ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র সাফিন উজ জামানকে মারধর ও হয়রানি পর মাদক দিয়ে ফাঁসানোর হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে।সাফিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী।
বুধবার (১২ জুন) রাতে রাজধানীর হাজারীবাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটে।
ভুক্তভোগীর তথ্যমতে ওই দুই পুলিশ সদস্য হলেন হাজারীবাগ থানার এস আই সিরাজুল হক ও কনস্টেবল রিয়াজ।
সাফিন বলেন, আমাদের এক অসুস্থ ছোট বোনকে দেখতে যাওয়ার কথা ছিল। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার রাত ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে রিকশা নিয়ে হাজারীবাগ এলাকায় আমাদের লেদার ইনস্টিটিউট এর এদিকে যাই। রিকশা থেকে নেমে ভাড়া দিতে গেলে রিয়াজ নামে এক পুলিশের কন্সটেবল পেছন থেকে এসে আমার হাত ধরে জিজ্ঞেস করেন, তুই এখানে কি করছিস? এ সময় উনি আমার পকেটে হাত দেওয়ার চেষ্টা করলেন। পকেটে কিছু টাকা থাকায় আমি তাকে পকেটে হাত দিতে দিচ্ছি না। উনি বললেন, তোর পকেটে মাদক আছে, আমি চেক করব। তখন আমি বললাম, আমার পকেটে কিছুই নেই, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।
কথা কাটাকাটি হওয়ার এক সময় সিরাজুল হক নামে আরও একজন পুলিশ সদস্য দৌড়িয়ে আসেন। একপর্যায়ে, তারা দুইজনেই আমাকে আরও জেরা করতে শুরু করেন। এরপর আমি আমার পরিচয় দেওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম শুনেই এসআই সিরাজুল হক আরও অ্যাগ্রেসিভ হয়ে গেলেন।
এসময়, তিনি আমার গালে কয়েকটা থাপ্পড় দেন। একপর্যায়ে, আমার ওই বড়ভাই ওখানে উপস্থিত হলে, তাকেওসহ আমাদের দুইজনকেই নির্জনে নিয়ে যেতে চেষ্টা করে, সেখানে মানুষজন থাকায় আড়ালে কোথাও নিতে পারেননি।
পুলিশ আমাদেরকে এক ঘণ্টা বসিয়ে রাখেন এবং নানা ধরনের হুমকি ধামকি দেন। সর্বশেষ, তারা আমাদেরকে বলেন, আপনারা চলে যান এবং আজকের ঘটনা কাউকে বলবেন না। যদি বলেন তাহলে আরো খারাপ কিছু হতে পারে।
ভুক্তভোগী এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, পুলিশ সদস্যরা আমার পকেটে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আমি এই ঘটনায় এই দুই পুলিশ সদস্যের বিচার চাই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। আমরা খোঁজ-খবর নিয়ে আমাদের জায়গা থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। অন্যদিকে, হাজারীবাগ থানার ওসিকে একাধিকবার কল দিয়ে পাওয়া যায়নি।
হাজারীবাগ থানার ডিউটি অফিসার এস আই তাহমিনা বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত এরকম কিছুর খবর পাইনি। তবে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য এস আই সিরাজুল হক এই থানায়ই কর্মরত সেটা তিনি নিশ্চিত করেন। আরেক অভিযুক্ত কনস্টেবল রিয়াজের বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, রিয়াদ আহমেদ নামে একজন ড্রাইভার আছেন।