বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতারা বারবার বলছেন তলে তলে সব হয়ে গেছে। কেন বলেন? আসলে কিছুই হয় নাই। গণতান্ত্রিক গোটা বিশ্ব আজকে তাদের ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার জন্য পরিষ্কার করে বলছে। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করতে বলছে। শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির যৌথ উদ্যোগে অনশনে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে ঢাকায় ৩ ঘণ্টা অনশন করে দলটি। অনশন শুরু হয় বেলা ১১টায়। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনশন শেষ হয়। কর্মসূচিতে সিনিয়র নেতারা মঞ্চে চেয়ারে বসে অনশন করেন। অন্য নেতাকর্মীরা রাস্তায় ও মঞ্চে অবস্থান নেন। কর্মসূচিতে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন, যুগপৎ আন্দোলনের দল ও জোট নেতা, সাবেক নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তা, সেনা কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্যে রাখেন।
বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের পর দুপুর ২টার দিকে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের জুস ও পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী ও প্রফেসর ড. মাহবুব উল্লাহ।
মির্জা ফখরুল বলেন, সকল নেতা অনশন কর্মসূচিতে শুধু সংহতি প্রকাশ করেননি। তারা প্রতিজ্ঞা করেছেন, খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করে এবং সরকারকে বিদায় না তারা কেউ বিশ্রাম নেবেন না। এই সরকার অনির্বাচিত সরকার। তারা ঘোষণা দেয় বিএনপির আমাদের শত্রু। অর্থাৎ তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। গণতন্ত্র বিশ্বাস করলে কোনো রাজনৈতিক দলকে তারা শত্রু বলতে পারে না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আইনের শাসনে বিশ্বাস করে না। শুক্রবার নরসিংদীতে দুই ছাত্র নেতাকে আইন-কানুন ভঙ্গ করে গ্রেফতার করেছে।
খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্রের মুক্তি একই সূত্রে গাঁথা মন্তব্য করে তিনি বলেন, এজন্য সামনে দিনগুলোতে আমাদের দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সামনে পূজা আছে। এই পূজার মধ্যে আমরা সব সময়ই বলেছি, আমরা শান্তিপূর্ণ অসাস্প্রদায়িক ব্যবস্থায় বিশ্বাস করি। আমরা চাই না, সেই আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে তারা আবার সেই সমস্যা তৈরি করুক। ইতিমধ্যে করেছে। গতকাল কুমিল্লায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশ বাধা দিয়েছে। তারপর আওয়ামী লীগ বাধা দিয়েছে। অনেকে আহত হয়েছে। আমরা অনেক চড়াই-উৎরাই পার হয়েছি। এখন আমাদের সামনে লক্ষ্য একটাই, আমাদের দেশ, অর্থনীতি ও মানুষ এবং খালেদা জিয়াসহ সকল রাজনৈতিক কর্মীদের বাঁচাতে হলে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে পরাজিত করা ছাড়া বিকল্প নাই। সেই লক্ষ্যে সবাই ঐক্যবদ্ধ হই।