তালিকায় নাম, সেন্টার নেই উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের একাংশ বলছেন বাস্তবে কোনও অস্তিত্ব নেই। তবুও অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে জ্বলজ্বল করছে নাম। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এরকমই বেশ কয়েকটি সেন্টার নিয়ে প্রশ্নের মুখে কর্তৃপক্ষ। কলা ও বিজ্ঞান-দুই অনুষদের পাঁচটি সেন্টার অস্তিত্বহীন বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই তালিকায় রয়েছে অম্বেডকর স্টাডিজ, বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, গাঁধীয়ান স্টাডিজ ও সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ। গরমের ছুটির পরে বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে আসার কথা ‘নাক’এর চেয়ারম্যানের। সেই কারণেই কি ওয়েবসাইটে ওইসব সেন্টারের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে? এই প্রশ্ন উঠেছে ক্যাম্পাসে। সোমবার (৩ জুন) আনন্দবাজার পত্রিকায় এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।

প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, ২০১৭-তে ‘নাক’-এর পরিদর্শনের সময় ঘটা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের দেওয়ালে ঝোলান হয়েছিল প্লেসমেন্ট সেলের বোর্ড। যদিও সেই সেলের কোনও অস্তিত্ব বর্তমানে নেই বলেই অভিযোগ শিক্ষকদের একাংশের। সেইসময় একটি ঘর সাজিয়ে-গুছিয়ে প্লেসমেন্ট সেল হিসেবে দেখানোও হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তাঁরা। বিভিন্ন সেন্টারগুলোরও কি প্লেসমেন্ট সেলের মতোই দশা? বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সেন্টার চালানোর জন্য প্রয়োজন আর্থিক বরাদ্দ, দরকার কর্মীও। কোনওকিছুই দেয়নি কর্তৃপক্ষ। ফলে পরিকল্পনা, আলোচনা হলেও বাস্তবে সেন্টারগুলো খোলাই হয়নি।’’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ‘অ্যাকাডেমিকস’ কলাম থেকে ‘সেন্টার’-এ ঢুকলেই বিভিন্ন সেন্টারের লম্বা তালিকা দেখাবে। সেখানে বিজ্ঞান অনুষদের ৯টি এবং কলা অনুষদের ৭টি সেন্টারের উল্লেখ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এর মধ্যে কলা অনুষদের ৪টি ও বিজ্ঞান অনুষদের ১টি সেন্টারে কোনও পড়াশোনা হয় না। সেন্টারগুলোর জন্য কোনও ক্লাসরুমও বরাদ্দ করেনি কর্তৃপক্ষ। যদিও বাকিগুলো চালু রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা সংক্রান্ত বিষয়টি দেখভাল করে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কাউন্সিল। পাঠ্যক্রম তৈরি থেকে শিক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ করে থাকে ওই কাউন্সিল। তার সচিবের কাছেই সেন্টার সম্পর্কে কোনও তথ্য নেই। বর্তমানে কাউন্সিলের কলা ও বিজ্ঞান দুই শাখারই সচিবের দায়িত্বে রয়েছেন জয়দীপ বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘সেন্টারগুলো সম্পর্কে আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে জানতে হবে।’’

যেসব সেন্টার চালু রয়েছে সেগুলোর দায়িত্বে রয়েছে কোনও না কোনও বিভাগ। ‘অস্তিত্বহীন’ সেন্টারগুলোর কোনটি কোন বিভাগের অন্তর্গত তা অবশ্য ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়নি। অভিযোগ, ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট সেন্টারগুলো খুলতে গেলেই হয় ফাঁকা পাতা দেখাচ্ছে নয়তো বলছে পাতাটি তৈরির কাজ চলছে।

বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে এক শিক্ষক বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের যা সম্পদ আছে সেগুলোর সঠিক ব্যবহার হলেও আমরা ‘নাক’এর সর্বোচ্চ সম্মান পেতে পারি। তারজন্য অস্তিত্বহীন সেন্টার দেখিয়ে মর্যাদা আদায়ের প্রয়োজন হয় না। কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত বিষয়টিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা।’’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দিলীপকুমার সরকার বলেন, ‘‘এটা ঠিক যে কিছু সেন্টার এখনও চালু হয়নি। যাতে ছাত্র-ছাত্রীরা বিভ্রান্ত না হন তারজন্য বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’ 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে - dainik shiksha কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা - dainik shiksha ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন - dainik shiksha সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল - dainik shiksha ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে - dainik shiksha নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0065648555755615