শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালাকে কয়েকটি স্তরে ভাগ করার পরামর্শ দিয়েছেন কামরুল হাসান মামুন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের এই অধ্যাপককে সম্প্রতি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রণীত ও মুদ্রিত সব পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনে গঠিত কমিটির সদস্য করা হয়েছে। তারপর থেকেই নিজের ফেসবুক পেজে বিভিন্ন শিক্ষা বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। গতকাল শুক্রবার দেয়া একটি পোস্টে তিনি পাঠ্যবই সংশোধনের সঙ্গে সম্পর্ক বহির্ভূত শিক্ষক নিয়োগ ইস্যু নিয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেন।
অধ্যাপক মামুন লিখেছেন, ‘এতো বছর যাবৎ শিক্ষকতা পেশাকে অনাকর্ষণীয় করে, নিয়োগ বিধিমালা ও দুষ্টু লোক দিয়ে নিয়োগ কমিটি ভরে মানহীন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে সমাজে একটা ধারণা তৈরি করা হয়েছে যে আমাদের শিক্ষকরা ভালো না। আমাদের শিক্ষকরা প্রাইভেট পড়ায়, পার্ট টাইম পড়ায়, জনপ্রতিনিধি তথা রাজনৈতিক ব্যক্তিদের পেছনে ঘুরে, নিজেরা রাজনীতি আর সমিতি করে নানা গ্রুপিং ও তদবিরে ব্যস্ত। কথা পুরো সত্য। কিন্তু এই সত্য অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে তৈরি করে শিক্ষাকে একদম ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’
তিনি লিখেছেন, ‘এখন এ থেকে মুক্তির উপায় কি? এখন শিক্ষকতা পেশাকে উন্নত ও আকর্ষণীয় করতে বললেই একদল বলে উঠে এদের যোগ্যতা নেই, এরা অমুক, এরা তমুক ইত্যাদি। তাহলে কি আমরা এর মধ্যেই আবর্তিত হতে থাকবো? এক জায়গা থেকে তো শুরু করতে হবে। এইটা করলে এখন যারা খারাপ তারা লাভবান হয়ে যাবে বলে কি উচিত কাজটি করা যাবে না? উচিত কাজটি ঠিক করতে হবে ভবিষ্যতের পানে তাকিয়ে। যাতে তখন থেকে যারা নিয়োগ পাবে তারা যোগ্য হয়। খারাপের উদাহরণ দিয়ে ভালো কিছু না করার যুক্তি কখনোই ভালো না।’
অধ্যাপক মামুন আরো লিখেছেন, ‘আর যেনো একটি নিয়োগও খারাপ না হয়। শিক্ষকতা পেশাকে আকর্ষণীয় করার পাশাপাশি একইসঙ্গে আমাদের নিয়োগ বিধিমালাকেও কয়েকটি স্তরে ভাগ করতে হবে। যেনো তিন স্তরে ফিল্টারিং হয়ে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। একজন অসৎ খারাপ শিক্ষক যেমন অনেক বছর ধরে সমাজের ক্ষতি করে যেতে পারে যা ক্যাসিক্যাডিং ইফেক্ট এর মাধ্যমে ক্ষতির পরিমাণ চক্রবৃদ্ধি হারে বৃদ্ধি পায়, ঠিক তেমনি একটি ভালো নিয়োগ অনেক বছর ধরে সমাজের ভালো করে যেতে পারে যা ক্যাসিক্যাডিং ইফেক্ট এর মাধ্যমে লাভ চক্রবৃদ্ধি হারে বৃদ্ধি পায়।’ (কামরুল হাসান মামুনের ফেসবুক থেকে নেয়া)