টিকা না দিয়ে সাত কলেজে পরীক্ষার সিদ্ধান্তে ঝুঁকি দেখছেন বিশেষজ্ঞরা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সশরীরে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে এ পরীক্ষা শুরু হবে।

গত ১৮ আগস্ট সাত কলেজের প্রধান সমন্বয়কারী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সঙ্গে এসব কলেজের অধ্যক্ষের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

সশরীরে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত হলেও এখনও করোনাভাইরাসের টিকা পাননি অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা। যদিও কলেজ প্রশাসন বলছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পরীক্ষা নেওয়া হবে। তবে পরীক্ষার হলে স্বাস্থ্যবিধি মানলেও আবাসিক হল বন্ধ থাকায় বাইরে থেকে শিক্ষার্থীরা নিজেদের কতটুকু সুরক্ষা রাখতে পারবে এটিই এখন বড় প্রশ্ন।

এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্যবিদ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ) ও জাতীয় টিকা পরামর্শক কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, এটা এক ধরনের অব্যবস্থাপনা, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার যে পরিকল্পনা প্রয়োজন সেটিও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান না। বারবার শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা শুনি। কিন্তু আমাদের যদি স্বপ্লমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি বা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থাকত তাহলে আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারতাম।

সাত কলেজের এসব শিক্ষার্থীর টিকার তালিকা থেকে বাদ পড়ার কোনো যুক্তি নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব শিক্ষার্থীর টিকা আরও আগেই দিয়ে দিতে পারতাম। সরকার যেহেতু শিক্ষার্থীদের টিকা দিচ্ছে এ প্রতিষ্ঠানগুলো কেন বাদ যাবে। বাদ যাওয়ার কোনো যুক্তি নেই। এর মানে হলো ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত দুর্বল। এটা অপরিকল্পিত একটা সিদ্ধান্ত।

মজুত কম থাকায় টিকা নিশ্চিত করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে গেলে দুই বছরেও তা সম্ভব নয় বলে মনে করেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মো. মুশতাক হোসেন।

তিনি বলেন, এতো শিক্ষার্থীর জন্য টিকা এখন নেই। তাহলে কি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। খুলতে হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। খুলতে হলে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। এ জন্য শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

টিকা একটি চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ করে ডা. মো. মুশতাক হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে সেখানে অস্থায়ী বুথ করে টিকাদান কর্মসূচি চালানো যেতে পারে।

স্বাস্থ্যবিধি না মানলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলন জাতীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই-মাহবুব।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। যদি সম্ভব হয় শিক্ষার্থীদের অ্যান্টিজেন টেস্ট করানো যেতে পারে। এতে যাদের করোনা পজিটিভ আসবে তাদের জন্য ভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

জানতে চাইলে সাত কলেজের সমন্বয়ক (ফোকাল পয়েন্ট) ও ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, শিক্ষার্থীরা টিকার কথা বলে, আবার পরীক্ষার কথাও বলে। আমরা কোনটা করবো? শিক্ষার্থীরা টিকা পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাইছে না। তারা চাকরির বাজারে প্রবেশ করতে পারছে না, মানসিক হতাশায় ভুগছে। এজন্য আমরা পরীক্ষা নিয়ে নিচ্ছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেওয়া হবে। তবে শিক্ষার্থীদের টিকা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত হল ও কলেজ খুলবে না বলে জানান তিনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা - dainik shiksha লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037631988525391