ডাকসু নির্বাচন: সহাবস্থানের দাবি মেনে নিলো ছাত্রলীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ছাত্রদলের সহাবস্থানের দাবিতে আর আপত্তি নেই ছাত্রলীগের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে সহাবস্থানের অংশ হিসেবে মধুর ক্যান্টিনে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে চেয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। আর এতে আপত্তি না থাকার কথা জানিয়েছে ছাত্রলীগ।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেছেন, বৈধ ছাত্রদের সহাবস্থানের বিষয়ে ছাত্রলীগের কোনো আপত্তি নেই।

এরই মধ্যে সোমবার ‘পরিবেশ পরিষদ’র সভায় প্রক্টোরিয়াল টিমের সহযোগিতা ছাড়াই যোগ দিয়েছে ছাত্রদল। নিকট অতীতে ক্যাম্পাসে প্রশাসনের সাথে কোনো আলোচনায় বসতে হলে প্রক্টোরিয়াল টিমের গাড়িতে এসে তারা যোগ দিয়েছে। আবার তাদের প্রহরাতেই ক্যাম্পাস থেকে বের হয়েছে।

এদিন বেলা সাড়ে এগারোটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল মতিন ভার্চুয়াল কক্ষে ডাকসু নির্বাচনের গঠনতন্ত্র ও আচরণবিধি সংশোধনের লক্ষ্যে ডাকসু নির্বাচনের আলোচনার প্লাটফর্ম ‘পরিবেশ পরিষদ’ ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ১৩টি ছাত্র সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে।

টানা চার ঘণ্টা রুদ্ধদার বৈঠক শেষে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী সভার বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।

এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সভার বিষয়ে কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান বলেন, আমরা এখানে যেমন সহাবস্থানে সভা করেছি, তেমনভাবে মধুর ক্যান্টিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে সহাবস্থান কার্যকর করে তারপর তফসিলের দাবি জানিয়েছি।

‘অন্যান্য সংগঠনও সহাবস্থানের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে। ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে যারা হল ও কেন্দ্রীয় সংসদে ফি প্রদান করে তাদের সবার ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার সুযোগ উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়েছি। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে ভোটার ও প্রার্থী হতে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। ভোটকেন্দ্র হলের বাহিরে এনে কলাভবন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে স্থাপনের দাবি জানিয়েছি আমরা।’

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনকে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য ভোটকেন্দ্র ও আশেপাশের জায়গায় সিসিটিভি লাগানোর দাবি জানিয়েছি এবং গঠনতন্ত্রে ডাকসুর সভাপতি (উপাচার্য) একচেটিয়া ও অগণতান্ত্রিক ক্ষমতা সংশোধনের দাবি জানানো হয়েছে।

সহাবস্থানকে কেন্দ্র করে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশ হোক সেটা তারা চান না উল্লেখ করে আকরামুল বলেন, ছাত্রলীগ তাদের কর্মীদের সঙ্গে সময় নিয়ে কথা বলে সহাবস্থানের পরিবেশ নিশ্চিত করুক।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, ছাত্রদল সর্বশেষ আনুষ্ঠানিকভাবে ক্যাম্পাস ছেড়েছে তাদের নিজেদের ঝামেলার কারণে। তাদের অতীতের কর্মকাণ্ড বাদ দিয়ে ইতিবাচক ধারায় তারা আসুক আমাদের কোনো আপত্তি নেই। বর্তমানে প্রতিটি হলে ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ ছাত্রলীগের নেতাকর্মী রয়েছে। বাকিরা অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের ও সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী। প্রতিটি হলে প্রভোস্টদের কর্তৃত্ব রয়েছে। ছাত্রদল তাদের নেতাকর্মীদের লিস্ট প্রশাসনকে দিক আমাদের কোনো আপত্তি নেই।

ভোটকেন্দ্র হলের বাইরে নেয়ার ব্যাপারে ছাত্রলীগের অবস্থান জানতে চাইলে গোলাম রাব্বানী বলেন, সিনিয়র শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন হয়। এখানে মিডিয়ার ফোকাসও থাকবে। নির্বাচন ম্যানুপুলেট করার কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচন সুষ্ঠু করার সকল পদক্ষেপ কর্তৃপক্ষ নিবে, আমরা সাহায্য করব।

প্রার্থী ও ভোটার হওয়ার একটি নির্দিষ্ট বয়স বেঁধে দেওয়ার দাবিও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় বলে জানান গোলাম রাব্বানী। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পদকও এতে একমত পোষণ করেন।

সভার বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড.মো. আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, আচরণবিধি ও গঠনতন্ত্র সংশোধনের জন্য বৈঠক ছিল। প্রক্টর ও অন্যরা বিভিন্ন দিক থেকে আসা দাবিগুলো লিখেছে। সকল বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে সিন্ডিকেটে।

নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ কবে হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ৩১ মার্চের মধ্যেই নির্বাচন করতে চাই। এখনও সেটাই আছে আমাদের ভাবনায়। আমরা এপ্রিলে যেতে চাই না।

কবে নাগাদ তফসিল ঘোষণা হবে জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, কাজের পরিধি মূল্যায়ন না করে বলা যাচ্ছে না। যারা ভোটার হবে তারা প্রার্থী হতে পারবেন এ বিষয়ে সকলেই একমত হয়েছেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028669834136963