ভূত মানেই গা ছমছম বিষয়। ভয় ভয় ভাব। আঁধারে কেঁপে কেঁপে ওঠা। সেই ভূতকে নিয়ে উৎসব স্বভাবতই কৌতূহলের বিষয়। অথচ, দুই যুগেরও কাছাকাছি সময় ধরে এই উৎসবের আয়োজন করে আসছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শাহনেওয়াজ ভবনের শিক্ষার্থীরা। আগামী বুধবার (১৫ ফ্রেব্রুয়ারি) এই হলের শিক্ষার্থীদের জন্য সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। এদিন সন্ধ্যায় ভূতের সাজে মেতে উঠবেন সবাই। একজন ভূতরাজ ও ভূতরানির উপস্থিতিতে নানা আয়োজনের মধ্যে থাকবে ভুতুরে কসপ্লে (ভূতের ফ্যাশন শো), নাটিকা, রঙ্গরস ইত্যাদি।
ভূত উৎসব ঘিরে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন ঢাবির চারুকলার হলখ্যাত শাহনেওয়াজ ভবন। কেউ বানাচ্ছেন ভূতের কসটিউম, কেউ বা আবার অবয়ব। কঙ্কাল, মুখোশ—বাদ যাচ্ছে না কিছুই। ভূত বলে কথা, তাই ভূতকে উপস্থাপন করতে আনা হয়েছে নানা ধরনের রং। এসব মুখোশ ও অবয়বে ব্যবহার করা হবে সেগুলো।
এবারের ‘শাহনেওয়াজ ভূত উৎসব’র আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য সাদিত সাদমান রাহাত জানান, ভূত উৎসব ফানি বা আনন্দদায়ক কোনো বিষয় থেকে শুরু হয়নি, বরং ছিল প্রতিবাদের ভাষা। প্রায় দুই যুগ আগে এফ রহমান হলের বর্ধিত শাহনেওয়াজ ভবনে পাশ্চাত্য ভ্যালেন্টাইনস ডে’র বিরুদ্ধে যাত্রা শুরু এই উৎসবের। পরে ভূত উৎসব আয়োজন করা হয় শাহনেওয়াজ ভবনে শিল্পীদের থাকার রুম সল্পতা ও সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে। সেবার যে প্রতিপাদ্য ছিল তার অর্থ দাঁড়িয়েছিল—এত কম সুযোগ-সুবিধায় শাহনেওয়াজ ভবনে শুধু ভূতেদের পক্ষে থাকা সম্ভব। এভাবেই প্রতিবছর উদযাপিত হয় ভূত উৎসব।
শাহনেওয়াজ ভূত উৎসবের আরেক আয়োজক সদস্য রেজাউল ইসলাম হিরা বলেন, ‘শাহনেওয়াজ ভূত উৎসব গত শতকের শেষ দশক থেকে উদযাপন করে আসছে শাহনেওয়াজ ভবনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলের এক্সটেনশন শাহনেওয়াজ ভবনে ভূত উৎসবের পূর্বপ্রস্তুতির আয়োজন করতে ভবনের প্রাক্তন শিক্ষার্থী-সিনিয়র শিল্পী থেকে শুরু করে বর্তমান শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়েছেন, হচ্ছেন। সবাই মিলে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিবার এই আয়োজন করা হয়ে থাকে।’
রেজাউল ইসলাম হিরা আরও বলেন, ‘প্রতি বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি ভূত উৎসব উদযাপন হয়। তবে গত তিন বছর কোভিড প্যানডেমিকের কারণে স্থগিত থাকলেও এ বছর আবারও উৎসবটি নির্ধারিত দিনই হবে। এতোমধ্যে আমাদের আয়োজনকে ঘিরে চলছে প্রস্তুতি।’