মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার কমিয়ে আনার উদ্যোগের অংশ হিসেবে লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন (লেইস) প্রকল্পের আওতায় প্রথম ধাপে এবার প্রতি জেলা থেকে মোট ৭০ জন শিক্ষকরা পাচ্ছেন তিন ধরনের বিশেষ প্রশিক্ষণ।
এর মধ্যে বেসিক, প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট ও লিডারশিপ প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য গত বৃহস্পতিবার অনলাইনে শিক্ষকদের প্রশ্নপত্রে উত্তর লিখে পূরণ করে আগামীকাল রোববারের মধ্যে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে মাউশি অধিদপ্তর।
এ সংক্রান্ত নির্দেশনায় মাউশি অধিদপ্তর বলছে, প্রশিক্ষণের প্রকৃতি অনুযায়ী প্রশ্নপত্রের উত্তরদাতারা বেসিক প্রশিক্ষণে প্রতি জেলা থেকে ন্যূনতম ২০ জন, অনূর্ধ্ব চল্লিশ বছর বয়সের শিক্ষক ও ৫ থেকে ১০ জন প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারী প্রতিষ্ঠান প্রধান অংশ নিতে পারবেন।
বেসিক প্রশিক্ষণের প্রশ্নপত্রের লিংক: https://ee.kobotoolbox.org/single/r5UkNjSC
এ ছাড়াও প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট প্রশিক্ষণে প্রতি জেলা থেকে ন্যূনতম ২০ জন চল্লিশোর্ধ্ব বছর বয়সের শিক্ষক। যারা বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করেন ও ৫ থেকে ১০ জন প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারী প্রতিষ্ঠান প্রধান অংশ নিবেন।
প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট প্রশিক্ষণের প্রশ্নপত্রের লিংক: https://ee.kobotoolbox.org/single/FpdcozRT
লিডারশিপ প্রশিক্ষণে প্রতি জেলা থেকে ন্যূনতম ৫ জন প্রতিষ্ঠান প্রধান ও ৫ জন সহকারী প্রতিষ্ঠান প্রধান।
লিডারশিপ প্রশিক্ষণের লিংক: https://ee.kobotoolbox.org/single/9h2WtYUF
মাউশি অধিদপ্তর আরো জানায়, বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বাস্তবায়নের জন্য লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন (লেইস) প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।
এ প্রকল্পের আওতায় মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদেরকে দীর্ঘমেয়াদী বেসিক ও প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট প্রশিক্ষণ এবং প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারী প্রধানকে লিডারশিপ প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
প্রশিক্ষণগুলোর চাহিদা নিরূপণের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন মূল্যায়ন বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সহায়তায় ৩ প্রস্থ প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রণীত প্রশ্নপত্র মাধ্যমিক পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারী প্রধান অনলাইনে পূরণ করে আগামী ২৩ জুনের মধ্যে লেইস প্রকল্পে পাঠাবেন। এই জরিপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য শুধুমাত্র প্রশিক্ষণগুলোর চাহিদা নিরূপনের গবেষণায় ব্যবহার করা হবে।
এই প্রশ্নমালা নিজ-নিজ ক্ষেত্রে শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের মাধ্যমে অনলাইনে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে পূরণের বিষয়ে শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠান প্রধানকে উদ্বুদ্ধকরণের জন্য বিশেষভাবে বলা হলো।
উল্লেখ্য, লেইস প্রকল্পে মোট ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৮৯০ জন শিক্ষক প্রশিক্ষণ পাবেন। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর। প্রকল্প ব্যয়ের ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে চলতি বছরের অক্টোবর থেকে ২০২৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত।
জানা গেছে, এই প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় প্রায় ৩ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশে শিক্ষাক্ষেত্রে রূপান্তরে সরকার বিগত দশকে ব্যাপক অগ্রগতি সাধন করেছে, যার ফলে শিক্ষায় লক্ষণীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
কিন্তু কোভিড-১৯ অতিমারি শিক্ষার চলমান উন্নয়নে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে, বিশেষত মাধ্যমিক শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে শিখন খাটতি সৃষ্টি হয়েছে।
এ সমস্যা নিরসনে ও নতুন শিক্ষাক্রমের চাহিদাপূরণে বাংলাদেশ সরকার বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন প্রজেক্টটি গ্রহণ করেছে।