টিফিনের সময় স্কুল থেকে বের হতে পারবেন না পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষকরা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

টিফিনের সময় স্কুল থেকে বেরোতে পারবেন না শিক্ষক বা স্কুলের কোনও শিক্ষাকর্মী। গতকাল সোমবার এই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।

নির্দেশিকায় বলা হয়েছে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য টিফিনের যে সময় বরাদ্দ রয়েছে, সেই সময় কোনও শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মী স্কুলের বাইরে যেতে পারবেন না। দুপুর দেড়টা থেকে দুটো পর্যন্ত সময়ে তাদের স্কুল চত্বরেই থাকতে হবে। যদি কোনও শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মী সেই নির্দেশ অমান্য করেন তবে তাকে অনুপস্থিত বলে ধরা হবে। এর আগে গত শনিবার রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য এই একই নিয়মের কথা বলেছিল নবান্ন। সে ক্ষেত্রে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে সরকারের এমন সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছিল। এ ক্ষেত্রেও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ডেপুটি সেক্রেটারি (অ্যাকাডেমিক) ঋতব্রত চট্টোপাধ্যায়ের জারি করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে নবান্নের বিজ্ঞপ্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

সেই নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে স্কুল চলাকালীন একান্তই যদি কোনও স্কুলশিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীকে বেরোতে হয় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই স্কুলের প্রধানশিক্ষক বা দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকের অনুমতি নিতে হবে। যদি কোনও শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মী নতুন এই নিয়ম না মানেন তবে সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধানশিক্ষক বা জেলা স্কুল পরিদর্শককে এই সংক্রান্ত বিষয়ে রিপোর্ট দিতে হবে শিক্ষা দফতরকে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এমন ঘোষণার তীব্র সমালোচনা করেছে বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ। তাদের কথায়, এই নিয়ম চালু করার আগে রাজ্য সরকার স্কুলগুলিতে পর্যাপ্ত শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী নিয়োগ করুক। তা হলে স্কুলে পড়াশোনার প্রকৃত পরিবেশ তৈরি হবে, ফিরে আসবে শৃঙ্খলা। তারপর শিক্ষকদের শৃঙ্খলার পাঠ দিক রাজ্য সরকার।

বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘কোনও শিক্ষক খাওয়াদাওয়া করতে বাইরে যেতেই পারেন। আর একটি নির্দিষ্ট সময় রাজ্যের সব স্কুলে টিফিনের বিরতি দেয়া হয় না। এমনিতে প্রধান শিক্ষকদের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। নতুন করে তাদের হাতে এই ক্ষমতা দেয়ায় তারা সেই ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারেন।’ তাদের মতে, মহার্ঘ ভাতার দাবিতে শিক্ষকরা যাতে টিফিনের সময় বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শামিল না হতে পারেন, সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।

পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কার্যকরী সভাপতি বিজন সরকার বলেন, ‘মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এই নির্দেশিকাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। স্কুলের নিয়মনুবর্তিতা রক্ষার স্বার্থেই এমনটা করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি। স্কুলের কাজের সময়ে স্কুলে থাকতে বলা হচ্ছে, এতে বিরোধী সংগঠনের ‘গেল গেল’ রব তোলার কোনও কারণ দেখছি না। শিক্ষকতা করতে এসে পেশার প্রতি দায়বদ্ধতা না দেখিয়ে বেতন বৃদ্ধি নিয়ে আন্দোলন করব, তা শিক্ষকদের জন্য সমীচীন নয়।’

তার আরও বক্তব্য, ‘প্রধানশিক্ষকের সঙ্গে ভাল সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে কোনও কোনও স্কুলশিক্ষক টিফিনের সময় বেরিয়ে ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন করছেন। আবার কোনও শিক্ষককে প্রধানশিক্ষকের পছন্দ না থাকলে তাকে প্রয়োজনীয় কাজের জন্য ছাড়া হয় না। এমন সব ঘটনাও প্রায়শই ঘটে। এমন ঘটনার প্রবণতা রুখতেই পর্ষদ ওই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।’ গরমের ছুটি শেষ হলেই এই নিয়ম কার্যকর হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।

সূত্র : আনন্দবাজার


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সরকার পরিচালনায় ভুলত্রুটি থাকলে ধরিয়ে দিন, সম্পাদকদের ড. ইউনূস - dainik shiksha সরকার পরিচালনায় ভুলত্রুটি থাকলে ধরিয়ে দিন, সম্পাদকদের ড. ইউনূস এইচএসসি ফল তৈরি: পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়েছে বোর্ড - dainik shiksha এইচএসসি ফল তৈরি: পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়েছে বোর্ড শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য ও হেনস্তা নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য ও হেনস্তা নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের আগস্ট মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের আগস্ট মাসের এমপিওর চেক ছাড় এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ডিজি হলেন - dainik shiksha এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ডিজি হলেন ছাত্রী হয়রানির অভিযোগ, উত্তরা ইউনিভার্সিটি উত্তপ্ত - dainik shiksha ছাত্রী হয়রানির অভিযোগ, উত্তরা ইউনিভার্সিটি উত্তপ্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের হাত ভাঙলেন বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক - dainik shiksha ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের হাত ভাঙলেন বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক সাংবাদিক নিপীড়নের আইনগুলো এখনই বাদ দেয়ার প্রস্তাব - dainik shiksha সাংবাদিক নিপীড়নের আইনগুলো এখনই বাদ দেয়ার প্রস্তাব মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার চলতি দায়িত্ব দিতে আবেদন আহ্বান - dainik shiksha মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার চলতি দায়িত্ব দিতে আবেদন আহ্বান শিরীন শারমিনের পদত্যাগে স্পিকার পদে কি শূন্যতা তৈরি হলো - dainik shiksha শিরীন শারমিনের পদত্যাগে স্পিকার পদে কি শূন্যতা তৈরি হলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0047760009765625