‘দেশের বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শিক্ষকদের ৭০ শতাংশ পদ শূন্য রয়েছে। শিক্ষক সংকটে একাডেমিক ও ব্যবহারিক ক্লাসের সময় কমিয়ে শেষ করা হচ্ছে সিলেবাস। শিক্ষার্থীদের দেয়া হচ্ছে সনদ। যার ফলে দিন দিন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মান কমছে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে বিদেশে দক্ষকর্মী পাঠানো বন্ধ হয়ে যাবে। কারিগরি শিক্ষার প্রতি মানুষের আগ্রহ হারাবে।’
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশে (আইডিইবি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয় তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে আইডিবির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম এ হামিদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে শামসুর রহমান বলেন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের নানাভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব সমস্যা সমাধানে বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। সরকারের এক শ্রেণির আমলারা সেটি বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করছেন। সরকার দাবি বাস্তবায়ন না করলে দেশের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও পলিটেকনিক শিক্ষার্থীসহ দেশের টেকনিক্যাল অ্যান্ড ভোকেশনাল এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেইনিং (টিভিইটি) সেক্টর রাজপথে নামতে বাধ্য হবে। আর এ জন্য কোনোভাবেই আইডিইবিকে দায়ী করা যাবে না। এসময় চার দফা দাবি তুলে ধরেন তিনি।
চার দফা দাবি হলো- বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি)-২০২০ ও ঢাকা ইমারত নির্মাণ বিধিমালা-২০০৮ এর সংজ্ঞা ও ধারা-উপধারা সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ করা, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের স্পেশাল ইনক্রিমেন্ট দেওয়া, পদোন্নতির কোটা ৫০ শতাংশে উন্নীতকরণ, সার্ভিস রুল অনুযায়ী পদোন্নতি দেওয়া, কনসেপ্ট অনুযায়ী জনকল্যাণে অর্গানোগ্রাম প্রণয়ন এবং প্রাইভেট সেক্টরে কর্মরতদের ন্যূনতম বেতন ও পদবি নির্ধারণ করা, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষাকোর্সকে চার বছরেই রাখা, শিক্ষক সংকট দূরীকরণসহ ২৯টি ইমার্জিং টেকনোলজির বেকার ডিপ্লোমা গ্র্যাজুয়েটদের পদ সৃষ্টিসহ নিয়োগের ব্যবস্থা করা।
বলা হয়, পলিটেকনিক ও টেকনিক্যাল কলেজের শিক্ষকদের ৭০ শতাংশ পদ শূন্য রেখে প্রতিষ্ঠান চালানো হচ্ছে। শিক্ষক সংকটে একাডেমিক-ব্যবহারিক ক্লাসের সময় কমিয়ে সিলেবাস শেষ করতে হচ্ছে। বর্তমানে দায়সারাভাবে কারিগরি শিক্ষা চলছে। যে কারণে এ খাতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে। আমলাদের একটি মহল কারিগরি শিক্ষাকে ধ্বংস করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এমন পরিস্থিতিতে দিন দিন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মান কমছে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে বিদেশে দক্ষকর্মী পাঠানো বন্ধ হয়ে পড়বে। কারিগরি শিক্ষা ধ্বংসের মুখে পড়বে।
সংগঠনের নেতারা জানান, দেশের উন্নয়নে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের বড় অবদান থাকলেও তাদের মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে না। রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাদের কাজের সুযোগ কমিয়ে ফেলা হচ্ছে। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের নির্মাণ কোর্ড দেওয়ার ক্ষমতা বাতিল করে শুধু বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের দেওয়া হয়েছে। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা সংশোধন করে দ্রুত গেজেট প্রকাশের দাবি জানান।