তদবিরবাজ নেতা, কর্মকর্তার তালিকা করছে পুলিশ

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনায় ৭৫টি মামলা হয়েছে। বেশির ভাগ মামলা করেছে পুলিশ। কিছু মামলা করেছেন ক্ষমতাসীন দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। এসব মামলায় বিএনপি-জামায়াতের অনেক নেতা-কর্মী গ্রেফতার হওয়ার পর কারও কারও ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলের নেতারাই তাঁদের ছাড়ানোর জন্য তদবির করছেন।এ ছাড়া বিভিন্ন পদমর্যাদা ও সামাজিক সংগঠনের নেতারাও তদবির করছেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে তদবিরবাজদের তালিকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজশাহী রেঞ্জ পুলিশ। এরই মধ্যে তালিকার নির্দেশনা দিয়ে বিভাগের আট জেলার পুলিশ সুপারদের (এসপি) চিঠি দেওয়া হয়েছে। এসপিরা আবার এ নির্দেশনা দিয়েছেন থানায় থানায়। তদবিরবাজদের অতীত বিশ্লেষণ করে তাঁদের বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে তালিকা সরকারের উচ্চপর্যায়ে পাঠাবে পুলিশ।
পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক বিজয় বসাক জানান, সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় বিভাগের আট জেলার বিভিন্ন থানায় গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৬৭টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি ৯৫১ জন। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও অনেক আসামি রয়েছে। আসামিদের মধ্যে ৯৫৬ জনকে ইতিমধ্যে  গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।


রেঞ্জ পুলিশের বাইরে রাজশাহী মহানগরের বিভিন্ন থানায় মামলা হয়েছে ৮টি। এসব মামলায় ১৩০ জনকে  গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) থানাগুলোর মামলার প্রতিটিতে এজাহারভুক্ত আসামি ২৫ থেকে ৩০ জন। এ মামলাগুলোতে অজ্ঞাতনামা আসামির সংখ্যায় প্রায় তিন হাজার।

পুলিশ জানিয়েছে, ১৬ জুলাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন সহিংস হয়ে ওঠে। পরে নগরীর বিভিন্ন স্থানের পাশাপাশি বগুড়া, নওগাঁ, পাবনা, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট এবং সিরাজগঞ্জেরও বিভিন্ন এলাকায় সহিংস ঘটনা ঘটে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া জেলার ক্ষমতাসীন দলের একজন মেয়র সহিংসতার সঙ্গে সম্পৃক্ত এক ব্যক্তিকে ছাড়াতে রীতিমতো পুলিশের এক কর্মকর্তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। বিষয়টি পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনিসুর রহমানেরও কানে এসেছে। এরপরই তদবিরকারকদের তালিকা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আনিসুর রহমান বলেন, ‘নাশকতার মামলায়  গ্রেফতার কারও জন্য যে ব্যক্তিই তদবির করুক না কেন, তাদের তালিকা করার জন্য আমি রাজশাহী বিভাগের আট জেলার এসপির কাছে চিঠি দিয়েছি। এসপিরা থানার ওসিদের মাধ্যমে তালিকা করছেন। সে তালিকা আমার কাছে আসবে। আমরা সেটা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাব। পাশাপাশি আমরা তাদের অতীত বিশ্লেষণ করে দেখে ব্যবস্থা নেব।’

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্যমতে, নাশকতাকারীদের আর্থিক সহায়তাকারী, মদদদাতা ও বিস্ফোরক সরবরাহকারীদের ধরতেও চলছে অনুসন্ধান। মামলাগুলোর তদন্তে অর্থ জোগানদাতাদের খুঁজে বের করতেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বিস্ফোরকদ্রব্য কীভাবে কে কোথা থেকে এনে কোথায় সরবরাহ করেছে, তারও তদন্ত চলছে। পুলিশের পাশাপাশি এসব বিষয়ে র‌্যাবও কাজ করছে। শুধু রাজশাহীতেই র‌্যাব ৫০ জনকে গ্রেফতার করেছে।

র‌্যাব-৫-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল ফিরোজ কবির জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মনে করছে, অগ্নিসংযোগের জন্য গানপাউডার ব্যবহার করা হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে এই বিস্ফোরক পদার্থ এনে সারা দেশে ছড়ানো হয়েছে কি না এবং এসব কর্মকাণ্ডে রাজশাহী অঞ্চলের চিহ্নিত জঙ্গি ও আগুন সন্ত্রাসীরা জড়িত কি না—তা জানতে চলছে বিশেষ তদন্ত।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ - dainik shiksha সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল - dainik shiksha জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় - dainik shiksha শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0054678916931152