ডাকসু ভোটে গণতান্ত্রিক সহাবস্থান থাকতে হবে

ডা. মুশতাক হোসেন |

ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ডা. মুশতাক হোসেন বলেছেন, ডাকসু সব ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের অংশগ্রহণে প্রাণবন্ত ছিল। দীর্ঘ সময় ডাকসু ভোট না হওয়ায় ছাত্ররাজনীতি গতিহীন হয়ে পড়েছিল। আবারও ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে। এটা খুবই আনন্দের সংবাদ। একজন সাবেক ছাত্রনেতা হিসেবে, ডাকসুর নির্বাচিত জিএস হিসেবে আমি চাই গণতান্ত্রিক সহাবস্থান। 

রবিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি)  প্রকাশিত বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাতকারে তিনি একথা বলেন। সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন আলী রিয়াজ।

কাউকে বেশি সুবিধা দেওয়া কিংবা কাউকে বাধা দিয়ে সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন হবে না। এজন্য সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, ছাত্র সংগঠন সবাই মিলে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন। ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ডাকসুর নির্বাচন না হওয়ায় ছাত্ররাজনীতিতে এক ধরনের শূন্যতা বা গতিহীনতা রয়েছে।

আশা করি এই ভোটের মাধ্যমে গতি ফিরে আসবে আমাদের ছাত্ররাজনীতিতে। রাজনৈতিক নেতৃত্বেও এক ধরনের শূন্যতা আমরা দেখছি যারা ছাত্র সংগঠনের মাধ্যমে উঠে এসেছেন। যাদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ অনেক বেশি। সুদক্ষ নেতৃত্বে ঘাটতি আমরা দেখছি। ডাকসুতে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা সবাই পরবর্তীতে সরাসরি রাজনীতিতে থাকেননি। কিন্তু তারা যেখানে গেছেন সেখানেই নেতৃত্ব দিয়েছেন পরিবর্তনের, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের। 

গত ২৮ বছর আমাদের ছাত্ররাজনীতির সৌহার্দ্য নষ্ট হয়েছে। যারা যখন ক্ষমতায় গেছেন তারা শিক্ষাঙ্গনকে ব্যবহার করেছেন নিজেদের স্বার্থে। ডাকসু নির্বাচন নিয়মিত হলে এমনটি হতো না। তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন যারা শিক্ষক আছেন তাদের কিছুটা অভিজ্ঞতার অভাব থাকতে পারে। কারণ আমার ধারণা, শিক্ষকদের অধিকাংশ ডাকসু নির্বাচন দেখেননি। তারা ব্যবস্থাপনা করেননি। 

তাই এবার নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু নাও হতে পারে। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ভোট। এই ভোট যে কোনো মূল্যে সফল করতে হবে। নানা রকমের অভিযোগ রয়েছে। ভোট কেন্দ্র নিয়ে নানা কথা হচ্ছে। হলে ভোট কেন্দ্র হোক। সেখানে ভোট কেন্দ্র রেখেই সমাধান করতে হবে। আমাদের সময় হলেই ভোট কেন্দ্র ছিল। এরপরও হলে ভোট নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। এই আশঙ্কা কাটাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখবেন। 

তারা হলের সব ছাত্র সংগঠন নিয়ে আলাদা বৈঠক করতে পারেন। হলের পরিবেশ, সহাবস্থান নিশ্চিত করতে পারেন। একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, ডাকসু নির্বাচনে সরকারবিরোধীরাও যদি নির্বাচিত হন সেটা এমন কোনো সমস্যা নয়। এমনকি প্রধানমন্ত্রীও সেটা মনে করেন না বলেই আমরা জানি। ডাকসুর সাবেক এই জিএস বলেন, ডাকসু শুধু রাজনৈতিক বন্ধ্যত্ব কাটাবে না, আমাদের গণতান্ত্রিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের যে সংকট সেখানে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে। 

শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, সহিংসতা ঠেকাবে ডাকসুর নির্বাচন। বর্তমান নির্বাচনে অস্ত্রবাজি নেই। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে কোনো সময় সেটা ফিরে আসতে পারে। ক্ষমতা দখল করতে বা রাখতে অনিয়ম সহিংসতা হলে সেটা হবে আমাদের জন্য কলঙ্কজনক অধ্যায়। সেটা যেন না হয় সেজন্য সবাই ভূমিকা রাখবেন। প্রতিটি হলে সব ছাত্র সংগঠনের কর্মকা- নাও থাকতে পারে। কিন্তু সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নেবেন। সবার সঙ্গে মিলে কীভাবে গ্রহণযোগ্য একটি ভোট করা যায় তার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে এটাই আশা করি আমি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা - dainik shiksha লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.004410982131958