রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজে নিকাব পরে ক্লাসে আসায় এক ছাত্রীকে লাঞ্চিতের অভিযোগ উঠেছে কলেজের উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে। তবে শিক্ষকের দাবি ঘটনাকে বাড়িয়ে বলা হয়েছে, যেভাবে অভিযোগ করা হচ্ছে তেমন কিছু ঘটেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তোভোগি এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রথম ক্লাস ছিল। স্যারেরা সবাই এসে আমাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করতেছিল। এ সময় উপাধ্যক্ষ স্যার আমাকে কি যেন বলতেছিলো, আমি ভালোমতো শুনতে পাইনি। একপর্যায়ে উনি আমাকে বললো, ঐ মেয়ে তুমি কি বয়রা নাকি, কি বলি শুনো না। এরপর আমি দাড়িয়ে যাই। তারপর স্যার আমাকে বলে তুমি এটা কি পরে আছো, এভাবে কেউ ক্লাসে আসে? স্যারের কথা শুনে আমি অপ্রস্তুত হয়ে পরি। ক্লাসে আরও ছাত্রী ছিল তাকেও স্যার নিকাব খুলতে বলে। স্যারের কথায় একপর্যায়ে ঐ মেয়েটি নিকাব খুলে ফেলে। ক্লাসের অনেক ছাত্র তাৎক্ষণিক প্রতিবাদও করে।’
ঘটনার সময় ক্লাসে উপস্থিত ঠিল এমন একাধিক শিক্ষার্থী জানান, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ক্লাসের প্রথম দিনে পরিদর্শনে আসেন কলেজের উপাধ্যক্ষ মোহম্মদ মহিউদ্দিন। শিক্ষার্থীদের সাথে কুশল বিনিময়ের এক পর্যায়ের নেকাব পরিহিত এক ছাত্রীকে দেখে নেকাব খুলতে বলেন তিনি। এ সময় উপস্থিত শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানান।
জানতে চাইলে কলেজের উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘গতকাল যেহেতু নতুন বর্ষের শিক্ষার্থীদের প্রথম ক্লাস ছিলো, তাই আমি প্রায় প্রতিটি ডিপার্টমেন্টে গিয়েছি। প্রতিটি ডিপার্টমেন্টর মতো ইসলামিক স্টাডিজ ডিপার্টমেন্ট গিয়েও সকলের সাথে কথা বলছিলাম, পরিচয় জানছিলাম কে কোথায় থেকে এসেছে, কার কি নাম। ক্লাসে এক ছাত্রীর হাত-পা-মুখ সব ঢাকা দেখে আমি বললাম, মা তুমি যে প্রথমবার ক্লাসে এসেছো, তোমাকে তো দেখতে পারছি না। আমরা তোমাদের মাতৃ-পিতৃতুল্য শিক্ষক, আমাদের সামনে তো চেহারা দেখাতে সমস্যা নেই।’
শ্রেণিকক্ষে ছাত্রীর নিকাব পড়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীকে লাঞ্চিত করার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যে কেউ পর্দা মেনে চলতেই পারে, তাতে তো কারো বাঁধা নেই। আমরা যেহেতু কলেজে নতুন, শিক্ষার্থীদের চিনে রাখাও আমাদের দায়িত্ব, সে হিসেবেই তাকে নিকাব খুলে ক্লাস করার কথা বলেছিলাম। কিন্তু কেউ যদি তাতে কষ্ট পেয়ে থাকে, তাহলে আমি দুঃখিত। সবাই নিজের স্বাধীন মতো চলবে, এতে আমাদের কিছু বলার নেই।’