্ড কলেজে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির দুই হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়ার কথা রয়েছে। সকাল নয়টা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত টিকা দেওয়া হবে। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মোট ১০টি বুথে টিকা দেওয়া হচ্ছে। 

গতকালও এখানে দুই হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ১ হাজার ৪৪৩ জনকে টিকা দেওয়া হয়। এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অধ্যক্ষ দীন মোহাম্মদ খান বলেন, ‘গতকাল একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দেরি করে এসেছিল। টিকার কার্যকারিতা বিবেচনায় তাদের আর টিকা দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া গতকালও কিছু জটিলতার কারণে এক ঘণ্টা দেরিতে এখানে টিকা দেওয়া শুরু হয়েছিল। এ কারণে লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব হয়নি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা - dainik shiksha চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? - dainik shiksha স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার - dainik shiksha কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002636194229126