ডিসি সম্মেলনে শিক্ষা কতোটা গুরুত্ব পেলো

মাছুম বিল্লাহ |

এ মাসের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হলো এ বছরের ডিসি সম্মেলন। আগের বছরগুলোতে এই সম্মেলনের ডিউরেশন ছিল তিনদিন, এবার হয়েছে চারদিন। ডিসিরা প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক বিভিন্ন দাবিদাওয়ায় বাঁধা ছকের বাইরে কাজ করতে গিয়ে যেসব অসুবিধার ও সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন সেগুলো তারা সম্মেলনে তুলে ধরেছেন। প্রতিবছরই বেশির ভাগ প্রস্তাব থাকে ডিসি ও ইউএনওদের ক্ষমতা বা দায়িত্বের পরিধি ও সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়ে, এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। তবে অন্যান্য জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সাথে শিক্ষা এই সম্মেলনে কতোটুকু স্থান পেয়েছে সেটিই আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়। 

স্মরণে রাখা ভালো, বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম চালু করা হয়েছে ‘কম্পিটেন্সি বেজড কারিকুলাম’ - যার শিক্ষাদানের পদ্ধতি হচেছ ‘এক্সপেরিয়েনশিয়াল লার্নিং’ বা ’ অভিজ্ঞাতাভিত্তিক শিক্ষা।’ 

পুরো বিষয়টির ফিডব্যাক, রিঅ্যাকশন, ফল ইত্যাদি শিক্ষক-অভিভাবক, শিক্ষার্থী, শিক্ষা প্রশাসনের সাথে জড়িত সবাই কিভাবে দেখছেন, কি তাদের অভিজ্ঞতা ইত্যাদি বিষয় বিচিছন্নভাবে আমাদের সামনে এসেছে এবং আসছে। বিভিন্ন মিডিয়া বিভিন্নভাবে প্রচার করছে। ডিসি সম্মেলনে এর একটি কংক্রিট ফিডব্যাক ও মতামত আমরা দেখার অপেক্ষায় ছিলাম, সেটি কিন্তু সেভাবে আসেনি। 

অবশ্য শিক্ষা সংক্রান্ত উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় এই সম্মেলেন স্থান পেয়েছিল যেটি একটি ধনাত্মক দিক। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যৌন হয়রানির বিষয় ইদানিং খুব বেশি শোনা যাচেছ। এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের অভিযোগ ঊঠলে শুধু অভ্যন্তরীণ কমিটি করে তদন্ত  করলেই চলবে না, একই সঙ্গে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠান তদন্ত কমিটি করুক আর না করুক দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো অজুহাত চলবে না। 

ডিসি সম্মেলনের প্রথমদিনের তৃতীয় অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি নিয়ে উচচ আদালতের স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিপীড়ন নিরোধ কমিটি গঠন করতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠানে সেটি আছেও। কিন্তু কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের অভিযোগ হলে আভ্যন্তরীণ কমিটি গঠন করা হয়, আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনা। 

ডিসি সম্মেলনে আর একটি বিষয় আলোচিত হয়েছে। সেটি হলো- সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমেছে। এটি শুধু প্রাথমিকে নয়, মাধ্যমিকেও। এজন্য যত্রতত্র গড়ে ওঠা কওমি ও নুরানী মাদরাসাগুলোকে দায়ি করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। বিষয়টি নিয়ে ডিসিদের পক্ষ থেকে কোনো সাজেশন এসেছে কি না জানা যায়নি। 

শিক্ষা সংক্রান্ত আলোচনা এই সম্মেলনে আরও একটু বেশি হলে সবাই উপকৃত হতেন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নিয়ে এই সম্মেলেন কথা হয়েছে, যদিও উচচশিক্ষার মানের বিষয়ে ডিসিদের সরাসারি কিছু করার নেই। তবে, বিষয়টি আলেচিত হলে সবার দৃষ্টি কাড়তে সুবিধা হয়। কিন্তু, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা হলো, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা কেন হলোনা? পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা তো আরও নাজুক। শিক্ষক রাজনীতি, ছাত্র রাজনীতি, গণরুম কালচার, টেন্ডার ও চাঁদাবাজিসহ বহু ধরনের দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এগুলো নিয়ে কথা হলেও শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা উপকৃত হতেন। 

লেখক : ক্যাডেট কলেজের সাবেক শিক্ষক

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
৭ কলেজ নিয়ে পরিকল্পনা জানালেন শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha ৭ কলেজ নিয়ে পরিকল্পনা জানালেন শিক্ষা উপদেষ্টা অটোরিকশার ধাক্কায় ছাত্রীর মৃত্যু, ৮ দাবিতে জাবিতে ব্লকেড - dainik shiksha অটোরিকশার ধাক্কায় ছাত্রীর মৃত্যু, ৮ দাবিতে জাবিতে ব্লকেড শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা ছাত্রাবাস খোলার দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ - dainik shiksha ছাত্রাবাস খোলার দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ট্রাম্প প্রশাসনে শিক্ষামন্ত্রী হচ্ছেন লিন্ডা ম্যাকমোহন - dainik shiksha ট্রাম্প প্রশাসনে শিক্ষামন্ত্রী হচ্ছেন লিন্ডা ম্যাকমোহন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে চবিতে এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদন করুন, ফি ১০০০ - dainik shiksha চবিতে এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদন করুন, ফি ১০০০ কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বাউবিতে বিএড প্রোগ্রামে ভর্তি, আবেদন ফি ৭০০ - dainik shiksha বাউবিতে বিএড প্রোগ্রামে ভর্তি, আবেদন ফি ৭০০ চবিতে এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদন করুন, ফি ১০০০ - dainik shiksha চবিতে এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদন করুন, ফি ১০০০ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026681423187256