ঢাকা কমার্স কলেজ যেভাবে ডুবছে

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দে উচ্চ মাধ্যমিকে ৯৯ জন শিক্ষার্থী নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে ঢাকা কমার্স কলেজ। কলেজের বর্তমান ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৯ হাজার। শুরু থেকেই সুনামের সঙ্গে চলে আসছিলো কলেজটি। কিন্তু গত কয়েকবছর ধরে পরিচালনা পর্ষদের কয়েকজনের আর্থিক ও একাডেমিক নানা অপকর্মে ডুবতে বসেছে কলেজটি। কলেজটির সাবেক শিক্ষার্থীরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে নানা তথ্য দিচ্ছেন। তারা অনুরোধ করছেন কলেজটির নানা অনিয়মের তথ্য তুলে ধরে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করলে শিক্ষা প্রশাসনের টনক নড়বে। কঠোর ব্যবস্থা নিলে আবার ফিরে পাবে হারাতে বসা গৌরব। 

অনুসন্ধানে জানা যায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়  এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে জমা রয়েছে  দুর্নীতি দমন কমিশনের সর্বশেষ তদন্ত প্রতিবেদন। সে প্রতিবেদনে মিলেছে কলেজটির নানা অনিয়মের তথ্য। ঢাকা কমার্স কলেজের প্রশাসনের বিরুদ্ধে অ্যাকাডেমিক ক্লাস কমিয়ে কোচিং, আলাদা অ্যাকাউন্টে কোচিংয়ের টাকা সংরক্ষণ, ভর্তি বাতিল করে অর্থের বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের পুনরায় ভর্তিসহ আর্থিক দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুদক। 

দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়,গভর্নিং বডি ভালো ফলাফলের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোচিং ফি নিয়ে শ্রেণি কক্ষেই কোচিং করানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু কেচিং ফি কত? জারিমানা আরোপের পদ্ধতি থাকবে কিনা? ভর্তি বাতিল ও পুনরায় অর্থের বিনিময়ে একই শিক্ষার্থীকে পুনরায় ভর্তি করা যাবে কিনা? এসব বিষয়ে গভর্নিং বিডির কোনও লিখিত অনুমতি কলেজ প্রশাসন দেখাতে পারেনি।  যদিও ফি ধার্য, জরিমান আদায়, অর্থের বিনিময়ে একই শিক্ষার্থীকে পুনরায় ভর্তি ইত্যাদি সকল পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের ওপরে প্রয়োগ করা হয়েছে।    

দুদকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়,কোচিং ক্লাসে মাসিক তিন দিন অনুপস্থিত থাকলে শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল হয়েছে, আবার সেই একই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা নিয়ে পুনরায় ভর্তি করা হয়েছে। অনুপস্থিততির জন্য জরিমানার অর্থও আদায় করা হয়েছে।

কোচিংয়ে সংগৃহীত অর্থের ১০ শতাংশ কলেজ ফান্ডে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও এ ব্যাপারে আলাদাভাবে হিসাব সংরক্ষণের বন্দোবস্ত নেই। 

এনসিটিবি প্রতি শিক্ষাবর্ষে যত ক্লাস নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে, তুলনামূলকভাবে  কলেজ প্রশাসন প্রতি অ্যাকাডেমিক বর্ষে তার চেয়ে অনেক কম সংখ্যক ক্লাস নিয়েছে। কলেজ প্রশাসন কোচিংকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে মূল অ্যাকাডেমিক ক্লাসের সংখ্যা ও সময় বার বার কমিয়ে ফেলেছে। 

সাবেক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, ঢাকা কমার্স কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তথাকথিত কলেজ ব্র্যান্ডিং ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮-তে জাতীয় পর্যায়ে সেরা বেসরকারি কলেজ নির্বাচিত হয়েছে বলে দাবি করছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দেশের সাধারণ অভিভাবক ও শিক্ষাবিদদের কাছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই র‌্যাংকিংয়ের কোনো গুরুত্ব নেই বলে জানা গেছে। 

কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্রফেসর ড. মো. আবু মাসুদ। সার্বিক বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সরকার প্রতিটি নাগরিকের অধিকার রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ - dainik shiksha সরকার প্রতিটি নাগরিকের অধিকার রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ কারিগরির এসএসসি ও দাখিলের রেজিস্ট্রেশনের সময় ফের বাড়লো - dainik shiksha কারিগরির এসএসসি ও দাখিলের রেজিস্ট্রেশনের সময় ফের বাড়লো প্রাথমিকের ডিজির অপসারণ ছাড়া কাজে ফিরবেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা - dainik shiksha প্রাথমিকের ডিজির অপসারণ ছাড়া কাজে ফিরবেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ‘তুমি কে আমি কে? আদুভাই আদুভাই’ স্লোগান শেকৃবি শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ‘তুমি কে আমি কে? আদুভাই আদুভাই’ স্লোগান শেকৃবি শিক্ষার্থীদের মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতে একগুচ্ছ প্রস্তাব - dainik shiksha মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতে একগুচ্ছ প্রস্তাব ঢাবির নতুন প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ - dainik shiksha ঢাবির নতুন প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002385139465332