বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জেলে ঢোকানোর পরিকল্পনা করছে সরকার। প্রতিহিংসার কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। ড. ইউনূস নয়, দেশের জনগণের ওপর ভর করেছে বিএনপি।’ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘নব্বইর গণঅভ্যুত্থান ও কিছু কথা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘হাজারও নেতাকর্মী প্রতিদিন আদালতের বারান্দায় ঘুরছে। এক দেড় মাসের মধ্যে হয়তো আমাকেও জেলে যেতে হতে পারে। কারণ যারা সরকারকে বলছে, তুমি চলে যাও, ছেড়ে দাও ক্ষমতা। সরকার তাদের সাজা দেওয়ার ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আজ প্রতিদিন বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী কোর্টের বারান্দায়, এটি কোনো গণতান্ত্রিক দেশে হতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘অনেক বুদ্ধিজীবী বলেন দেশে গণতন্ত্র আছে। আমি তাদের বলব একবার আপনারা নিম্ন আদালতে গিয়ে দেখে আসুন। দেখুন, কীভাবে নেতাকর্মীরা হাজিরা দেয়। কত সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মী যাচ্ছে। বলেন তো, গণতন্ত্র আছে? এমন বিচারব্যবস্থা- যদি হাইকোর্টে জামিন দেয়, সেটা আবার নিম্ন আদালত আটকে দেয়।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশ একটি যুগসন্ধিক্ষণে উপনীত হয়েছে। এ জাতি টিকবে কি টিকবে না এটাই এখন সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক।
তিনি বলেন, আইন মন্ত্রণালয় একটি সেল তৈরি করেছে, সেখানে অতিদ্রুত রায় দিয়ে সাজা প্রদান করা যায়। যারা দেশের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করছে তাদের সবাইকে এক কাতারে শামিল হয়ে আদালতে যেতে হচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন তো আমরা চাই। আমরা বিশ্বাস করি নির্বাচন ছাড়া কোনো পরিবর্তনের উপায় নেই। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী তারা এটা বিশ্বাস করে। নির্বাচনটা যদি দলীয় সরকারের অধীনে হয়, পূর্ব অভিজ্ঞতায় দেখেছি, কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না। যদি সেটা আবার আওয়ামী লীগের অধীনে হয় তাহলে কখনও সুষ্ঠু হবে না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘জাতি আজ মুখোমুখি হয়েছে। জাতি আজ রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকবে কি থাকবে না। আজ দুর্ভাগ্য আমাদের, ৭১ ও ৯০ -এ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাতার জন্য জীবন দিতে হয়েছে, কিন্তু ৫২ বছর পর আজ সেটার কথা বলতে হচ্ছে। দেখতে হচ্ছে দেশ থেকে গণতন্ত্র সম্পূর্ণভাবে বিলীন করে দেওয়া হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগের একটা ইতিহাস তারা গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না। এটা বললে তাদের গা জ্বালা করে। ১৯৭৫ সালে তো তারা বাকশাল কায়েম করেছিল গণতন্ত্রকে হত্যা করে। তারা কি অস্বীকার করতে পারবে তারা এ কাজটি করেনি।
ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান রচিত ‘নব্বইর গণঅভ্যুত্থান ও কিছু কথা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা সভার আয়োজন করে ৯০’র সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতৃবৃন্দ। সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক উপ-উপাচার্য আ ফ ম ইউসুফ হায়দার। এতে সাবেক ছাত্রনেতারা বক্তব্য রাখেন।