তিন বিভাগে ৭৬ শিক্ষার্থী, শিক্ষক ৬৭ : জটিল পরিস্থিতি

ঢাবি প্রতিনিধি |

ঢাবির ফার্মেসি অনুষদের তিন বিভাগের ৯টি প্রোগ্রামে ছাত্র আছেন মাত্র ৭৬ জন। এই স্বল্পসংখ্যক শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন ৬৭ জন। কিন্তু অপর বিভাগ ফার্মেসিতে এর উলটো চিত্র। এই বিভাগে ৩৫৩ ছাত্রের বিপরীতে রয়েছেন মাত্র দুই জন শিক্ষক। তাদের একজন বিভাগের চেয়ারম্যান, অপরজন সাবেক চেয়ারম্যান। এমন সমন্বয়হীন পরিস্থিতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদে।

অনুষদের শিক্ষকদের অসহযোগিতার কারণে কোনো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন অনুষদটির ডিন। ডিন অধ্যাপক ড. এস এম আবদুর রহমান বলেন, ‘ফার্মেসি অনুষদ এমন এক জটিল পরিস্থিতিতে আছে। আমি বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েছি, কিন্তু শিক্ষকদের বিরোধিতার মুখে কোনো কিছু বাস্তবায়ন করতে পারিনি।’

অনুষদ সূত্রে জানা যায়, ফার্মেসি অনুষদে মোট চারটি বিভাগ রয়েছে। এর মধ্যে শুধু ফার্মেসি বিভাগেই পাঁচ বছরের স্নাতক প্রোগ্রাম রয়েছে। এ বিভাগে ছাত্রসংখ্যা ৩৫৩। এর বিপরীতে বিভাগে শিক্ষক আছেন মাত্র দুই জন। অন্যদিকে ফার্মাসিউটিক্যাল ক্যামিস্ট্রি বিভাগে ২৫ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষকও ২৫ জন। ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি অ্যান্ড ফার্মাকোলজি বিভাগে ২৭ শিক্ষার্থীর জন্য ১৯ জন শিক্ষক এবং ফার্মাসিউটিক্যাল টেকনোলজি বিভাগে ২৭ ছাত্রের জন্য ২৩ জন শিক্ষক রয়েছেন। এই তিন বিভাগে স্নাতক প্রোগ্রাম নেই, রয়েছে স্নাতকোত্তর, এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রাম।

বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ফার্মেসি বিভাগটির ক্লাস নেন অন্য তিন বিভাগের শিক্ষকেরা। এই বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভাপতি হিসেবে ডিন ও বিভাগীয় চেয়ারম্যান যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করেন। বিভাগগুলোকে সমন্বয় করেন অনুষদের ডিন। ফলে একধরনের হ-য-ব-র-ল পরিস্থিতি চলছে অনুষদটিতে। এ বিষয়ে অনুষদের ডিন অধ্যাপক এ এস এম আব্দুর রহমান বলেন, ‘ফার্মেসি বিভাগে শুধু একজন শিক্ষক চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বে আছেন। এই বিভাগে অন্য বিভাগ থেকে শিক্ষকেরা ক্লাস নিতে আসেন। তাদের সমন্বয় করতে আমাকে দায়িত্ব পালন করতে হয়।’

বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ গ্রহণ করলে বিভাগটি আগের মতো সচল হতে পারবে।

কোনো বিভাগই স্বাধীন নয়: অনুষদের এক বিভাগ আরেক বিভাগের ওপর নির্ভরশীল। ফার্মেসি বিভাগের ছাত্র থাকলেও শিক্ষক নেই। ফলে শিক্ষকের জন্য বিভাগটিকে অন্য বিভাগের প্রতি নির্ভরশীল থাকতে হয়। অন্যদিকে অন্য তিন বিভাগে স্নাতক না থাকায় শিক্ষার্থীর সংকটে থাকে বিভাগগুলো। এই তিন বিভাগ শিক্ষার্থীর জন্য নির্ভরশীল থাকে ফার্মেসি বিভাগের প্রতি।

ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত অস্বাভাবিক: এদিকে তুলনামূলকভাবে অনুষদটিতে অন্যান্য অনুষদের তুলনায় বেশি শিক্ষক রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতি ৩০ শিক্ষার্থীর জন্য এক জন শিক্ষক রয়েছেন, সেখানে ফার্মেসি অনুষদে প্রতি ছয় জনের জন্য এক জন করে শিক্ষক রয়েছেন। তবে বিষয়টিকে ভুল ধারণা বলছেন অনুষদের ডিন। তিনি জানান, এখানে ৭৬ শিক্ষার্থীর জন্য ৬৭ জন শিক্ষক—এটা সঠিক নয়। এখানে অন্য তিন বিভাগের শিক্ষক সমন্বয় করে ৪০০ শিক্ষার্থীর একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন।

দুই ধরনের সমাধান: এই মুহূর্তে দুই ধরনের সমাধান দেখছেন অনুষদের ডিন। তিনি জানান, ফার্মেসি বিভাগ ছাড়া বাকি তিনটি বিভাগ অবলুপ্ত করে দিয়ে আগের রূপে ফিরে যাওয়া এবং আরেকটি সমাধান হচ্ছে, প্রতি বিভাগে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করিয়ে বিভাগকে পূর্ণাঙ্গরূপে আত্মপ্রকাশ করা। এছাড়া এটার সমাধান করা খুব কঠিন হয়ে উঠবে।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘এটা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। আমাদের নিয়মনীতি কিছুটা পরিবর্তন করতে হতে পারে। আমরা বিষয়গুলা ভেবে দেখছি।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0077750682830811