নীলফামারীর ডোমারে চিলাহাটী স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী রুপসা ট্রেনের সঙ্গে মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে মিতালী ট্রেনের চালক ও রুপসা ট্রেনের চালকসহ ৩০ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। বুধবার সকাল পৌনে নয়টায় চিলাহাটী রেল স্টেশনের আউটারের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে চিলাহাটির সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ। ট্রেন সংঘর্ষের ঘটনায় চিলাহাটি স্টেশন মাস্টার টুটুল চন্দ্র সরকারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
রুপসা ট্রেনের অ্যাটেনটেন্স গার্ড আল আমিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, চিলাহাটি স্টেশন থেকে ক্লিয়ারেন্স পেয়ে খুলনার উদ্দেশে রুপসা ট্রেনের যাত্রা শুরু হয়। স্টেশন থেকে ১ নম্বর আপ পয়েন্ট হোম সিগন্যাল এলাকায় মিতালির লোকোর সঙ্গে রুপসা এক্সপ্রেসের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে চিলাহাটী রেল স্টেশন থেকে খুলনাগামী রুপসা ট্রেনটি (৬৫২৬) আধ-কিলোমিটার যাওয়ার পর ১ নং হোম সিগন্যালে লাইন্স ক্লিয়ারের জন্য দাড়িয়ে থাকা মিতালী এক্সপ্রেসের লোকোমেটিভের (৬৫২১) সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটে।
স্থানীয়রা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিকট শব্দ হলে ভয়ে আমরা বাড়ির বাইরে বেরিয়ে দেখতে পাই দুই ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। রুপসা ট্রেনের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেলেও মিতালি ট্রেনের ইঞ্জিনটি তখনও চালু ছিল। যাত্রীরা ভয়ে ট্রেন থেকে নেমে ছুটোছুটি করতে থাকে। এ সময় লোকজন মিতালি ট্রেনের সহকারী লোকো মাস্টার (এএলএম) মাজেদুর রহমানকে ইঞ্জিনের ভেতর থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি ট্রেনের ইঞ্জিনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। খবর পেয়ে চিলাহাটি ও ডোমার ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়েছে।
ডোমার রেলস্টেশন মাস্টার মোসাদ্দেক আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, সকাল ৮ টা ১৪ মিনিটে মিতালী ট্রেনের লাইট ইঞ্জিনটি ডোমার রেলস্টেশন ছেড়ে চিলাহাটির উদ্দেশে রওনা হয়। এরপর সকাল ৮টা ৩৬ মিনিটে চিলাহাটি স্টেশন মাস্টার টুটুল চন্দ্র সরকার আমার কাছে ইউনিকোড চাইলে ৮টা ৩৯ মিনিটে রুপসা ট্রেনের জন্য আমি লাইন ক্লিায়ারেন্সের গোপন নম্বর দেই। আমি মনে করেছিলাম মিতালী ট্রেনের ইঞ্জিনটি চিলাহাটি স্টেশনে পৌছেছে বলেই তারা আমার কাছে লাইন ক্লিয়ারেন্স চেয়েছে।
চিলাহাটি স্টেশন মাস্টার টুটুল চন্দ্র সরকারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি স্টেশনে ছিলেন না। মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাই তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
চিলাহাটি স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার নাজনীন আক্তার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ট্রেন দুর্ঘটনার পর থেকেই দায়িত্বরত স্টেশন মাস্টার টুটুল চন্দ্রকে পাওয়া যাচ্ছে না। এ ঘটনায় রেলওয়ে কৃতপক্ষ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে।
চিলাহাটি ফায়ার সার্ভিসের সাব স্টেশন অফিসার আতাউর রহমান ট্রেন দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমরা যাওয়ার আগেই ট্রেনের যাত্রীরা আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করায়। ফায়ার সার্ভিসের রংপুর বিভাগের উপ-পরিচালক আব্দুল হামিদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।