কলেজছাত্রী তিশাকে ধর্ষণের অভিযোগে তার বাবার করা মামলায় রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সাবেক দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদকে অব্যাহতি দিয়েছে আদালত। একই মামলায় অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদীকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক শওকত আলী এই আদেশ দেন। সম্প্রতি এই মামলায় পুনঃতদন্ত শেষে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ প্রতিবেদনেও মুশতাক আহমেদ ও অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদীকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়। এর আগে পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর না-রাজি দেওয়ার পর গত ১৪ মার্চ বাদীপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত।
গত বছরে ১ আগস্ট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এ কলেজছাত্রী তিশার বাবা বাদী হয়ে মুশতাক ও ফাওজিয়া রাশেদীকে আসামি করে এ মামলাটি করেন। মামলার আরজিতে বাদী উল্লেখ করেন, তার মেয়ে (ভুক্তভোগী) মতিঝিল আইডিয়ালের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। অভিযুক্ত মুশতাক বিভিন্ন অজুহাতে কলেজে আসতেন এবং ভুক্তভোগীকে ক্লাস থেকে অধ্যক্ষের মাধ্যমে তার কক্ষে ডেকে নিতেন। খোঁজখবর নেওয়ার নামে তিনি ভুক্তভোগীকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে প্রলুব্ধ করতেন। কয়েকদিন পর অভিযুক্ত মুশতাক ভুক্তভোগীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে জোর করে বিয়ে করবেন বলে হুমকি দেন এবং বিয়ে না করলে তাকে ও তার পরিবারকে ঢাকা ছাড়া করবেন বলে হুমকি দেন মুশতাক। তার এ রকম আচরণের বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন বাদী। বাদী আরও বলেন, তিনি প্রতিকার চাইতে গেলেও কোনো সহযোগিতা করেননি অধ্যক্ষ বরং অভিযুক্ত মুশতাককে অনৈতিক সাহায্য করেন। বাদী উপায় না পেয়ে ওই বছর ১২ জুন ভুক্তভোগীকে ঠাকুরগাঁওয়ের বাড়িতে নিয়ে গেলে অভিযুক্ত মুশতাক তার লোকজন দিয়ে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যান। এরপর বাদী জানতে পারেন তিনি ভুক্তভোগীকে একেক দিন একেক স্থানে রেখে অনৈতিক কাজে বাধ্য করেছেন এবং যৌন নিপীড়ন করেছেন।
এর আগে মামলাটি তদন্ত করে গত বছরের ১৪ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল রানা। মামলা দায়েরে ‘তথ্যগত ভুল হয়েছে’ উল্লেখ করে আসামিদের অব্যাহতির সুপারিশ করা হয় প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়, ওই ছাত্রী আদালতে হাজির হয়ে স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দেন। তাতে তিনি বলেছেন, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মার্চ স্বেচ্ছায় ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে খন্দকার মুশতাক আহমেদকে তিনি বিয়ে করেন। বিজয়নগর কাজী অফিসে তাদের বিয়ে হয়।