এনামুল হক প্রিন্স, দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক: রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ধানমন্ডি-নিউমার্কেট-কলাবাগান-হাজারীবাগের সমন্বয়ে গঠিত ঢাকা-১০ সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাচ্ছেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। সাবেক এমপি ও বর্তমান দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের বড় ভাই এ অধ্যাপককে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে নৌকার মাঝি করার সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।
বৃহস্পতিবার রাতে দলটির কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা বিষয়টি দৈনিক আমাদের বার্তাকে নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ায় সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। এতে আসনটি শূন্য ঘোষণা হয়। পরে উপনির্বাচনে ওই আসনের এমপি পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন।
দলীয় সূত্র বলছে, ঢাকা-১০ আসনে প্রার্থী হতে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছে ঢাকার ক্রিকেটের পোস্টার বয় সাকিব-আল-হাসান, বর্তমান এমপি, দক্ষিণ সিটির ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম বাবলাসহ বেশ কয়েকজন। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত ঢাকা-১০ এ নৌকার মাঝি হবেন পরশ।
এদিকে এদিন দুপুরে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের গুরুত্বপূর্ণ সভা শেষে বেরিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে তেজগাঁওয়ে দলের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে এক বিফ্রিংয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, বেশ কয়েকজন বর্তমান সংসদ সদস্য (এমপি) বাদ পড়ছেন। আগামী ২৫ নভেম্বরের মধ্যে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। সব প্রার্থীর তালিকা একসঙ্গে প্রকাশ করা হবে। এদিন রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ৬৯টি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান সেতুমন্ত্রী।
শেখ ফজলে শামস পরশ যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির জ্যেষ্ঠ পুত্র। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বোন শেখ আছিয়া বেগমের বড় ছেলে শেখ মনি। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ আগস্ট কালরাতে বাবা শেখ মণি ও মা আরজু মণিকে চিরতরে হারান পরশ। তখন তার বয়স মাত্র ৬। ছোট ভাই তাপস মাত্র ৪ বছরের শিশু। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দুর্বিষহ জীবন কাটাতে হয় পরশ-তাপসকে। কখনো আত্মীয়দের বাসায় লুকিয়ে থাকতে হয়েছে, কখনোবা পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। এভাবে দুই বছর কাটার পর ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে তারা ভারতে চলে যায়।
শেখ আছিয়া বেগম তাদের ভারতে নিয়ে যান। চাচা শেখ ফজলুল করিম সেলিম, শেখ ফজলুর রহমান মারুফ, ফুপু শেখ হাসিনা, শেখ রেহেনা তারাও তখন বিদেশে শরণার্থী।
শেখ পরশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। পরে কলরাডো স্টেট ইউনির্ভাসিটি থেকে স্নাতকোত্তর করে দীর্ঘদিন শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন তিনি। শুধু তাই নয় সংস্কৃতিমনা পরশ গান বাজনার প্রতিও বেশ সৌখিন।