‘বসন্ত বাতাসে সই গো/ বসন্ত বাতাসে/ বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ আমার বাড়ি আসে’। ঋতুরাজ খ্যাত বসন্তে প্রস্ফুটিত নতুন ফুলের গন্ধে উন্মাতাল হয়ে লোকশিল্পী শাহ আবদুল করিম গেয়েছিলেন এই গান। বসন্তের আগমনে প্রকৃতির এমন প্রাণচঞ্চলতা সহজেই দোলা দেয় শহর-নগর মনে। জানান দেয় ভালোবাসার আগম বার্তার। ফলে বর্ষপঞ্জিকা না দেখেও বলে দেয়া যায় বসন্ত এসেছে ধরায়।
রাজধানীর যে কটা জায়গা জুড়ে বৃক্ষের আবহ পাওয়া যায় তার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম। বিভিন্ন ধরনের গাছের সঙ্গে পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে রয়েছে হাজারো ফুলের গাছ। ফলে শীতের হিম কাটিয়ে বসন্তের আগমনী বার্তায় ফুলেল রূপ নিয়েছে পুরো ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল প্রাঙ্গণ, একাডেমিক ভবনের বাগান - বিশেষ করে কার্জন হল এলাকায় সবচেয়ে বেশি ফুল গাছের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। দৃষ্টি কাড়া রঙ বাহারি এসব ফুলের সুরভি মাতোয়ারা করে রেখেছে পুরো ক্যাম্পাস।
যদিও শীতের আবহ সম্পূর্ণরূপে প্রকৃতি থেকে এখনও বিদায় নেয়নি তবুও বাহারি রঙের বিচিত্র সব ফুলের মনমুগ্ধকর শোভা যেন হাত বাড়িয়ে টেনে আনছে ক্যাম্পাসের সবাইকে। ক্যাম্পাসের বাইরে থেকেও প্রতিদিন দর্শনার্থীরা ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার টানে বারবার ছুটে আসছেন ঢাবিতে।
ক্যাম্পাসের প্রায় প্রতিটি স্থান যেমন, প্রশাসনিক ভবনগুলো, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি), কার্জন হল এলাকার বোটানিক্যাল গার্ডেনের ভেতরে, বিভিন্ন অনুষদ ভবনের সামনে এবং প্রত্যেক হলের ভেতরেসহ ক্যাম্পাসের প্রায় প্রতিটি স্থানে গড়ে উঠেছে সুন্দর সুন্দর ফুলের বাগান। তবে সবাইকে ছাপিয়ে গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল এলাকার সৌন্দর্য। লাল দেয়ালে ফুটেছে লাল টুকটুকে বাগানবিলাসসহ আরো কত নাম না জানা ফুল।
প্রতিদিন প্রকৃতির এমন নয়নাবিরাম দৃশ্য উপভোগ করতে ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসে সব বয়সের দর্শনার্থী বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা। এর মধ্যে নিজেকে ক্যামেরায় বন্দি না করলে চলেই না। প্রিয়জনের সঙ্গে ছবি ও সেলফি তোলায় ব্যস্ত থাকেন সবাই।
কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম শিকদারের সঙ্গে । তিনি বলেন, এ সময় আমাদের অনুষদের আশেপাশে এক অন্য ধরনের আবহ বিরাজ করে। অনেক ফুল ফোটে । এসব ফুলকে ঘিরে বহিরাগতদের আসা যাওয়া থাকে অনেক । সবাই ছবি তুলতে আসেন। তাদের সঙ্গে ক্লাস শেষে আমরাও এসব ফুলের সঙ্গে ছবি তুলি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বৃক্ষ সংরক্ষণের দায়িত্ব পালন করে থাকে গবেষণা প্রতিষ্ঠান আরবরি কালচার। তারা জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পাঁচ শতাধিক প্রজাতির ফুল গাছ পাওয়া যায়। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ফুল ফোটে গ্রীষ্ম ও বসন্তকালে ।