ট্রেনিংয়ে গিয়ে নারী সহকর্মীর সঙ্গে ফুর্তি সহকারী কন্ট্রোলারের

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

কোরিয়ায় গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে যোগ দেওয়ার কথা ছিল ১৫৭ চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর। তবে দেশে ফিরে ৭২ জন যোগ দিলেও বাকি ৮৫ জন যোগই দেননি।তাদের কেউ মোটা টাকা ভাতা পাওয়ার আশায় তদবির করে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও একজন সহকারী কন্ট্রোলার নারী সহকর্মীর সঙ্গে ফুর্তি ও আরেকজন সহকারী পরিচালক দোকানে চুরি করে ধরা পড়েন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন একটি জাতীয় দৈনিককে বলেছেন, প্রয়োজন ছাড়াই অনেকে প্রশিক্ষণ নিতে কোরিয়ায় যান। একজন সহকারী কন্ট্রোলার তো হোটেলের বাইরে গিয়ে নারী সহকর্মীর সঙ্গে ‘ফুর্তি’ করার সময় ধরা পড়েন। বিষয়টি ই-মেইলে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। এজন্য তদন্ত কমিটিও হয়। সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের আরেকজন সহকারী পরিচালক কসমেটিকসের দোকানে চুরি করে ধরা পড়েন। তিনি দুবার চুরি করে পার পেলেও তৃতীয়বার ধরা পড়ে যান। তাকে কোরিয়ান পুলিশ গ্রেপ্তার করে। বিষয়টি ই-মেইলে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষকে জানালে তাকে সাসপেন্ড করা হয়। পরে সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ তার চাকরি ফিরিয়ে দেন।

জানা গেছে, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে যোগ দেওয়ার শর্তে বিএসএমএমইউর ১৫৭ চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ২ থেকে ৪ মাসের প্রশিক্ষণে দক্ষিণ কোরিয়ায় যান। বিএসএমএমইউর তথ্য অনুযায়ী, কোরিয়ায় প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিলেন ১৫৭ জন। ৫২ চিকিৎসক, ২৯ কর্মকর্তা, ৫৩ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স ও ২৩ জন টেকনিশিয়ান। প্রশিক্ষণ শেষে ৬ চিকিৎসক, ৫ কর্মকর্তা, ৫০ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স ও ১১ জন টেকনিশিয়ানসহ ৭২ জন যোগ দিয়েছেন। ৮৫ জন যোগ দেননি।

বিএসএমএমইউর তথ্যমতে, ২০২১-২২ খ্রিষ্টাব্দে পাঁচটি গ্রুপে বিএসএমএমইউর বিভিন্ন বিভাগের ৫২ জন চিকিৎসক দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রশিক্ষণ নিতে যান। তারা ২ থেকে ৪ মাস প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তাদের প্রত্যেককে দৈনিক ৭৫ ডলার প্রশিক্ষণ ভাতা দেওয়া হয়। এ হিসাবে যারা ২ মাস প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তারা একেকজন সাড়ে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা আর যারা ৪ মাস ছিলেন তারা ৯ থেকে ১০ লাখ টাকা পেয়েছেন। তাদের যাতায়াত, হোটেল ভাড়া, খাওয়া প্রভৃতি খরচ মিলিয়ে আরও কয়েক লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে মাত্র ৬ জন চিকিৎসক সুপার স্পেশালাইজড যোগ দিয়েছেন, অবশিষ্ট ৪৬ জন চিকিৎসক যোগ দেননি।

বিএসএমএমইউর তথ্য অনুযায়ী, কোরিয়ায় প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিলেন ১৫৭ জন। ৫২ চিকিৎসক, ২৯ কর্মকর্তা, ৫৩ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স ও ২৩ জন টেকনিশিয়ান। প্রশিক্ষণ শেষে ৬ চিকিৎসক, ৫ কর্মকর্তা, ৫০ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স ও ১১ জন টেকনিশিয়ানসহ ৭২ জন যোগ দিয়েছেন। ৮৫ জন যোগ দেননি। তাদের কেউ বিদেশ ভ্রমণ হিসেবে, কেউ মোটা টাকা ভাতা পাওয়ার আশায় তদবির করে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

প্রক্টর অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল বলেন, সুপার স্পেশালাইজড প্রকল্পের শর্তের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রশিক্ষণের বিষয়টি ছিল। প্রকল্পের টাকায় তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে প্রশিক্ষণে কিছু অপ্রয়োজনীয় লোকও অংশ নিয়েছে। যাদের প্রশিক্ষণ কোনো কাজে আসছে না।

২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের উদ্বোধন করেন। এর ২ মাস পর ২৭ ডিসেম্বর দেশের প্রথম সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের আউটডোরে রোগীদের সেবা দেওয়া শুরু হয়। প্রতিদিন কয়েক হাজার রোগী হাসপাতালের আউটডোরে সেবা নিয়ে থাকে। এই বছরের জানুয়ারি মাস থেকে হাসপাতালের ইনডোর চিকিৎসাসেবা চালু করার কথা থাকলেও তা করা সম্ভব হয়নি। দক্ষ জনবল নিয়োগ না দেওয়া, অর্গানোগ্রাম না হওয়া, মেডিক্যাল অফিসার নিয়োগে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে হাসপাতালটি চালু করা সম্ভব হয়নি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পদত্যাগের জন্য বল প্রয়োগ করা যাবে না: শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পদত্যাগের জন্য বল প্রয়োগ করা যাবে না: শিক্ষা উপদেষ্টা শূন্যপদে বদলির দাবিতে শিক্ষকদের লংমার্চ - dainik shiksha শূন্যপদে বদলির দাবিতে শিক্ষকদের লংমার্চ শিক্ষকতা ছেড়ে আওয়ামী লীগে, সম্পদের পাহাড় গড়েন বাবুল - dainik shiksha শিক্ষকতা ছেড়ে আওয়ামী লীগে, সম্পদের পাহাড় গড়েন বাবুল শিক্ষাঙ্গনের ভদ্রতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষাঙ্গনের ভদ্রতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা জাতীয়করণের দাবিতে সপ্তম দিনের অবস্থান ধর্মঘটে ইবতেদায়ি শিক্ষকরা - dainik shiksha জাতীয়করণের দাবিতে সপ্তম দিনের অবস্থান ধর্মঘটে ইবতেদায়ি শিক্ষকরা খেয়াল রাখতে হবে শিক্ষার্থীরা এখনো ট্রমার মধ্যে - dainik shiksha খেয়াল রাখতে হবে শিক্ষার্থীরা এখনো ট্রমার মধ্যে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের - dainik shiksha গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0048539638519287