প্রথম বর্ষ থেকেই শতভাগ আবাসিকীকরণসহ ৬ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, সবাই দেখেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো কীভাবে বছরের পর বছর দখলদারত্বের শেকলে আবদ্ধ ছিল। কীভাবে বছরের পর বছর শারীরিক ও মানসিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হেনস্তা করা হয়েছে। মাথা গোঁজার ঠাঁই পুঁজি করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে কি অন্যায় জুলুম চালানো হয়েছে। মধুর ক্যান্টিনে রাজনৈতিক প্রটোকল দেওয়ার নাম করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রাখা, বাধ্যতামূলক প্রোগ্রাম এবং ক্লাস পরীক্ষার সময়টুকুতেও সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিস্তার পায়নি। আবার ছেলেদের হলগুলোতেও দেখা যেত তাদের সারারাত টহল দিতে বাধ্য করা হতো, এমনকি শীতের রাতেও অযথা তাদের হলের বাইরে পাঠানো হতো। এত কিছুর পরেও তারা ঠিকমতো ঘুমানোর আশ্রয়টুকুও পেতো না। বারান্দা, ছাদ, মসজিদসহ বিভিন্ন জায়গা খুঁজতে হতো।
তারা বলেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ম্যানার শেখানোর নাম করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হতো। আমরা দেখেছি আবু বকর, হাফিজুর মোল্লা কীভাবে শহীদ হয়েছেন এবং এহসান রফিকসহ আরও অসংখ্য অগ্রজকে কীভাবে নৃশংসভাবে নিপীড়ন করা হয়েছে এই রাজনৈতিক দখলদারত্বের মধ্য দিয়ে।
এছাড়াও শিক্ষাগত দিক থেকে মানোন্নয়ন এবং গবেষণা অগ্রসর করতে আবাসন সংকট নিরসন করাকে খুবই প্রাসঙ্গিক মনে করছি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের সংখ্যার অনুপাতে মেয়েদের হল এবং সিটের বড় ধরনের পার্থক্য রয়েছে। ফলে প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও অনেকে সিট পায় না। তাই হল সংখ্যা বাড়িয়ে সিট সংকট নিরসন একটি যথাযথ প্রক্রিয়া হবে বলে মনে করছি।
জিওলজি বিভাগের শিক্ষার্থী নিশিতা বলেন, আমাদের মেয়েদের হলগুলোতে বলা হয় যে ঢাকার আশেপাশের জেলাগুলোর শিক্ষার্থীরা হলে সিট পাবেন না। কারণ তাদের জন্য বাস চালু আছে। তাদের এটা বিবেচনা করা উচিত, টাঙ্গাইল থেকে আসা একজন শিক্ষার্থী সকাল ৬টায় বাসে ওঠে। ক্যাম্পাসে এসে ক্লাস শেষ করে বিকেল ৫টায় যখন সে আবার বাসায় যায় ততক্ষণে রাত ১০টা বেজে যায়। পরদিন আবার সকাল ৬টায় তাকে বাস ধরতে হয়। এই শিক্ষার্থী পড়াশোনা করবে কখন আর ঘুমাবেই বা কখন? এগুলো এক ধরনের বৈষম্য। তাই আমরা চাই শতভাগ সিট নিশ্চিত করতে হবে। সবার জন্য সিট নিশ্চিত করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবি হলো
১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে শতভাগ আবাসিক করতে হবে।
২. ১ম বর্ষের ১ম দিন থেকেই সিট প্রদান করতে হবে।
৩. মেয়েদের হল সংখ্যা বাড়াতে হবে।
৪. নতুন হল নির্মাণের আগ অব্দি যাদের আবাসন সমস্যা আছে, ক্লাস শুরুর আগে তাদের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে এবং সাতদিনের মধ্যে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে।
৫. হলগুলোর সংস্কার করতে হবে। (বিল্ডিংগুলো নিরাপদ কি না তা পরীক্ষা করা, খাবারের মানোন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা, লন্ড্রিসেবা, বিশুদ্ধ পানি, অবকাঠামোগত সংস্কার, প্রশাসন কর্তৃক তদারকি ইত্যাদি)।
৬, মেয়েদের হলের আশপাশে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।