সম্বল স্বপ্ন ও মেধা, বাধা দারিদ্র্যডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতে চায় তারা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি |

তাদের অদম্য মেধা আর প্রচণ্ড আগ্রহ। আছে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে মানুষ হওয়ার স্বপ্ন। কিন্তু সাধ ও স্বপ্নের মধ্যে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দারিদ্র্য।এদের কারও বাবা শাকবিক্রেতা,  কারও বাবাই বেঁচে নেই। তবুও দারিদ্র্যে দমাতে পারেনি তাদের।এবারে এসএসসিতে জিপিএ-৫পেয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়েছে। তাদের এই সাফল্য অনেক কষ্টে পাওয়া। তারা এখন স্বপ্ন দেখছে ভবিষ্যতে চিকিৎসকহওয়ার। কিন্তু সেই স্বপ্নপূরণে বাধা সে দারিদ্র্যই। তাদের বিশ্বাস, একটু সহযোগিতা পেলেই ওদের স্বপ্ন পূরণ হবে। সমাজেরহৃদয়বান মানুষ বা কোন সংস্থার সহযোগিতার অপেক্ষায় ওরা।

সেলিনা আক্তার শিমু: বাবা সফি উল্লাহ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গত বছর মারা যান।সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিবাবাকে হারিয়ে পরিবারটি মানবেতর জীবন যাপন করছেন।মা গৃহিনী ফাতেমা বেগম। দুই ভাই এক বোন। সবার ছোট সেলিনা আক্তার শিমু। বড়ভাই পাবনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স শেষ বর্ষ ও দ্বিতীয় ভাই কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স প্রথম বর্ষেপড়াশোনা করেন। মা দিনমজুরি করে দুই ভাইয়ের পড়াশোনা ও সংসারের খরচ চালায়। এক সময় জায়গা জমি অনেক ছিল।কিন্তু বাবার চিকিৎসার করাতে সব জমি বিত্রুয় করতে হয়েছে। 

সেলিনাআক্তার শিমু হাতীবান্ধা এসএস সরকারী হাই স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫পেয়ে উত্তীর্ণ হন। পিইসিতে ও জেএসসিতেও গোল্ডেন জিপিএ-৫ পায় সে।

শিমু বলেন, গত বছরে বাবা মারা যাওয়ার পর হতাশার ভুগছিলাম। অনেক কষ্টের মাঝে ৪ কিলোমিটার বাই সাইকেল চালিয়েস্কুলে যেতাম। আমার ও ভাইদের পড়াশোনার চালাতে আমার মায়ের পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না। পড়াশোনার সুযোগ পেলেভবিষ্যতে বিচারক হওয়ার স্বপ্ন দেখছি।

রক্সি আক্তার: ছোট থেকেই অদম্য মেধাবী রক্সি আক্তারের বাবা জসিম উদ্দিন একজন দিনমজুর। জায়গা জমি নেই।মাত্র ৫শতক জমির ওপর টিন শেড ঘর। পরিবারে চার সদস্য।দিনমজুরি ও অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে সংসার চালানো কঠিনতার পক্ষে। তবে দারিদ্র্যের কাছে হার মানেনি রক্সি আক্তার। এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা আরেফাখাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। ছোট থেকেই অদম্য মেধাবী রক্সি আক্তারসে পিইসি ও জেএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়েছিল। তার স্বপ্ন ভবিষ্যতে চিকিৎসক হওয়ার কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণে  বাঁধ সেধেছেদারিদ্র্য। রক্সি বলে, আমার অনেক ইচ্ছে আমি চিকিৎসক হই। কিন্ত আমার পরিবারে পক্ষে পড়াবার সামর্থ্য নেই। কোন সংস্থা যদিআমাকে সাহায্য করেন তাহলে আমার স্বপ্ন পূরণ হবে। আমি পড়তে চাই।

ওমর ফারুক: বাবা আছিম উদ্দিন হাতীবান্ধা মুক্তিযোদ্ধা বাজারে কচু শাক বিক্রয় করে সংসার চালায়।মাত্র ১০ শতক জমিরওপর খড়ের ঘর। বাবা মা সহ ৫ জনের সংসার।তার দুই ছোট ভাই স্থানীয় গহের আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।হাতীবান্ধা এসএস  সরকারী হাই স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ওমর ফারুক। সে পঞ্চম শ্রেণি ও জেএসসিতে বৃত্তি পায়।ভবিষ্যতে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখছে অদম্য মেধাবী ওমর ফারুক ।কিন্তু একমাত্র বাধা সে  দারিদ্র্য । ওমর ফারুক বলেন, কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আমাকে সাহায্য করলে আমার পড়াশোনা ওচিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নটা পূরণ হতো।

রহমত আলী: বাবা মৃত। মা ছকিনা বেগম গৃহিনী। তিন ভাই তিন বোনের মধ্যে সবার ছোট রহমত আলী।অভাবের সংসারে তারলেখাপড়ার খরচ মেটাতে তার মা কাঁথা সেলাই করেন। কাঁথা সেলাইয়ের টাকায় পড়ালেখার খরচ আর সংসার চলত তাদের।হাতীবান্ধার গড্ডিমারী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে বিজ্ঞান বিভাগে


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
একাদশে ভর্তিতে কলেজ পছন্দে যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে - dainik shiksha একাদশে ভর্তিতে কলেজ পছন্দে যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: জুতার মালা শিক্ষককের - dainik shiksha ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: জুতার মালা শিক্ষককের ঢাকা বোর্ডের এসএসসি: অসন্তুষ্টদের খাতা চ্যালেঞ্জ ১ লাখ ৮০ হাজার - dainik shiksha ঢাকা বোর্ডের এসএসসি: অসন্তুষ্টদের খাতা চ্যালেঞ্জ ১ লাখ ৮০ হাজার থমকে আছে শিক্ষক বদলি কার্যক্রম - dainik shiksha থমকে আছে শিক্ষক বদলি কার্যক্রম প্রশিক্ষক হতে শিক্ষকদের আবেদন আহ্বান - dainik shiksha প্রশিক্ষক হতে শিক্ষকদের আবেদন আহ্বান কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0051770210266113