গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে হঠাৎই উত্তাল হয়ে পড়ে সাভারের খাগানে অবস্থিত ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। দফায় দফায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে চলে স্থানীয় লেগুনা শ্রমিক এবং এলাকাবাসীর সংঘর্ষ। ভাঙচুর হয় লেগুনা এবং দোকানপাট। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বন্ধ করা হয় বিদ্যুৎসংযোগ। মোতায়েন করা হয় বাড়তি পুলিশ। ইটপাটকেল নিক্ষেপের ফলে শিক্ষার্থী ও পুলিশ সদস্যসহ আহত হয় প্রায় ২০-২৫ জন। যাদের মধ্যে গুরুতর আহত তিন শিক্ষার্থীকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সর্বশেষ তথ্য মতে, সকালে সংঘর্ষস্থল চারাবাগ মোড় ও কুমকুমারি বাজার এলাকায় গিয়ে দোকানপাট খুলতে দেখা গেছে। তবে পরিস্থিতি থমথমে। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশের কুমকুমারি ও চারাবাগ মোড়ে এখনও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এ ঘটনায় এখনও কোনো মামলা দায়েরের খবর পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী বলেন, মূলত ঘটনার সূত্রপাট ভাড়া নিয়ে। আমাদের দুই শিক্ষার্থী লেগুনায় আসার সময় অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করলে অস্বীকৃতি জানায় এবং এর ফলে সেখানের লেগুনার শ্রমিকরা প্রথমে তাদের লাঞ্ছিত করে এবং পরবর্তীতে মারধর করলে তারা ক্যাম্পাসে ফিরে আসে এবং বন্ধুদের জানায়। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা সেখানে গেলে স্থানীয় লোকজনসহ লেগুনা শ্রমিকদের পক্ষ নেয় এবং পুনরায় তাদের আঘাত করলে শিক্ষার্থীরা তাদের সাথে সংঘর্ষে জড়ায়। পরবর্তীতে এই ঘটনার সৃষ্টি হয় এবং আমাদের তিন শিক্ষার্থী এখন গুরুতর অবস্থায় এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আর এই পরিস্থিতির কারণে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগামী ১৬ মার্চ পর্যন্ত মিডটার্ম পরীক্ষা স্থগিত করেছে। স্থানীয় বাসিন্দা শফিক মৃধা বলেন, গতকাল মূলত ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থী এবং লেগুনার শ্রমিকদের সঙ্গে এই অপ্রীতিকর ঘটনাটি ঘটে। সেখানে উভয়পক্ষ মারধরের শিকার হয়। এবং প্রায় দুইশটির মতো দোকানপাট এবং আট থেকে দশটির মতো লেগুনা ভেঙে ফেলে।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, চারাবাগ মোড় এলাকায় লেগুনার শ্রমিকদের সঙ্গে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আমরা সেখানে দ্রুত উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি। গতকাল রাতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে ঘটনাস্থলে লোকজনের যাতায়াত কম লক্ষ্য করা গেছে। এ ঘটনায় আমাদের সদস্যসহ দুই পক্ষেরই লোকজন আহত হয়েছেন। সর্বশেষ তথ্যনুযায়ী অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আগামী ১৬ তারিখ পর্যন্ত সকল শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেছে।